পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৪১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবম-সংখ্যা । ] মহেন্দ্র তাড়াতাড়ি কলেজে চলিয়া গেল, কিন্তু সেখানে কিছুতেই স্থির থাকিতে পারিল না । পড়াশুনায় মন দিতে অনেকক্ষণ বৃথা চেষ্টা করির সকাল সকাল ৰাজী ফিরিয়া আসিল । ঘরে ঢুকিয় দেখে, বিনোদিনী বুকের তলায় বালিশ টানিয়া লইয়া নীচের বিছানায় উপুড় হইয়া কি-একটা বই পড়িতেছে—রাণীকৃত কালে চুল পিঠের উপর ছড়ানো । বোধ করি বা সে মহেন্দ্রের জুতার শব্দ শুনিতে পায় নাই। মহেন্দ্র আস্তে আস্তে পা টিপিয়া কাছে আসিয়া দাড়াইল । শুনিতে পাইল, পড়িতে পড়িতে বিনোদিনী একটা গভীর দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিল। মহেন্দ্র কহিল, “ওগো করুণাময়ি, কাল্পনিক লোকের জন্ত হৃদয়ের বাজে খরচ করিয়ো না ! কি পড়া হইতেছে ?” বিনোদিনী ত্রস্ত হইয়া উঠিয়া বসিয়া তাড়াতাড়ি বইখানা অঞ্চলের মধ্যে লুকাইয়া ফেলিল। মহেন্দ্র কাড়িয়া দেখিবার চেষ্টা করিতে লাগিল। অনেকক্ষণ হাতাহাতিকাড়াকড়ির পর পরাভূত, বিনোদিনীর অঞ্চল হইতে মহেন্দ্র বইখানি ছিনাইয়া লইয়া দেখিল --বিষবৃক্ষ। বিনোদিনী ঘন নিশ্বাস ফেলিতে ফেলিতে রাগ করিয়া মুখ ফিরাইয়া চুপ করিয়া বসিয়া রছিল। মহেঞ্জের বক্ষস্তল তোলপাড় করিতেছিল। অনেক চেষ্টায় সে হাসিয়া কহিল— "छि हि रुड़ कांकि निएल ! श्रांभि उॉदिब्रছিলাম, খুব একটা গোপনীর কিছু হইবে বা ! এত কাড়াকড়ি করিয়া শেষকালে কি মা বিষবৃক্ষ বাহির হইয়া পড়িল!” চোখের বালি । 8e (t বিনোদিনী কহিল, “আমার আবার গোপনীয় কি থাকিতে পারে শুনি !” মহেন্দ্র ফস করিয়া বলিয়া ফেলিল— “এই মনে কর যদি বিহারীর কাছ হইতে কোন চিঠি আসিত ?” নিমেষের মধ্যে বিনোদিনীর চোখে বিদ্যুৎ স্ফুরিত হইল। এতক্ষণ ফুলশর ঘরের কোণে খেলা করিতেছিল, সে যেন দ্বিতীয়বার ভস্মসাৎ হইয়া গেল। মুহূর্বেপ্রজ্বলিত অগ্নিশিখার মত বিনোদিনী উঠিয়া দাড়াইল। মহেন্দ্র তাহার হাত ধরিয়া কহিল, “মাপ কর, আমার পরিহাস মাপ কর।” বিনোদিনী সবেগে হাত ছিনাইয়া লইয়া কহিল—“পরিহাস করিতেছ কাহাকে.! যদি তাহার সঙ্গে বন্ধুত্ব করিবার যোগ্য হইতে, তবে তঁtহাকে পরিহাস করিলে সহ করিতাম ! তোমার ছোট মন, বন্ধুত্ব করিবার শক্তি নাই, অথচ ঠা p. বিনোদিনী চলিয়া যাইতে উদ্যত হইবামাত্ৰ মহেন্দ্র দুই হাতে তাহার পা বেষ্টন করিয়া বাধা দিল । এমন সময় সম্মুখে এক ছায়া পড়িল, মহেন্দ্র বিনোদিনীর পা ছাড়িয় চমকিয়া মুখ তুলিয়া দেখিল, বিহারী। . বিহারী স্তির দৃষ্টিপাতে উভয়কে দগ্ধ করিয়া শাস্ত ধীরস্বরে কহিল—“অত্যন্ত অসমরে উপস্থিত হইরাছি, কিন্তু বেশিক্ষণ থাকিব না । একটা কথা বলিতে আসিয়াছিলাম। আমি কাশী গিয়াছিলাম, জানিতাম না, সেখানে বৌঠাকরুণ আছেন। না জানিয়া র্তাহার কাছে অপরাধী হইয়াছি ; তাহার