পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৪৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बरुभ-ज१थji । ] । মলিন রবসন, নিয়মচৰ্য্যায় শুদ্ধমুখী, একবেণীধর, বিরহব্ৰতচারিণী, শুদ্ধশীল শকুন্তল৷ প্র:বশ করিলেন । এমন তপস্তার পরে অক্ষয়বরলাভ হইবে না ? সুদীৰ্ঘব্রতচারণে প্রথম সমাগমের গ্লানি দগ্ধ হইয়া পুত্ৰশোভায় পরমভূষিতা যে করুণকল্যাণচ্ছবি জননীমূৰ্ত্তি বিকশিত হইয়া উঠিয়াছে, তাহাকে কে প্রত্যাখ্যান করিবে ? ধূর্জটির মধ্যে গৌরী কোন অভাব— কোন দৈন্য দেখিতে পান নাই, তিনি তাহাকে ভাবের চক্ষুে দেখিয়াছিলেন, সে দৃষ্টিতে ধনরত্ন রূপ-যৌবনের কোন হিসাব ছিল না। শকুন্তলার প্রেম স্ব তীব্র অপমানের পরে ও মিলনকালে দুষ্যস্তের কোন অপরাধই লইল না, দুঃখিনীয় দুই চক্ষু দিয়া কেবল জল পড়িতে লাগিল । যেখানে প্রেম নাই, সেখানে অভাবের, দৈন্তের, কুরূপের সীমা নাই –যেখানে প্রেম নাই, সেখানে পদে পদে অপরাধ। গৌরীর প্রেম যেমন নিজের সৌন্দর্য্যে-সম্পদে সন্ন্যাসীকে সুন্দর ও ঈশ্বর করিয়া দেখিয়াছিল, শকুন্তলার প্রেমও সেইরূপ নিজের মঙ্গলদৃষ্টিতে ছয্যস্তের সমস্ত অপরাধকে দূর করিয়া দেখিয়াছিল। যুবক-যুবতীর মোহমুগ্ধ থেমে এত ক্ষম। কোথায় ? ভরতজননী যেমন পুত্রকে জঠরে ধারণ করিয়াছিলেন, সঞ্ছিতাময়ী ক্ষমাকেও তেমনি শকুন্তল তপোবনে বসিয়া আপনার অন্তরের মধ্যে পরিপূর্ণ করিয়া তুলিয়াছিলেন। বাণক ভরত কুষ্যস্তকে দেখাইয়া জিজ্ঞাসা করিল, “মা, এ কে আমাকে পুত্র বলিতেন্থে" শকুন্তলা উত্তর করিলেন, "বাছ, আপনার ভাগ্যকে জিজ্ঞাসা কর।”—ইহার কুমারসম্ভব ও শকুন্তল । 8ළුව মধ্যে অভিমান ছিল না—ইহার অর্থ এই যে, “যদি ভাগ্য প্রসন্ন হয়, তবে ইহার উত্তর পাইবে”—বলিয় রাজার প্রসন্নতার অপেক্ষ করিয়া রহিলেন। যেই বুঝিলেন, দুষ্যন্ত র্তাহাকে অস্বীকার করিতেছেন না, তখনি নিরভিমান নারী বিগলিত চিত্তকে দুষ্যন্তের চরণে পূজাঞ্জলি দান করিলেন, নিজের ভাগ্য ছাড়া আর কাহারও কোন অপরাধ দেখিতে পাইলেন না। আত্মাভিমানের দ্বারা অন্তকে খণ্ডিত কয়িয়া দেখিলে তাহার দোষ-ত্রুটি বড় হইয়া উঠে—ভাবের দ্বারা, প্রেমের দ্বারা সম্পূর্ণ করিয়া দেখিলে, সে সমস্ত কোথার অদৃশ্য হইয়া যায় ! যেমন শ্লোকের এক চরণ সম্পূর্ণ মিলের জন্ত অন্ত চরণের অপেক্ষা করে, তেমনি ছয্যন্ত-শকুন্তলার প্রথম মিলন সম্পূর্ণতালাভের জন্য এই দ্বিতীয় মিলনের একান্ত আকাজক্ষা রাখে। শকুন্তলার এত ছুঃথকে নিষ্ফল করিয়া শূন্তে দুলাইয়া রাখা যায় না। যজ্ঞের আয়োজনে যদি কেবল অগ্নিই জলে, কিন্তু তfহাতে অন্নপাক না হয়, তবে নিমন্ত্রিতদের কি দশা ঘটে । শকুন্তলার শেষ অঙ্ক, নাটকের বাহরীতি অনুসারে নহে, তদপেক্ষ গভীরতর নিরমের প্রবৃৰ্ত্তনায় উদ্ভূত श्ब्रॉ८छ् । দেখা গেল, কুমারসম্ভব এবং শকুন্তলায় কাব্যের বিষয় একই । উভয় কাব্যেই কবি দেখাইয়াছেন, মোহে যাহা অকৃতার্থ, মঙ্গলে তাহা পরিসমাপ্ত ; দেখাইয়াছেন, ধৰ্ম্ম যে সৌন্দর্য্যকে ধারণ করিয়া রাখে, তাহাই ধ্রুব এবং প্রেমের শাস্তসংষত কল্যাণরূপই শ্রেষ্ঠ রূপ ; বন্ধনেই যথার্থ ঐ এবং উচ্ছৃঙ্খলতায়