পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

brきう স্বতরাং এখানেই আমরা ৩+৫+১+১২ =২১বৎসর কবিকে রাজসভায় দেখিতেছি। আবার ইতঃপূৰ্ব্বে কীৰ্ত্তিসিংহ, ভবসিংহ এবং দেবসিংহের সভাতেও আময়া কবিকে দেখিয়াছি। যদিও সেই রাজ্যকাল বেশী ব্যাপক হয় নাই, তথাপি তাহ অতিকম হইলেও মোট বোধ হয় ৫৬ বৎসর হইবে । তাহ হইলেই প্রায় ৩০ বর্ষকাল কবি রাজসভাতেই কাৰ্য্য করিয়াছেন। শুনিতে পাওয়া যায় যে, কবি ৭৩ কি ৭৪ বৎসর বয়সে পরলোকগত হন। অতএব এরূপ মনে করা যাইতে পারে যে, কবি ২ • কি ২৫ বৎসর বয়সে রাজসভায় প্রবেশ এবং জীবনের শেষ ১ • ১৫ বৎসর ধৰ্ম্মচিন্তায় অতিবাহিত করেন । আমরা এ সমস্ত আনুমানিকভাবেই বলিতেছি ; কারণ, এ বিষয়ে কোন সুদৃঢ় প্রমাণ আমাদের হস্তগত হয় নাই। কবি যে সংস্কৃতশাস্ত্রে বিশেষ বুৎপন্ন ছিলেন, তাহাতে সন্দেহ নাই। তিনি “পুরুষপরীক্ষা” নামে একখানি গদ্যপদ্যময় গ্রন্থ রচনা করেন। ইহাতে ৪টি পরিচ্ছেদ এবং ৪৪টি গল্প আছে । ইহাতে অসাধারণ কৌশলে রাজনীতি, ধৰ্ম্মনীতি ও সমাজনীতি প্রভৃতির অবতারণা করা হইয়াছে ; তাহ। হইতে কবির ঐ সকল শাস্ত্রে পারদর্শিত সম্যক্ উপলব্ধ হয় । পুস্তকখানি মুকুমারমতি বালকবৃন্দের শিক্ষার্থে রচিত, কিন্তু উৎকট আদিরসের অবতারণা থাকায়, তাহাদিগের পাঠের উহা সম্পূর্ণ অনুপযোগী হইয়া পড়িয়াছে। ‘লিথনাবলী’ নামে আর একখানি পত্রলিখনপ্রণালীশিক্ষার পুস্তকও নাকি বিদ্যা বঙ্গদর্শন । [ teյծ পতি প্রণয়ন করিয়াছিলেন। ইহাতে গুরুজন ও অন্তান্ত কাহাকে কি “ভাবে পত্র লিখিতে হইবে, তৎসম্বন্ধে উপদেশ দেওয়া হইয়াছে। পত্রলিখনপ্রণালী যে একটা শিক্ষণীয় বিষয় এবং তাহ তখনকায় সময়েও যে বেশ জানা ছিল, এই পুস্তকই তাহার সাক্ষ্যদান করিতেছে । কবি কীৰ্ত্তিলতা’ নামে আর একখানি গ্রন্থও প্রণয়ন করেন। ইহা রাজা কীৰ্ত্তিসিংহের সময়ে প্রথম প্রণীত এবং তদীয়নামানুসারেই উহার নামকরণ হইয়াছে। ইহাতে নাকি কীৰ্ত্তিসিংহ ও তদীয় অন্যান্ত বংশধরগণের কীৰ্ত্তিকাহিনী ও রাজ্যশাসন প্রণালী প্রভৃতির বিবরণ শাৰ্দ্দলবিক্রীড়িতাদি ছন্দে বর্ণিত আছে । ইহা পাঠ করিলে ঐ সব রাজগণের একটা ধারাবাহিক বিবরণ প্রাপ্ত হওয়া যাইতে পারে। আমি ঐ পুস্তক দেখি নাই, তবে শুনিয়াছি, উহা এখন দুষ্প্রাপ্য হইয়াছে। মৈথিল পণ্ডিত ঐ পুস্তকের একটি শ্লোকের ভাব আমাকে বলিয়াছিলেন । তাহ রাজা পদ্মসিংহের বিষয়ে লিখিত। ভাবটি এইরূপ — "রাজা পদ্মসিংহ বৃহস্পতির দ্যায় বিদ্বান, রামের স্থায় চরিত্রবান,যমের ন্তায় প্রতাপশালী, বসুমতীর ন্যায় ধীর, সমুদ্রের দ্যায় গম্ভীর এবং বলির ন্তায় দাতা ছিলেন। ভগবান যেন উৎকর্ষের সর্বপ্রকার উপাদান হইতে সারাংশ সংগ্ৰহ করিয়াই তাহাকে নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন ।” ‘কীৰ্ত্তিলতা”য় অন্যান্ত নরপতিগণের সকলের চরিত্রই বিবৃত হইয়াছে, কিন্তু লছিমাদেবীর রাজত্বসম্বন্ধে কবি কোন বর্ণনাই