পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় সংখ্যা । ] হইয়াছিল। শেকন্দরের সেনানায়কগণ ভারতবর্ষেৰ উত্তরপশ্চিমে তিনশত বৎসর কয়েকটি ক্ষুদ্ররাজ্যে ক্ষমতাবিস্তার করিৱার পর এসিয়াখণ্ড হইতে গ্ৰীকসংস্রব পুনরায় বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছিল। এই ক্ষণস্থায়ী ক্ষুদ্ররাজ্যের নখাগ্রগণনীয় গ্রীকরাজপুরুষগণের আদর্শে ভারতবুর্ষের শিক্ষা ও শিল্প সমুন্নত হইয়াছিল বলিয়া র্যাহার ইতিহাসরচনা করিয়া থাকেন, তাহারা ভারতবর্ষের পূৰ্ব্বাবস্থা অবগত হইবার জন্ত ক্লেশ স্বীকার করেন না ! গ্ৰীক অভিযানের বহুপূৰ্ব্বে শাক্যসিংহের বৌদ্ধমত প্রচারিত হইয়াছিল, তাহারও বহুপূৰ্ব্বে ভারতীয় সভ্যতা, শিক্ষা ও শিল্প অদ্ধভূমণ্ডলে সমাদর লাভ করিয়াছিল । গ্রীকরাজদূত মেগাস্থিনীস গ্রীক অভিযানের সমসাময়িক লেখক । তাহার ধ্বংসাবশিষ্ট ভারতবিবরণীতে সেকালের ভারতীয় সমৃদ্ধি ও সভ্যতার যাহা কিছু পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায়, তাহাই পৰ্য্যাপ্ত। তন্দ্বারা বহুপূৰ্ব্বে সমুদ্ভূত জ্ঞানগৌরবের সাক্ষ্যলাভ করা যায় । সুতরাং ভারতীয় আর্য্যসভাত যে সাদ্ধদ্ধিসহস্ৰ বৎসরের অধিক পুরাতন, তাহাতে সংশম স্থাপন কর। ষায় না । বৈদিক সাহিত্য বহু wপুরাতন । তাহার ভাষাও পুরাতন বলিয়া বুঝিতে পারা যায়। মানবসাহিত্যের এত পুরাতন রচনা অন্ত কোন দেশে বর্তমান নাই । এই পুরাতন সাহিত্যের ভাষা ক্রমশ মুমার্জিত হইরা ংস্কৃত আখ্যা প্রাপ্ত হইয়াছিল। ধীরে ধীরে বহুদিবসের সাহিত্যালোচনার ফলস্বরূপ এই ভাষাসংস্কার সাধিত হইয়াছিল। তাহাকে গৌড়ের পূর্বকাহিনী। ૭(t সংস্কৃতাবস্থায় রক্ষা করিবায় জন্ত উত্তরকালে যে সকল ব্যাকরণ রচিত হইয়াছিল, তন্মধ্যে .পাণিনির ব্যাকরণ জগদ্বিখ্যাত। তাহা গ্ৰীক অভিযানের বহুপূৰ্ব্বে রচিত ; শাক্যাবির্ভাবের পূর্বকালবৰ্ত্তী বলিয়া পরিচিত। তৎপূৰ্ব্বে ভারতবর্ষে বিপুল সাহিত্য বৰ্ত্তমান না থাকিলে, এরূপ সৰ্ব্বাঙ্গসুন্দর ব্যাকরণ রচিত হইতে পারিত না । অধ্যাপক গোলড্‌ষ্টকার নানা প্রমাণের আলোচনা করিয়া এই ব্যাকরণ খৃষ্টপূৰ্ব্ব একাদশ শতাব্দীর সমকালে রচিত বলিয়া মত প্রকাশ করিয়া গিয়াছেন । তৎকালে ভারতবর্ষকে শিক্ষা ও সভ্যতায় সমুন্নত করিতে পারে, এরূপ আদর্শ অন্ত কোন দেশে বর্তমান ছিল না । অন্ত কাহার ও আদর্শে ভারতীয় সভ্যতা বিকশিত হুইয়া থাকিলে, দুবে, ভাষায়, সাহিত্যে ও লোকব্যবহারে যে সকল নিদর্শন বর্তমান থাকা সম্ভব, তাঙ্গর অভাব সাধিত হইতে পারিত না। কিন্তু কেহ কেহ এই সিদ্ধান্তে অনাস্থ স্থাপন করিয়া পাণিনিকে শাকোত্তর যুগের লেখক বলিয়া প্রমাণ করিবার জন্ত পাণিনিস্থত্রে “শ্রমণ"শব্দের ব্যবহারের প্রতি কটাক্ষ করিয়া থাকেন।* ইহাদের তর্কপ্রণালী নিতান্ত ভ্রমসম্বুল । ইহারা বলেন, “শ্রমণ”শব্দের অর্থ বৌদ্ধসন্ন্যাসী ; সুতরাং যে গ্রন্থে সে শব্দ বর্তমান, তাহা বৌদ্ধধৰ্ম্মের অভু্যখানের পরবর্তী যুগে রচিত । এই তর্কের মুলে একটি অমুমানিক সিদ্ধান্ত লুক্কায়িত আছে। শাক্যসিংহের পূৰ্ব্বে বৌদ্ধমত ও “শ্রমণ”শব্দ ংস্কৃতসাহিত্যে অপরিচিত ছিল, এইরূপ

  • কুমারঃ শ্রমণাদিভিঃ । ২১৭• ।