পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৪৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবম-সংখ্যা । ] কলের সম্পূর্ণ মাধুর্য্যে পরিণত করাইয়া ¢मृथोहेब्रांtछ्न ! পর্য্যাপ্ত যৌবনপুঞ্জে অবনমিতা উমা সঞ্চারিণী পল্লৰিনী লতার ন্যায় আসিয়া গিরিশের পদপ্রান্তে লুষ্ঠিত হইয় প্রণাম করিলেন, তাহার কর্ণ হইতে পল্লব এবং অলক হইতে নবকণিকার বিচ্যুত হইয়। পড়িয়া গেল। মন্দাকিনীর জলে যে পদ্ম ফুটি ত, সেই পদ্মের বীজ রৌদ্রকিরণে শুষ্ক করিয়া নিজের হাতে গৌরী যে জপমালা গাথিয়াছিলেন, সেই . মালা তিনি তাহার তাম্ররুচি কয়ে সন্ন্যাসীর হস্তে সমর্পণ কয়িলেন । হাতে হাতে ঠেকিয় গেল । বিচলিতচিত্ত যোগী একবার উমার মুখে, উমার বিম্বাধরে তাহার তিন নেত্রকেই ব্যাপৃত কয়িয়া দিলেন । উমার শরীর তখন পুলকাকুল, দুই চক্ষু লজ্জায় পৰ্য্যস্ত এবং মুখ একদিকে সাচাকৃত । কিন্তু অপূৰ্ব্ব সৌন্দর্য্যে অকস্মাৎ উত্তাসমান এই যে হর্ষ, দেবতা ইহাকে বিশ্বাস কয়িলেন না,—সরোষে ইহাকে প্রত্যাখ্যান করিলেন। নিজের ললিতযৌবনের সৌন্দর্য্য অপমানিত হইল জানিয়া লজ্জাকুষ্ঠিতা রমণী কোনমতে গৃহে ফিরিয়া গেলেন। কথদুহিতাকেও একদিন তাহার যৌবনলাবণ্যের সমস্ত ঐশ্বৰ্য্যসম্পদ লইয়া অবমানিত হইয়া ফিরিতে হইয়াছিল । দুৰ্ব্বাসার শাপ কবির রূপকমাত্র। দুষ্যস্ত-শকুন্তলার বন্ধনবিহীন গোপনমিলন চিরকালের অভিশাপে অভিশপ্ত। উন্মত্ততার উজ্জ্বল উন্মেষ ক্ষণকালের জন্তই হয়—তাহার পরে অবসাদের, অপমানের, বিস্মৃতির অন্ধকার কুমারসস্তব ও শকুন্তল । 8२* আসিয়া আক্রমণ করে। ইহা চিরকালের বিধান। কালে কালে দেশে দেশে অপমানিত নারী “ব্যর্থং সমর্থ্য ললিতং বপুরাত্মনশ্চ” আপনার ললিত দেহকাস্তিকে ব্যর্থ জ্ঞান করিয়া, “শূন্ত জগাম ভবনাভিমুখী কথঞ্চিং” শূন্তহৃদয়ে কোনক্রমে গৃহের দিকে ফিরিয়াছে। ললিত দেহেয় সৌন্দৰ্য্যই নারীর পরম গৌরব চরম সৌন্দৰ্য্য নহে। সেইজন্যই “নিনিন্দ রূপং হৃদয়েন পাৰ্ব্বতী” পাৰ্ব্বতী রূপকে মনে মনে নিন্দা কয়িলেন । এবং “ইয়েষ সা কৰ্ত্তमबकরূপতামৃ” তিনি আপনার রূপকে সফল কয়িতে ইচ্ছা কয়িলেন। রূপকে সফল করিতে হয় কি করিয়া ? সাজে সজ্জায়, বসনে অলঙ্কারে ? সে পরীক্ষা ত ব্যর্থ হইয়া গেছে । ইয়েৰ সা কৰ্ত্ত মবন্ধ্যরূপতাং সমাধিমাস্থায় তপোভিরাত্মনঃ– তিনি তপস্তাদ্বারা নিজের রূপকে অবন্ধ্য করিতে ইচ্ছা করিলেন । এবায়ে গৌরী তরুণার্করক্রিম বসনে শরীর মণ্ডিত করিলেন না, কর্ণে চুতপল্লব এবং অলকে নবকর্ণিকার পরিলেন না ;–তিনি কঠোর মৌঞ্জী মেখলা দ্বারা অঙ্গে বল্কল বাধিলেন এবং ধ্যানাসনে বসিয়া দীর্ঘ অপাঙ্গে কালিমাপাত করিলেন। বসন্তসখা পঞ্চশর মদনকে পয়িত্যাগ করিয়া কঠিন দুঃখকেই তিনি প্রেমের সহায় করিলেন । শকুন্তলাও দিব্য আশ্রমে মদনের মাদকতগ্নিানিকে দুঃখতাপে দগ্ধ করিয়া কল্যাণী তাপসীর বেশে সার্থক প্রেমের প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন।