পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৪৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8లిe যে ত্ৰিলোচন বসন্তপুষ্পাভরণা গৌরীকে একমুহূত্ত্বে প্রত্যাখ্যান করিয়াছিলেন, তিনি দিবসের শশিলেখার দ্যায় কশিত, শ্লথলম্বিত-পিঙ্গলজটাধারিণী তপস্বিনীর নিকট সংশয়ুরহিত সম্পূর্ণহৃদয়ে আপনাকে সমর্পণ করিলেন । লাবণ্যপরাক্রান্ত যৌবনকে পরাকৃত করিয়া পাৰ্ব্বতীর নিরাভরণা মনোময়ী কান্তি অমলা জ্যোতিলেখার মত উদিত হইল । প্রার্থিতকে সে সৌন্দর্য্য বিচলিত করিল না, চরিতার্থ করিয়া দিল । তাহার মধ্যে লজ্জা-আশঙ্কা আঘাত-আলোড়ন রহিল না ; সেই সৌন্দয্যের বন্ধনকে আত্মা আদরে আদরে বরণ করিল, তাহার মধ্যে নিজের পরাজয় অনুভব করিল না । এতদিন পরে—— ধৰ্ম্মেণাপি পদং শব্বে করিতে পাৰ্ব্বতীং প্রতি । পুৰ্ব্বাপরাধভাতস্ত কামস্তেচ্ছ,সতং মনঃ ॥— ধৰ্ম্ম যখন মহাদেবের মনকে পাৰ্ব্বতীর অভিমুখে আকর্ষণ করিলেন,তখন পূৰ্ব্বাপরাধভাত কামের মন আশ্বাসে উচ্ছসিত হইয়া উঠিল । ধৰ্ম্ম যেখানে দুই হৃদয়কে একত্র করে, সেখানে মদনের সহিত কাহারে কোন বিরোধ নাই । সে যখন ধৰ্ম্মের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ বাধাইতে চায়, তখনি বিপ্লব উপস্থিত হয় ; তখনি প্রেমের মধ্যে ধ্রুবত্ব এবং সৌন্দর্য্যের মধ্যে শাস্তি থাকে না । কিন্তু ধৰ্ম্মের অধীনে তাহার যে নির্দিষ্ট স্থান আছে, সেখানে সেও পরিপূর্ণতার একটি অঙ্গস্বরূপ, সেখানে থাকিয় সে স্বযমা ভঙ্গ করে না। কারণ, ধৰ্ম্মের জর্ষ সামঞ্জস্ত ; এই সামঞ্জস্ত সৌন্দৰ্য্যকেও রক্ষা করে, মঙ্গলকেও রক্ষা করে এবং সৌন্দর্য্য ও ৰঙ্গদর্শন । [ পৌষ মঙ্গলকে অভেদ করিয়া উভয়কে একটি আনন্দময়-সম্পূর্ণভা দান করে। সৌন্দৰ্য্য যেখানে ইন্দ্রিয়কে ছাড়াইয়া ভাবেয় মধ্যে গিয়া প্রবেশ করে, সেখানে বাহসৌন্দর্য্যের বিধান তাহাকে আর খাটে না । সেখানে তাহার আর ভূষণের প্রয়োজন কি ? প্রেমের মন্ত্রবলে মন যে সৌন্দৰ্য্য স্বষ্টি করে, তাহাকে বাহসৌন্দর্য্যের নিয়মে বিচার করাই চলে না। টপ্পার সৌন্দর্য্য প্রধানত ইঞ্জিয়ের ভোগ্য, এইজন্ত তাহার অলঙ্কার প্রচুর ; এপদের সৌন্দৰ্য্যভোগে অধিকতর পরিমাণে চিত্তবৃত্তির প্রয়োজন হয়, এইজন্ত তাহার অলঙ্কায় বিরল-– মন তাহাকে নিজের অলঙ্কার দিয়া সাজায়। উচ্চ অঙ্গের সৌন্দর্য্যমাত্রই মনের সহায়তা প্রার্থনা করে, সেই জন্ত বিচিত্র আয়োজন দূর করিয়া সে নিজের মধ্যে মনের বিচরণের সুবিস্তীর্ণ অবকাশ রাখিয়া দেয়। প্রেমের সৌন্দর্য্যে, মঙ্গলের সৌন্দর্য্যে মনেরই অধিকার—এইজন্ত বাহসৌন্দর্য্যের সহায়তাকে সে উপেক্ষ কুরিতে পারে । শিবের ন্যায় তপস্বী গৌরীর দ্যায় কিশোরীর সঙ্গে বাহসৌন্দর্ঘ্যের নিয়মে ঠিক যেন সঙ্গত হইতে পারেন না । শিব নিজেই ছদ্মবেশে সে কথা তপস্তারতা উমাকে জানাইয়াছেন। উমা উত্তর দিয়াছেন, “মমাত্র ভাবৈকরসং মনঃ স্থিতম্” আমায় মন তাহাতেই ভাবৈকল্পস হইয়া অবস্থিতি করিতেছে। এ যে রস, এ ভাবের রস ; সুতরাং ইহাতে আর কথা চলিতে পারে না । মন এখানে বাহিরের উপরে জী—সে নিজের আনন্দকে নিজে স্বষ্টি করিতেছে। শম্ভুঃ একদিন বাহসৌন্দৰ্য্যকে প্রত্যাখ্যান করিয়া