পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৫৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একাদশ সংখ্যা । ] চীন-কাজিনী । অক্লেক ভূসম্পত্তিও আছে, কিন্তু সে-সকলের ভার মামাদের দেশের মত পুরোহিতের উপর নছে; যাহাদের ঠাকুর, তাহারাই মে-সকল সম্পত্তির আদায়-উস্থল করিয়া থাকেন, পুরোহিত তাহা হইতে কেবল দেবলেবার নিয়মিত খরচা পান । আলোচনা করিতে করিতে রাত্রি প্রায় ৯টা বাজিয়া গেল। পুরোহিত-মহাশয় আমাহারাস্তে তিনটি সঙ্গী সমভিব্যাহারে মন্দিরমধ্যে পুনঃপ্রবেশ করিলেন । সঙ্গি-তিনটি আমাকে দেখিয়া কিছু বিস্মিত হইল, কিন্তু আমার সঙ্গীর নিকট আমার পরিচয় পাইয়। আশ্বস্তচিত্তে মাদুর পাতিয়া খেলা জুড়িয়া দিল। এই খেলা কতকটা আমাদের পাশাখেলার অনুরূপ। পুরোহিত-মহাশয় পাতলাপাতলা শুষ্মন্নুলিপরিমাণ লম্বা ১৬খানি খাদি ৰাথারি বাহির করিলেন—ৰাখারিগুলির গায়ে চক্রের দ্যায় ছিদ্ৰ—ছিদ্রসংখ্যা সবগুলিতে সমান নহে—ইহারাই আমাদের পাশাখেলার পাশাস্থানীয়। আগন্তুক তিনজন এক-এক-তোড়া মধাস্থলে চক্রাকার-ছিদ্র-বিশিষ্ট পিতলের পয়সা বাহির করিল। এই পয়সার নাম "তাগালু,” ভারতের ১ পয়সায় তিনটি তাগালু পাওয়াযায়। তার পর তোড়া হইতে যাহার যত ইচ্ছা তাগালু বাহির করিয়া সম্মুখে রাখা হইল এবং বাখাল্পিগুলি পাশার মত চালিত হইতে লাগিল। ষ্ট্ৰাছার যেমন “দান” পড়িল, তিনি সেইরূপ হারিতে বা জিতিতে লাগিলেন। খেল শুেষ হইত্তে রাত্রি ১২টা বাজিয়া গেল । এই খেলায় পুরোহিত মহাশয়ের উৎস ও স্থানঙ্গ চিরকাল আমার মনে থাকিবে । আমি য়ে-দিন মন্দিরেই রাত্ৰিষাপন করিৰ স্থির, করিয়া আসিয়াছিলাম, স্থতরাং একখানি মেষচৰ্ম্ম পাতিয়া তাহার উপর শয়ন করিলাম। আমার সঙ্গীটিকে পুরোৰিতমহাশয় অনুগ্রহ করিয়া আপনার গৃহপার্থে আশ্রয়দান করিলেন । ক্রমে রজনীর অন্ধকার বিদূরিত হইল । উষার অরুণকিরণে চরাচর উদ্ভাসিত হুইয়া উঠিল। দয়েলের মত রং, ঈষৎ বড় বড়, একপ্রকার কণক “কা কা” রবে ডাকিতে আৰম্ভ করিল। মেধসমূহ বাহিরে যাইবার জন্য আকুল হইয়া চীৎকার করিতে লাগিল । পগু, পক্ষী, জীবগণের কলরবে মন্দির যেন মুখরিত হইল—দেবীও বুঝি জাগিয়া উঠিলেন। e পুরোহিত মহাশয় ঘুমচোখে নলে দোক্তার ধূম পান করিতে করিতে আমার সঙ্গীকে লইয়া মন্দিরে দর্শন দিলেন। এমন-সময় একদল নরনারী একটি উই শাবক ও একটি শূকর লইয়া মন্দিরসম্মুখে উপস্থিত হইল। দলের মধ্যে দুইটি স্ত্রীলোক ও একজন জাপানী । স্ত্রীলোক দুইটি পরমা রূপবতী । জাপানী পুরুষটি ব্যতীত আর সকলেই শঙ্খধ্বনি করিয়া দেবীপ্রদক্ষিণাস্তে ৫ সেন্ট করিয়া প্রণামী দিলেন। তার পর বলিদানের পালা। ’ " * - বলিদানের জন্য শাণিত ভেঁটে আকারের একখানি তলোয়ার পুরোহিতের নিকট উৎসর্গ করিতে দেওয়া হইল। ত্বরবারি উৎr সর্গীকৃত হইলে—পগুদুইটিকে একে একে একটি গর্তে নামাইয়া ধরা হইল। (এখানে