পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৪২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8》刘 ধারায় গৃহাঙ্গন প্লাবিত ও অঙ্গনাপদবিমৰ্দ্দনবলে কৰ্দ্দমিত হইয়া উঠিতেছে। নাচিয়া নাচিয়া নাচিয়া কিশোরীগণ পরিশ্রাস্ত হইলে, প্রণয়াম্পদের কণ্ঠাশ্লেবে বিশ্রামলাভ করিয়া, পুনরায় নচিয়া উঠিতেছেন ,—সে দৃশ্য কি হৃদয়োম্মাদক ! কবি তাহা এইরূপে বর্ণনা করিয়াছেন – “স্তনভরে ক্ষীণ-মধ্য ভাঙে বুঝি— তাহে নাহি কিছুমাত্র তুরুক্ষেপ করি, উন্মত্ত হইয়ে নীচে —পুষ্পদামশোভা ত্যজি এলাইয়ে পড়য়ে কবরী। চরণে নুপুর ওই দ্বিগুণ দ্বিগুণতর ফুকারিয়ে করিছে ক্ৰন্দন। অঙ্গে র স্পন্দনত্তরে কণ্ঠস্থার অবিরত ৰক্ষদেশ করিছে তাড়ন ॥” এই মদন-মহোৎসব উপলক্ষে মৃত্যগীতের ন্যায় নাটকাভিনয়েরও ক্রট হষ্টত না । শ্ৰীহৰ্ষদেবের সভায় মদন-মহোৎসব উপলক্ষেই রত্নাবলী নাটকার প্রথম অভিনয় সুসম্পন্ন হইয়াছিল। এই ঐহর্ষদেব সুবিখ্যাত বিক্রমাদিত্যের বংশধর দ্বিতীয় শীলাদিত্য নামে পরিচিত । তিনি ৬১০ হইন্তে ৬৫০ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত সিংহাসনে অধিরূঢ় ছিলেন । তৎকালে প্রসিদ্ধ চৈনিক সন্ন্যাসী হিরঙ্গ থ সাঙ্গ, ইহার সাক্ষাৎ লাভ করিয়াছিলেন। তখন ঐ স্থৰ্যদেব সমগ্র উত্তর তারতের সাৰ্ব্বভৌমিক সম্রাটু বলিয়া পরিচিত ছিলেন। রত্নাবলীর প্রস্তাবনায় দেখিতে পাওয়া যার,—তাহার রাজধানীতে মদন-মহোৎসব উপভোগ করিবার জন্য বহুসংখ্যক সামস্ব নরপতি নিমন্ত্রিত হইয়াছিলেন। রত্নাবলী শ্ৰীহৰ্ষদেবের রচিত বলিয়া প্রকাশ ; মহামহোপাধ্যায় মন্মটভট্ট বঙ্গদর্শন। [ পৌষ তাহা স্বীকার না করিয়া ধাবক-নামক কবির নামোল্লেখ করিয়া গিয়াছেন। রত্নাবলী যাহারই লিখিত হউক, বর্তমান প্রবন্ধে তাহার আলোচনা অনাবশ্যক । ইহা বে ঐহর্ষদেবের সভায় মদনমহোৎসবে অভিনীত হইয়াছিল, তাহাতে সন্দেহ করিবার কারণ নাই ;–রত্নাবলীর প্রস্তাবনাই তাহার উৎকৃষ্ট প্রমাণ । ইহা খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর কথা । তখন পর্য্যন্তও ভারতবর্ষের প্রবল প্রতাপে এসিয়াখণ্ডের জলস্থল সমুজ্জল ছিল ;–স্থলপথে গান্ধার, বাহুলীক, তিববৎ, তা তার ও মহাচীন, এবং জলপথে লঙ্কা,সুমাত্রা, যবদ্বীপ ও জাপান পৰ্য্যন্ত বৌদ্ধপ্রভাব পরিলক্ষিত হইত ; ভারত ও প্রশান্তমহাসাগরবক্ষে বাণিজ্যকুশল ভারতীয় বণিশ্বৰ্গ অর্ণবপোতে দ্বীপদ্বীপান্তরে গমনাগমন করিত ; নালন্দার সুবিখ্যাত বৌদ্ধবিদ্যালরে নানা দেশের নানা জাতির অধ্যয়নশীল ছাত্রবৃন্দ বিবিধ বিদ্যার অনুশীলন করিয়া ভারতীয় জ্ঞানভাণ্ডার দেশবিদেশে বহন করিয়। ভারতগৌরব সৰ্ব্বত্র সুবিস্তৃত করিত। সেই গোয়বের দিনে মদনমহোৎসবে যে পুঞ্জীকৃত বহুমূল্য কুকুমরাশি সমাহৃত হইল,তন্মধ্যে কাশ্মীর,বাঙ্গলীক ও পারসিক কুকুমের পরিচর প্রাপ্ত হওয়া যায় । ঘ্ৰাণে ও বর্ণে পার্থক্য থাকায় স্কুকুম উত্তম, মধ্যম ও অধম, শ্রেণীব্রয়ে বিতক্ত ছিল। কাশ্মীরের কুঙ্কুম উত্তম, বাহুলীকের মধ্যম এবং পারসিকের অণুম বলিয়া পরিচিত হষ্টয়াছিল। যথা :– কাশ্মীরদেশজে ক্ষেত্রে কুঙ্কুমং বস্তুবেন্ধ তৎ। সূক্ষ্মকেশরমারক্তং পদ্মগন্ধি তদুত্তমম্‌ ! *