পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Qbダ বঙ্গদর্শন । [ বৈশাখ । বিদ্যালয়ের ছাত্রদিগের পাঠ্যরূপে এই পুস্তক নিৰ্ব্বাচিত হইলে যে খুবই ভাল হয়, তৎপক্ষে কিছুমাত্র সন্দেহ নাই। তবে, যাহারা বিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তক-নিৰ্ব্বাচনের কৰ্ত্ত, তাহার —যাক্‌, সে পাপ কথায় আর কাজ নাই । তাই বলিয়া, এই পুস্তকের যে কোন দোষ নাই, এমন নহে। প্রথমেষ্ট, এই গ্রন্থের নাম ‘মানব-চরিত্র হইল কেন ? স্মাইলসসাহেব যে র্তাহার গ্রন্থের নাম ‘Character দিয়াছেন, তাহা ঠিকই হইয়াছে। Character বলিলে যাহা বুঝায়, ‘মানব-চরিত্র’ বলিলে তাহা বুঝায় না। ‘মানব-চরিত্র বলিলে {oth Human Nature & Human Characteristics, fog stol & এই পুস্তকের বিষয়ীভূত নহে। তার পর, ছাত্রদিগের জন্ত লিখিত গ্রন্থে শাস্ত্র ও সংহিতা হইতে শ্লোক উদ্ধৃত করা কেন ? ইহাতে নিজের বিদ্যাপ্রকাশ হয় বটে, কিন্তু ছাত্রদিগের যে কি উপকার হইতে পারে, তাহা জগদীশ্বর জানেন। দুই-একটা ভুলও আছে। তাহা যদিও মারাত্মক নহে, কিন্তু ছাত্রদিগের জষ্ঠ লিখিত পুস্তকে কোনপ্রকার ভুলই থাকা উচিত নহে। নেপোলিয়নের সম্বন্ধে একস্থলে লিখিত হইয়াছে,—“তিনি বলিতেন, “অসম্ভব” এই কথা কেবল নিবোধগণের অভিধানেই প্রাপ্ত হওয়া যায়।” ‘বলিতেন’ ত দূরের কথা, এমন কথা, নেপোলিয়ন কখন বলেন নাই। বিশেষ একটি দুরূহকার্য্যোপলক্ষে অধীনস্থ লোকদিগকে উৎসাহিত করিবার জন্তু তিনি বলিয়াছিলেন যে, ‘অসম্ভব’কথাটা ফরাশী নহে। এই বাক্যে এবং অবিনাশবাবুর লিখিত বাক্যে বিস্তর প্রভেদ । t কোন কোন স্থলে গ্রন্থকার উপযোগিতার দিকে দৃষ্টি রাখিতে পারেন নাই একস্থলে লিখিত হইয়াছে—“অশ্বারোহণ, নৌচালন, ক্রিকেট, জিম্নাষ্টিক প্রভৃতি সৰ্ব্বাঙ্গসঞ্চালন ও মানসিক প্রফুল্লতা বিকাশোপযোগী ব্যায়ামে দিবসের অপরাতুসময়ে নিয়মিতরূপে রত থাকা উচিত।” পুস্তকখানি কি ইংরেজ ছাত্রের জন্ত, ন বাঙ্গালী ছাত্রের জন্ত লিখিত ? দরিদ্র বাঙালী ছাত্র কোথ হইতে অশ্ব, নৌকা ও ক্রিকেটের সরঞ্জামের সংস্থান করিবে ? স্মাইলস্ সাহেবের পুস্তকে অবশ্যই এইরূপ থাকিবে ; এবং অবিনাশবাবু যথা দৃষ্টং তথা লিখিতং করিয়া কাজটা সারিয়াছেন। তিনি মনে করেন নাই যে, ইংলণ্ডে যাহা সমীচীন উপদেশ, বঙ্গদেশে তাহা পাগলের প্রলাপ হইতে পারে । এই পুস্তকের ভাষাসম্বন্ধেও কিছু বক্তব্য আছে । ছাত্রদিগের জন্ত লিখিত পুস্তকের ভাষা অারও সরল হইলে ভাল হইত। কিন্তু এই কারণে অবিনাশবাবুকে বড় দোষ দেওয়া যায়ু না; কেন না, ভাষার অধিকতর সারল্য সম্পাদন করিতে হইলে বোধ হয় ‘ভাব-গাম্ভীর্য্যের অপচয় ঘটিত । এতদ্ব্যতীত, গ্রন্থকার স্থলে স্থলে যেন অভ্যস্ত শব্দের স্রোতে ভাসিয়া গিয়াছেন, ভাবের দিকে লক্ষ্য রাখিতে পারেন নাই ; অর্থাৎ, সেই সেই স্থলে শদ্বপরম্পরা শস্বরাশিমাত্র, ভাবছোতক নহে। “উদ্যমবিহীন অধ্যবসায়”—জিনিষটা কি, বুঝিতে পারিলাম না। আর এক স্থলে—“প্রত্যুপকৃত ব্যক্তিও