পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৫১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গদ, --سمبے همسس سے পনেরো-আনা | যে লোক ধনী, ঘরের চেয়ে তাহার বাগান বড় হইয়া থাকে। ঘর অত্যাবশ্যক ; বাগান অতিরিক্ত –না হইলেও চলে। সম্পদের উদারতা অনাবশুকেই আপনাকে সপ্রমাণ করে। ছাগলের যতটুকু শিং আছে, তাহাতে তাহার কাজ চলিরা যায়, কিন্তু হরিণের শিঙের পনেরো-আনা অনাবশ্যকতা দেখিয়া আমরা মুগ্ধ হইয়া থাকি। ময়ূরের লেজ যে কেবল রংচঙে জিতিয়াছে, তাছা নহে— তাহার বাহুল্যগৌরবে শালিক-খঞ্জন-ফিঙার পুচ্ছ লজ্জায় অহরহ অস্থির। ষে মানুষ আপনার জীবনকে নিঃশেষে অত্যাবশ্যক করিয়া তুলিয়াছে, সে ব্যক্তি আদর্শপুরুষ সন্দেহ নাই, কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে তাহার আদর্শ অধিক লোকে অমুসরণ করে না ;–যদি করিত, তবে মনুষ্যসমাজ এমন একটি ফলের মত হইয়া উঠিত, যাহার বচিই সমস্তটা, শাস একেবারেই নাই। কেবলই যে লোক উপকার করে, তাহাকে ভাল না বলিয়া থাকিবার জো নাই, কিন্তু বে লোকটা বাহুল্য, মানুষ তাহাকে ভালবাসে । কারণ, বাহুল্যমানুষটি সৰ্ব্বতোভাবেই আপনাকে দিতে পারে। পৃথিবীর উপকারী মানুষ কেবল উপকারের সঙ্কীর্ণ দিকৃ দিয়াই আমাদের একটা অংশকে স্পর্শ করে ;–সে আপনার উপকারিতার মহৎ প্রাচীরের দ্বারা আর-সকল দিকেই ঘেরা ; কেবল একটি দরজা খোলা, সেখানে আমরা হাত পাতি, সে দান করে। আর, অামাদের বাহুল্যলোকটি কোন কাজের নহে, তাই তাহার কোন প্রাচীর নাই। সে আমাদের সহায় নহে, সে আমাদের সঙ্গিমাত্র। উপকারী লোকটির কাছ হইতে আমরা অজ্জন করিয়া আনি, এবং বাহুল্যলোকটির সঙ্গে মিলিয়া আমরা খরচ করিয়া থাকি। ষে আমাদের খরচ করিবার সঙ্গী, সেই আমাদের বন্ধু । বিধাতার প্রসাদে হরিণের শিং ও ময়ুয়ের পুচ্ছের মত সংসারে আমরা অধিকাংশ লোকই বাহুল্য, আমাদের অধিকাংশেরই জীবন জীবনচরিত লিখিবার যোগ্য নহে, এবং সৌভাগ্যক্রমে আমাদের অধিকাংশেরই মৃত্যুর পরে পাথরের মূৰ্ত্তি গড়িার নিষ্ফল