পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/২৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সংখ্যা । ] বাস্তবিক সত্তার যোগ রহিল্লাছে ; মহাসমুদ্রের বাস্তবিক সত্তার সঙ্গে ইংলগুের বাস্তবিক সত্তার যোগ রহিয়াছে। কিন্তু এই যে বাস্তবিক সত্তার অসংখ্য শ্রেণীপরম্পরা, ইহার গোড়ার কাহিনী একরত্তি ক্ষুদ্র ; কি ? না, আমার আপনাকে শুদ্ধ ধরিয়া এই কুটুরী-ঘরটির বাস্তবিক সত্তা ; কেন না, তাহাই কেবল সাক্ষাৎসম্বন্ধে আমার জ্ঞানে প্রকাশ পাইতেছে । তদ্ব্যতীত অার যাহা কিছু আমার চিন্তার স্রোতে ভাসিয়া বেড়াইতেছে, সমস্তেরই সত্তা প্রাতিভাসিক সত্তা। এখন কথা হ’চ্চে এই যে, সেই সকল চিন্তা-চর বস্তু-সকলের প্রাতি ভাসিক সন্তার সহিত আমার এই কুটুরী-ঘরটির বাস্তবিক সত্তার সাক্ষাৎসম্বন্ধে বিশেষ কোনো প্রকার সম্পর্ক দৃষ্ট হইতেছে না বটে, কিন্তু তা বলিয়া, আমার বুদ্ধি পরোক্ষসম্বন্ধে দুয়ের মধ্যে সম্পর্ক-পাতানো-কার্য্যের ঘটকতা করিতে ক্ষাস্ত থাকিতে পারে না । আমার বুদ্ধির নিকটে এ কথা অবিদিত নাই যে, আমার চিন্তা-চর প্রাতিভাসিক ইংলণ্ডের গোড়া’র কথা হ’চ্চে বাস্তবিক ইংলণ্ড ; আর সেই বাস্তবিক ইংলণ্ড হইতে আমার এই ক্ষুদ্র কুটুরী-ঘর পর্য্যন্ত বাস্তবিক সত্তার যোগ-স্বত্র নিরবচ্ছেদে চলিয়া আসিরাছে । আমার বুদ্ধি এটা বেশ, জানে যে, এই প্রত্যক্ষ পরিদৃশ্যমান কুটুরা-ঘরের বাস্তবিক সত্তী এবং সমস্ত জগতের বাস্তবিক সত্তা, মুলে একই বাস্তবিক সত্তা । ইহা জানিয়া আমার বুদ্ধি করিতেছে কি ? না, প্রথমত আমার এই প্রত্যক্ষ পরিদৃশ্যমান কুটুৰীরের বাস্তবিক সত্তাতেই সৰ্ব্বজগতের সার সত্যের আলোচনা। ኟዓዓ অখণ্ড এবং নিরবচ্ছিন্ন বাস্তবিক সত্তা উপলব্ধি করিতেছে ; দ্বিতীয়ত আমার এই ক্ষুদ্র কুটুরীর বাস্তবিক সত্তাতেই বিশ্বভুবনের বাস্তবিক সত্ত। হস্তে পাইয়া সেই নিরবচ্ছিন্ন অখণ্ড বাস্তবিক সত্তার যোগে আমার চিন্তাচর ইংলণ্ডের প্রাতিভাসিক সত্তার সহিত বাস্তবিক সন্তা জুড়িয়া দিতেছে। অতএব জাগ্রৎকালে আমি আমার মনোরথবিমানকে প্রাতিভাসিক সত্তার আকাশ-মার্গে যতই উচ্চে উড্ডীয়মান করাই না কেন— তাহার খুটি বাধা রহিয়াছে বাস্তবিক সত্তার স্বদূঢ় ভিত্তিমূলে—যদিচ সে ভিত্তিমূল দেখিতে অতি যৎসামান্য ক্ষুদ্র । সে ভিত্তিমূল কি ? না, আমার আপনার এবং আমার সন্নিধানবৰ্ত্তী প্রত্যক্ষ পরিদৃশ্যমান বিষয়সকলের বাস্তবিক সত্তা। এইটি কেবল এখানে দেখা উচিত যে, বাস্তবিক সত্তা’র সাক্ষাৎকার-লাভ আমি যে-কোনো স্থানেই করি না কেন—তিল-পরিমাণ স্থানেই তাহার সাক্ষাৎ লাভ করি, আর পর্বতপরিমাণ স্থানেই তাহার সাক্ষাৎ লাভ করি, যে-কোনো স্থানেই তাহার সাক্ষাৎকার লাভ করি না কেন, সেই স্থান হইতেই তাহা নিখিলবিশ্বময় নিরবচ্ছেদে পরিব্যাপ্তণ অনতিপূৰ্ব্বে আমরা দেখিয়াছি যে, জাগ্ৰংকালে বাস্তবিক এবং প্রাতিভাসিক, এই দুইরূপ সত্তা একযোগে কাৰ্য্য করে বলিয়া বুদ্ধি রীতিমত খেলিতে পায়। স্বপ্নকালে মনেরই কেবল দুয়ার খোলা থাকে বুদ্ধির দ্বারে কপাট পড়িয়া যায়। স্বপ্নের মনোরাজ্যে যাহার যাহা কিছু সত্তা, সমস্তই প্রাতিভাসিক সত্তা। পূৰ্ব্বে এক স্থানে