পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় সংখ্যা । ] মহাকবি ভবভূতির অভ্রান্ত ভাষায় ইহাও বলা যায় যে— “ষখ স্ত্রীণtং তথা বাচাং সাধুত্বে দুর্জনে জনঃ।” ীিয় পণ্ডিতের উক্তির অনুমোদন *শিবসিংহের ছায় একজন প্রভাবশাভে বী নরপতি যে নিজ মহিষীর এরূপ ব্যভিচার জ্ঞাত থাকিয়াও কবিকে স্বীয় রাজসভায় স্থান দিয়াছিলেন, তাহার শিরশেছদ করেন নাই, ইহা আমাদের নিকট একান্ত আশ্রদ্ধের । ভারতবর্ষের লোকে স্ত্রীর ব্যভিচার যেরূপ দোষাবহ—যেরূপ অসহনীয় বোধ করে, অন্ত কোন দেশে এত করে কি না, জানি না। সামান্ত ব্যক্তিরাও যখন এরূপ স্থলে আইনের মর্য্যাদা লঙ্ঘন করিয়া, ভাৰ্য্যা ও উপপতি, উভয়ের অন্যতর বা উভয়েরই শিরশ্চেদ করিয়া থাকে, তখন শিবসিংহ নিজে রাজা এবং বীরপুরুষ হইয়া যে অবিচলিতচিত্তে যশ-উদ্ভাসিত স্বকীয় শুভ্র কুলে এ কলঙ্ককালিমা লেপন করিতে দিয়াছিলেন, এ কথা আমাদের কোনক্রমেই বিশ্বাস করিতে ইচ্ছা হয় না। মুসলমান-আক্রমণ-কালে রাষ্ট্রবিপ্লবের সময় রাণী লছিমার রক্ষণাবেক্ষণের ভার কবি বিদ্যাপতির উপরেই অৰ্পিত ছিল, সুতরাং রাণী তাহার সহিত পলায়নে বাধ্য হইয়াছিলেন। আমরা তো ইহাতে কবির বিশ্বস্ততারই সমধিক প্রমাণ পাইতেছি। নিতান্ত বিশ্বস্ত লোক ন হইলে আর তাহার হস্তে কেহ নিজ স্ত্রীপরিবারের ভার অর্পণ করে না ; কবির প্রতিও রাজার তাদৃশ বিশ্বাস না থাকিলে, তিনি এরূপ ভার অর্পণ করিবেন কেন ? রাজা শিবসিংহ বিদ্যাপতিকে কত

  • : *- : *

বিষ্ঠাপতি-প্রসঙ্গ। 驗 tyసి দুর ভালবাসিতেন, কতদূর বিশ্বাস করিতেন, উল্লিখিত 'ঘটনায় আমরা তাহারই পরিচয় পাই। আমাদের বিশ্বাস, কবিও সম্পূর্ণরূপে র্তাহার ধৰ্ম্ম ও বিশ্বস্ততা রক্ষা করিয়া গিয়াছেন। মুসলমানদিগের সহিত রাজা শিবসিংহের বহু যুদ্ধবিগ্রহ হয়, সেজন্ত অনেকসময় রাজাকে রাজধানী হইতে দূরে নিরুদিষ্ট অবস্থার থাকিতে হইত। সুতরাং রাজকাৰ্য্যের পরামর্শ প্রভৃতির জন্য কবিকে অনেকসময় রাণী লছিমার সন্নিহিত হইতে হইত, কিন্তু তাহাতে অন্ত কোন নীচ অসদভিসন্ধি ছিল না। কবি বিদ্যাপতি একজন প্রেমের সাধক, —পবিত্র সৌন্দর্য্যের উপাসক ছিলেন। আর শুনিতে পাওয়া যায়, রাণী লছিমা ও কমলার ন্তায় অসাধারণরূপলাবণ্যশালিনী ছিলেন ; সেজন্ত তাহার প্রতি কবির অন্তরের একটা আকর্ষণ থাকিতে পারে,কিন্তু তাহ যে সৰ্ব্বথা কামগন্ধশূন্ত, তাহার মধ্যে যে মানৰীয় রক্তমাংসসভূত প্রেম-বিলাসের কণামাত্রও ছিল না, ইহাতে সন্দেহ করিবার কোন প্রমাণ বা হেতুই আমরা দেখি না। রাজা শিবসিংহের ব্যবহারই আমাদের পক্ষে প্রবল প্রমাণ বলিয়া বোধ করি। লছিমাদেবীকে না দেখিতে পাইলে কবির কবিত্ব নাকি ক্ষত্তি পাইত না, আবার র্তাহাকে দেখিবামাত্র কবির প্রেম-উৎস উথলিয়া শতধারে কবিত্বস্রোত ছুটিয়া বাহির হইত, এরূপ প্রবাদেরও অনেকে উল্লেখ করেন। ইহা কতদূর সত্য, তাহ আমরা অবগত নহি । দিল্পীর বাদশাহ একবার কোন অপরাধে রাজা শিবসিংহকে কারারুদ্ধ করেন । কবি