পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/১২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয়-সংখ্যা । ] চোখের বালি । DDJAGGTT TT BSBS BBBB BBBS BBBBB BB eeBB DD TBB fদনীর নাম লেখা / পল্লীগ্রামের প্রচলিত আতিথ্যের সহিত ইহার একটু প্রভেদ ছিল। বিহারী তাহারি উল্লেখ করিয়া প্রশংসাবাদ করিলে রাজলক্ষ্মী কহিতেন—“এই মেয়েকে কি না তোরা অগ্রাহ করিলি !” বিহারী হাসিয়া কহিত—“ভাল করি নাই মা, ঠকিয়াছি। কিন্তু বিবাহ না করিয়া ঠক ভাল—বিবাহ করিয়া ঠকিলেই মুক্ষিল ।” রাজলক্ষ্মী কেবলি মনে করিতে লাগিলেন, “আহ, এই মেয়েই ত আমার বধু হইতে পারিত ! কেন হইল না !” রাজলক্ষ্মী কলিকাতায় ফিরিবার প্রসঙ্গমাত্র উত্থাপন করিলে, বিনোদিনীর চোখ ছলছল করিয়া উঠিত। সে বলিত, “পিসিম, তুমি দুদিনের জন্যে কেন এলে? যথন তোমাকে জানিতাম না, দিনত একরকম করিয়া কাটিত ! এখন তোমাকে ছাড়িয়া কেমন করিয়া থাকিব ?” রাজলক্ষ্মী মনের আবেগে বলিয়। ফেলিতেন, “ম, তুই আমার ঘরের বউ হলিনে কেন ? তা হইলে তোকে বুকের মধ্যে করিয়া রাখিতাম !” সে কথা শুনিয়া বিনোদিনী কোন ছুতায় লজ্জায় সেথান হইতে উঠিয়া যাইত । রাজলক্ষ্মী কলিকাতা হইতে একটা কাতর অমুনগ্নপত্রের অপেক্ষার ছিলেন । তাহার মহীন জন্মাবধি কখনো এতদিন মাকে ছাড়িয়া থাকে নাই—নিশ্চয় এতদিনে মার বিচ্ছেদ তাহাকে অধীর করিয়া তুলিতেছে। রাণী তাহার ছেলের অভিমান এবং হক্টর ছিলেন / বিহারী মহেন্দ্রের চিঠি পাইল। মহেন্দ্র লিথিয়াছে, “ম বোধ হয় অনেক দিন পরে জন্মভূমিতে গিয়া বেশ মুখে আছেন ।” রাজলক্ষ্মী ভাবিলেন, “আহা, মহেন্দ্র অভিমান করিয়া লিখিয়াছে ! মুখে আছেন ! হতভাগিনী মা না কি মহেন্দ্রকে ছাড়িয়া কোথাও মুখে থাকিতে পারে ” “ও বিহারী, তার পরে মহীন কি লিথিয়াছে, পড়িয়া শোনা না বাছা !” বিহারী কহিল, “তার পরে কিছুই ন৷ মা !—” বলিয়া চিঠিখান মুঠার মধ্যে দলিত করিয়া একটা বহির মধ্যে পূরিয়া ঘরের এক কোণে ধপ করিয়া ফেলিয়া দিল। রাজলক্ষ্মী কি আর স্থির থাকিতে পারেন । নিশ্চয় মহীন মার উপর এমন রাগ করিয়া লিখিয়াছে যে, বিহারী তাহাকে পড়িয়া শোনাইল না । বাছুর যেমন গাভীর স্তনে আঘাত করিয়া দুগ্ধ এবং বাৎসল্যের সঞ্চার করে—মহেন্দ্রের রাগ তেমনি রাজলক্ষ্মীকে আঘাত করিয়া র্তাহার অররুদ্ধ বাৎসল্যকে উৎসারিত করিয়া দিল । তিনি মহেন্দ্রকে ক্ষমা করিলেন। কহিলেন, “আহ, বেী লইয়া মহীন মুখে আছে, মুখে থাকৃ—যেমন করিয়া হোক, সে মুখী হোক! বোঁকে লইয়া আমি তাহাকে আর কোন কষ্ট দিব না ! আহা, যে মা কখনো তাহাকে একদও ছাড়িয়া থাকিতে । পারে না, সেই মা চলিয়া আসিয়াছে বলিয়া মহীন মার পরে রাগ করিয়াছে —”