পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৫৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশম সংখ্যা । ] সার সত্যের আলোচনা । ○○○ হিতকর প্রভাব এদেশে শেষ হইয়াছে, ইহ বলাটাইবে না। এ বিষয়ে কৃত্তিবাগের স্বত্ব সফল হইয়াছে,তিনি আমাদের সমস্ত জাতির কৃতজ্ঞতার ভাজন । কারণ আমাদের বর্তমান জাতির প্রতিভার অনুরূপ করিয়া তিনি “রামায়ণকে সমস্ত জাতির নিকট পৌছাইয়া দিয়াছেন। ইহাতে যদি কিছু ক্রটি হইয়া থাকে, তাহা আমাদের জাতির ক্রটি । কিন্তু এই কাব্যের ষত-কিছু প্রশংসা, সকলই তাহার প্রাপ্য। ঐদীনেশচন্দ্র সেন । সার সত্যের আলোচনা । ত্রিকের তারতম্য এবং সামঞ্জস্য । বিগত-বারের সমালোচনায় এটা বেশ বুঝিতে পারা গিয়াছে যে, সত্তা, শক্তি এবং জ্ঞান,এই তিন মৌলিক পদার্থের প্রত্যেকেই অপর দুইটির সহিত ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধস্থত্রে জড়িত -- এরূপ ওতপ্রোত ভাবে জড়িত যে, একটিকে টানিলেই অপর দুইটিতে টান পড়ে। কোনো ব্যক্তি তর্কের তোড়ে বলিতে পারেন যে, “আমি কেবল সত্তা মানি— শক্তি ও মানি না, জ্ঞানও মানি না" ; অথবা “আমি কেবল শক্তি মানি—সত্তাও মানি না, জ্ঞানও মানি না” ; অথবা, “আমি কেবল জ্ঞান মানি—সত্তাও মানি না, শক্তিও মানি না”। মুখে তিনি তাহ বলিতে পারেন, কিন্তু মুখের কথার কাহার কি আসে যার ? কাজে তিনি একটিও এমন সত্তাবৎ বস্তু (সংক্ষেপে—সদবস্তু ), বা জ্ঞান-পদার্থ, বা শক্তি-পদার্থ, আমাকে দেখান দেখি, যাহা অপর দুইটির কোনো ধারই ধারে না ? যতই ধস্তাধস্তি করুন না কেন—কিছুতেই তাহা RIrfi উঠিবেন না। তিনি হয় তো একজন মস্ত বৈজ্ঞানিক পণ্ডিত – আমার স্পৰ্দ্ধাবাক্য শুনিয়া তিনি হয় তো মনে মনে হাসিবেন ; তিনি হয় তো বলিবেন —“জ্যামিতি-পুস্তকের, পাত-উল্টানে বোধ করি হয় নাই ! জ্যামিতিক রেখা কাহাকে বলে, তাহা জানো ? যাহার দৈর্ঘ্য আছে—প্রস্থ নাই, তাহাই রেখা । প্রস্থবিহীন দৈর্ঘ্য যদি তোমার দেখিবার ইচ্ছা হয়, তবে এখন তুমি তাহ দেখিতে পাইবে না। কিছুকাল ধরিয়া জ্যামিতিবিদ্যার মন্ত্রপূত অঞ্জনে তোমার জ্ঞানচক্ষুকে মার্জিত কর, তাহা হইলেই অবলীলাক্রমে তুমি তাহ দেখিতে পাইবে ; আর, তখন তুমি বুঝিতে পারিবে যে, জ্যামিতিক রেখা শুধুকেবল জ্ঞানেরই ব্যাপার—তাহা সত্তারও কোনো ধার ধারে না-শক্তিরও কোনো ধার ধারে না । রেখাও যেমন, সমতাও তেমনি, দুই-ই নিছক জ্ঞানেরই ব্যাপার ; আর, সমস্ত জ্যামিতি-বিদ্য। ঐ স্থই অতীব স্বক্ষ—যেমন স্বক্ষ তেমনি দৃঢ়—তিক্তিমূলের উপরে প্রতিষ্ঠিত । তা ছাড়া, ৰত্নবিষ্কার