পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/১৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হিন্দুত্ব । * তুরস্ক যে যে জায়গা দখল করিয়াছে, সেখানে রাজশাসন এক কিন্তু আর কোন ঐক্য নাই । সেখানে তুকি, গ্ৰীক, আৰ্ম্মাণি, সাভ, কুর্দ, কেহ কাহারে সঙ্গে না মিশিয়া, এমন কি পরম্পরের সঙ্গে ঝগড়া করিয়া কোনমতে একত্রে আছে। যে শক্তিতে এক করে, সেই শক্তিই সভ্যতার জননী—সেই শক্তি তুরস্করাজ্যের রাজলক্ষ্মীর মত হইয়া এখনো আবির্ভূত হয় নাই। প্রাচীন যুরোপে বৰ্ব্বর জাতেরা রোমের প্রকাও সাম্রাজ্যটাকে বাটোয়ার করিয়া লইল । কিন্তু তাহারা আপন আপন রাজ্যের মধ্যে মিশিয়া গেল—কোথা ও জোড়ের চিহ্র রাখিল না । জেতা ও বিজিত ভাষায় ধৰ্ম্মে সমাজে একাঙ্গ হইয়। এক একটি নেশন-কলেবর ধরিল । সেই যে মিলনশক্তির উদ্ভব হইল, সেটা নানাপ্রকার বিরোধের আঘাত্তে শক্ত হইয়। সুনির্দিষ্ট আকার ধরিয়া মুদীর্ঘকালে এক একটি নেশনকে এক একট লভ্যতার আশ্ৰয় করিয়া তুলিয়াছে । যে কোন উপলক্ষ্যে হৌক অনেক লোকের চিত্ত এক হইতে পারিলে তাহাতে শহৎ ফল ফলে । যে জনসম্প্রদায়ের মধ্যে cग३ ७क इहेबांब्र नखि चडांवङहे काय করে, তাহাদের মধ্য হইতেই কোন না কোন প্রকার মহত্ত্ব অঙ্গধারণ করিয়া দেখা দেয়, তাহারাই সভ্যতাকে জন্ম দেয়, সভ্যতাকে পোষণ করে। বিচিত্রকে মিলিত করিবার শক্তিই সভ্যতার লক্ষণ । সভ্য য়ুরোপ জগতে সদ্ভাব বিস্তার করিয়া ঐক্যসেতু বাধিতেছে—বৰ্ব্বর যুরোপ বিচ্ছেদ, বিনাশ, ব্যবধান স্বজন করিতেছে, সম্প্রতি চীনে তাহার প্রমাণ পাওয়া গেছে । চীনে কেন, আমরা ভারতবর্ষে য়ুরোপের সভ্যতা ও বৰ্ব্বরতা উভয়েরই কাজ প্রত্যক্ষ করিতে পাই। সকল সভ্যতার মৰ্ম্মস্থলে মিলনের উচ্চ আদশ বিরাজ করিতেছে বলিয়াই, সেই আদশমূলে বিচার করিয়া বৰ্ব্বরতার বিচ্ছেদ অভিঘাত শুল দ্বিগুণ বেদন ও অপমানের সহিত প্রত্যহ অমুভব করিয়া থাকি । এই লোকচিত্তের একতা সব দেশে একভাবে সাধিত হয় না । এই জন্য যুরোপারের ঐক্য ও হিন্দুর ঐক্য এক প্রকারের নহে। কিন্তু তাই বলিয়া হিন্দুর মধ্যে যে একটা ঐক্য নাই, সে কথা বলা যায় না । সে ঐক্যকে ন্যাশনাল ঐক্য না বলিতে পার—কারণ নেশন ও ন্যাশনাল কথাটা আমাদের নহে, যুরোপীয় ভাবের দ্বারা তাহার অর্থ সীমাবদ্ধ হইয়াছে।

  • সত্যিপ্রসঙ্গে "নেশন কি” তৎসম্বন্ধে রেনার মত অমুবাদ করিয়া দেওয়া হইয়াছে—তাহার সহিত নিলাইন এই প্রবন্ধ পাঠ কৰিঙে পাঠকদিগকে অনুরোধ করি —সম্পাদক।