পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৬০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( Str কুরিতে লাগিলেন। এখানে ‘আমার কথাটি ফুরালো বলিবার বড়ই লোভ-হয় । ধৰ্ম্মান্ধ মুসলমানলেখকের আজগুবী গল্প বাদ দিয়া প্রকৃতপ্রস্তাবে দেখা যায়, রাজা গণেশ সম্পূর্ণ যবনপ্রভাবের সময়েই বলে ও কৌশলে বঙ্গের রাজদণ্ড গ্রহণ করেন। উত্তরপশ্চিম বঙ্গে মুসলমানেরই তখন সম্পূর্ণ প্রাধান্ত ; মুসলমান সামন্ত ও জায়গীরদারগণষ্ট ঐ ভাগে সমধিক প্রবল । তাছার বিরুদ্ধাচারী হষ্টলে সুব্যবস্থা বা রাজ্যশাসন অসম্ভব । প্রামাণিক ইতিহাস তবকগৎ আকবরী সাক্ষ্য দিতেছে, রাজা সৰ্ব্বথা মুসলমানপ্রজার চিত্ত আকর্ষণ করিয়া সদয় ব্যবহারে অপক্ষপাতে রাজ্যশাসন করিয়াছিলেন । এই কারণেই তাহার অল্পকালব্যাপী অধিকারে প্রজার মুখশাস্তি বৰ্দ্ধিত হইয়াছিল, এই কারণেই মৃত্যুর পরে মুসলমানগণও রাজার পবিত্র দেহ সমাহিত করিবার আগ্রহ দেখাইয়াছিল। এই মুসলমান প্রভাবের ফলেই রাজপুত্র যত্ন শেষে ইসলামৃধৰ্ম্ম গ্রহণ করেন। মুর কুতবাল আলমের প্রভাবে যদুর মুসলমানধৰ্ম্মগ্রহণের প্রবাদে সত্য নিহিত থাকা সম্পূর্ণ সম্ভব। কুতব অালম পুৰ্ব্বতন রাজগুরু ; ধাৰ্ম্মিক বলিয়া তাৎকালিক মুসলমানসমাজে সবিশেষ সমাদৃত ছিলেন । তাহার উপদেশ বা দৃষ্টান্তে হিন্দুরাজার মুসলমান হওয়া বিচিত্র নহে। রাজ গণেশের অল্পকাল পরে উত্তরবঙ্গে তাহেরপুরের স্বপ্রসিদ্ধ জমিদার রাজা কংশনারায়ণ প্রান্থভুত হন। হোসেনশাহের অব্যবহিত পুৰ্ব্বে গৌড়েয় বাদশাহী আসনে দুর্বল হাৰুলী নৃপতিগণের মধ্যে যুদ্ধবিগ্ৰহাদির অবকাশে অসাধায়ণধীশক্তিসম্পন্ন কংশনারায়ণ

  • গৌড়ে ব্রাহ্মণ, দ্বিতীয় সংস্করণ ১-৪–৬ পৃঃ ও ৮৭-৮৮ পৃঃ । Q

• বঙ্গদর্শন । করিয়াছিলেন। [ ২য়:বর্ষ, ফাঙ্কম্ব, উত্তরাঞ্চলে বহুদূর পর্য্যস্ত স্বীয় অল্পকার বিস্তার করিয়া অৰ্দ্ধস্বাধীনভাবে রাজত্ব এই ক্ষমতা প্রভাবেই তিনি বীরেন্দ্রসমাজে সমাজপতি বলিয়া স্বীকৃত হন। রিয়াজগ্রন্থে স্বাধীন রাজা কংশ ভাতুড়িয়ার জমিদার বলিয়া উল্লিখিত ; পরগণা ভাতুড়িয়াও বর্তমান রাজশাহী জেলায়, এবং অবশ্যই কংশনরায়ণের রাজ্যভুক্ত ছিল । স্বৰ্গীয় ত্ৰৈলোক্যনাথ ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয় পূৰ্ব্বে উল্লিখিত ১৩৯৬ সালের কুলুকভট্ট প্রবন্ধে গৌড়ে ব্ৰাহ্মণ হইতে কিঞ্চিৎ বিভিন্ন একটি বংশাবলী উদ্ধৃত করিয়া দেখাইয়াছেন, বারেন্দ্রবংশে শাণ্ডি লাগোত্রে নন্দনাবাসী ( নান্তাসী ) গ্ৰামী জগৎগুরু দিবাকর ভট্টের জ্যেষ্ঠপুত্র পুরুষোক্তম বেদীৰ্ত্তীর বংশে একত্রিংশ পর্য্যায়ে স্বনামখ্যাত তাহেরপুরের রাজা কংশনারায়ণ এবং দিবাকরের তৃতীয় পুত্র পণ্ডিতবর কুনুকভট্টের বংশে বড় বিংশ পৰ্য্যায়ে রাজা গণেশ রায় জন্মপরিগ্রহ করিয়াছিলেন । ‘গৌড়ে ব্রাহ্মণ গ্রন্থে দৃষ্ট হয়, কংশনারায়ণের বংশের দৌহিত্রকুলে তাছা হইতে অধস্তন দশম পুরুষে বর্তমান তাহেরপুররাজ শশিশেখর। এই অবস্থায় রাজা কংশনারায়ণের বংশ থাকিলে বলিতে হয়, এই বংশে ভট্টনারায়ণ হইতে ৪১শ পুরুষ হইত। কিন্তু কি রাঢ়ীয়, কি বীরেন্দ্র, ভট্টনারায়ণবংশে কুত্ৰাপি এই পৰ্য্যায় দৃষ্ট হয় না। রাঢ়ীয়কুলে ৩০ হইতে ৩২শ এবং বারেন্দ্রমধ্যে ৩৫৩৬শ পৰ্য্যস্তই দেখা যায়। গৌড়ে ব্রাহ্মণে উদ্ধৃত এই ংশের বংশাবলী স্বীকার কুরিলে ৪২শ পুরুষ হইয় পড়ে ; সুতরাং এই বংশপত্রিক ভ্রম’জুক বলিয়া নির্দেশ করা যাইতে পারে ॥৬