পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/২৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

• সার সত্যের আলোচনা । &ፃቖ ষষ্ঠ-সংখ্যা । ] দুৰ্ব্বাসা-ঋষির শাপ-প্রদানের অব্যবহিত পুৰ্ব্বক্ষণে শকুন্তলার জ্ঞান দুষ্যস্ত রাজার ধ্যানে নিমগ্ন ছিল —স্বযুপ্তি-কালে নিদ্রিত ব্যক্তির জ্ঞান তেমনি অতীব একটি সরস কার্য্যে নিমগ্ন থাকে ; এমন ভরপুর নিমগ্ন থাকে যে, আর কোনো দিকেই তাহার দৃষ্টিপাত করিবার সামর্থ থাকে না । সে কাৰ্য্য কি ? না, প্রাণের কল-ম্যারামতিকার্য্য। শকুন্তল। যেমন দুষ্যস্ত রাজাকে ভাল বাসিতেন, বুদ্ধি তেমনি প্রাণকে ভাল বাসে। স্বযুপ্তি-কালে তাই নিদ্রিত ব্যক্তির বুদ্ধি প্রাণের কল-ম্যারামতি-কার্য্যে একান্তঃকরণে নিমগ্ন থাকে। ঐ কার্য্যট স তক্ষণ পর্য্যন্ত নিরুপদ্রবে চলিতে থাকে, ততক্ষণ পৰ্য্যন্ত স্বযুপ্তির আরাম অটুট থাকে। ঐ কার্যটি সাঙ্গ হইলেই নিদ্রাসুখের ভোগ-মাত্রা পর্য্যাপ্তি লাভ করে ; ভোগমাত্র পূর্ণ হইলেই নিদ্রা-ভঙ্গ হয়। এতক্ষণ ধরিয়া যে বিযয়ের আলোচনা করা হইল, তাহাতে জীবাত্মার জ্ঞানের তিন কালের তিন অবস্থার প্রভেদ বুঝিতে পারি 蛾 বার পথ অনেকটা পরিষ্কৃত হইয়াছে, এরূপ ভরসা হয়। এখন আমরা এটা অন্তত বুঝিতে পারিতেছি যে,— (১) সুষুপ্তি-কালের জ্ঞান প্রাণ-ক্রিয়ার ব্যতিক্রম-সংশোধন-কার্য্যে ব্যাপৃত থাকে এবং তজ্জনিত আনন্দ-ভোগে নিমগ্ন থাকে । (২) স্বপ্নকালের জ্ঞান মনোরাজ্যের প্রাতিভtসিক সত্তাতে ভ্ৰাম্যমাণ হইতে থাকে । (৩) জাগ্রৎকালের জ্ঞান, বিজ্ঞান-রাজ্যের ব্যাবহারিক সত্তার দুই পৃষ্ঠের অপর দুইরূপ সত্তার, ইহার সঙ্গে উহার যোগ-সংঘটনকার্য্যে ব্যাপৃত থাকে। অতঃপর তিন কালের জ্ঞানের তিন অবস্থা একসঙ্গে ফুৰ্ত্তি পাইবার সময় কোথায় কি ভাবে ফুর্তি পায়, এবং পৃথক পৃথক ভাবে ফুৰ্ত্তি পাইবার সময় কোথায় কোথায় কি-কি-ভাবে পৃথক পৃথক্ হইয়া ছড়াইয়া পড়ে, ইত্যাদি কতকগুলি বিষয়ের আলোচনায় প্রবৃত্ত হওয়া যাইবে । আজিকের মত এই অবধিই ভাল । ঐদ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর।