পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సితీ তখন দিল্লীতে যাইয়া স্বীয় কবিত্বপ্রভাবে বাদশাহকে মুগ্ধ করিয়া রাজার উদ্ধারসাধন করিয়াছিলেন, এইরূপ কিংবদন্তীও প্রচলিত, আছে । ইহা অতিরঞ্জিত বা অসম্ভব বলিয়৷ বোধ হয় না । কথিত আছে,কবি আপনার অস্তিমসময় জানিতে পারিয়া পুণ্যতোয়া জাহ্লবীর সলিলে স্বীয় পাপরাশি বিধৌত করিয়া তাহার অঙ্কেই তমুত্যাগ করিবার মানসে যাত্রা করেন। পরে গঙ্গা হইতে দুইক্রোশ দূরে থাকিতে তিনি বলেন, “আমি মায়ের জন্য এতদুর আসিলাম, আর মা আমার জন্য এই পথটুকু আসিবেন না ?” ভক্ত সন্তান মায়ের স্নেহপরীক্ষার্থ অভিমান করিয়া বসিয়া রহিলেন, আর অগ্রসর হইলেন না । কিন্তু প্রাণের আহবান , শুনিয়া জগজ্জননী কি স্থির থাকিতে পারেন ? তিনি ভক্তির বশীভুত, সুতরাং একরাত্রির মধ্যেই সেইস্থানে গঙ্গার শুভাগমন হইল। কবিও তখন ভক্তিপুলকিত দেহে পবিত্র গঙ্গাস্তব গান করিতে করিতে মায়ের পূত অঙ্কে স্বদেহ বিসর্জন করিয়া মোক্ষলাভ করিলেন। এইরূপ প্রবাদ ও প্রচলিত আছে,কবি যেখানে দেহ বিসর্জন করিয়াছিলেন, অদ্যাপি তথায় গঙ্গাশ্বর্ভের চিহ্ল দেখিতে পাওয়া যায়। আজকাল বিদ্যাপতির বংশধরগণ,শুনিয়াছি, বঙ্গদর্শন । [ জ্যৈষ্ঠ । বিস্ফীগ্রাম পরিত্যাগ করিয়া অন্যত্র বাস করিতেছেন, কিন্তু বিদ্যাপতির বাসস্থানের চিকু এখনও নাকি সেখানে বিদ্যমান আছে। কবি নিজে তথায় একটি . শিবস্থাপন করিয়াছিলেন। শিবমন্দির কন পাদদেশहूश्डि कमणानांबी अक**च्छबि नब्रि९ আজও সেখানে দেখিতে পাওয়া যায় । তবে মন্দিরটি, শুনিতে পাই, যত্নাভাবে প্রায় ভগ্নদশায় পতিত । ইহা যদি সত্য হয়, তবে দেশের তাহা দুরপনেয় কলঙ্ক বলিতে হুইবে । মৈথিলগণের এবং বঙ্গীয়গণের কবির সে শেষস্মৃতি রক্ষার জন্ত উপযুক্ত আয়োজন করা কৰ্ত্তব্য । মিথিলার প্রথিতযশা ধাৰ্ম্মিকবর দ্বারবঙ্গাধিপতির গোচরীভূত হইলে বোধ হয় আর এ বিষয়ের জন্ত কোনই বেগ পাইতে হইবে না । কবি বিদ্যাপতির সম্বন্ধে যে সব তথ্য আমি জানিতে পারিয়াছিলাম,সংক্ষেপে তাহা সুধীজনের নিকট নিবেদন করিলাম। ইহাতে কবির বিষয়ে অনেক নুতন কথা আছে। সে সকল এবং পূৰ্ব্বশ্ৰুত দুইএকটি বিষয় ও তাঁহাদের উপর আমার যাহা বক্তব্য, তৎসমস্তের সমবায়ে এই প্রবন্ধ গঠিত হইল। ইহার সকল কথা সত্য কি না, বলিতে পারি না ; তবে আমার বিশ্বাস, সত্যও যে অনেকগুলি ইহার মধ্যে না আছে, তাহা নহে।* শ্ৰীযদুনাথ চক্ৰবৰ্ত্তী ।

  • প্রবন্ধটির সঙ্কলন শ্রাবণমাসে হইলেও, পারিবারিক ও অন্তান্ত নানারূপ কাৰ্য্য নিবন্ধন ইহা মুদ্রিত করিতে কোনও পত্রিকায় দেওয়া হয় নাই। যাহা হউক, গত ভাদ্রমাসের এডুকেশন গেজেটে উদ্ধৃত সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকার কোন প্রবন্ধ পাঠ করিয়া দেখিলাম যে, স্বনিপুণ প্রত্নতত্ত্বদশী পণ্ডিত শ্ৰীফুক্ত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয় বিদ্যাপতিসুম্বন্ধে যে সব তথ্য জানিয়া আসিয়াছেন, তাহার অনেকস্থলে আমার সংগৃহীত বিষয়ের সহিত ঐক্য আছে। ইহা হইতে বুঝিতেছি যে, আমার সংগ্রহের মধ্যে অনেকগুলিই সত্য। এজন্ত সানন্সে ইহা পাঠকগণধর্মীপে উপস্থিত করিলাম।—লেখক।