পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৪৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবম-সংখ্যা । ] সার সত্যের আলোচনা । 88) তিনি যদি সৰ্ব্বাগ্রে বুদ্ধিকে ধরিতেন, আর তাহার পরে মনকে অৰ্দ্ধপরিস্ফুট বুদ্ধি, এবং প্রাণকে অপরিস্ফুট মন বলিয়া অবধারণ করিতেন, তাছা হইলে তঁtহাকে হাবুডুবু খাইতে হইত না ; কিন্তু তিনি ঠিক তাহার বিপরীত পথ অবলম্বন করিয়াছেন ; তিনি প্রথমেই প্রাণকে এক প্রকার উচ্চ অঙ্গের ঘড়ির কল-রূপে প্রতিপাদন করিয়াছেন ; তাহার পয়ে তিনি মনকে উচ্চ অঙ্গের প্রাণ, এবং বুদ্ধিকে উচ্চ অঙ্গের মন করিয়া দাড় করাইয়াছেন ; কাজেই হাবুডুবু থাইয়াছেন। বড়'দের দৃষ্টান্ত ছোটো’দের উপরে কাজ করে—ইছা খুবই সত্য ; কিন্তু সকল ছোটো’র উপরে সমানতরে। কাজ করে না ; একদল ছোটো’র চক্ষে ধূলিমুষ্টি নিক্ষেপ করে, আয়-এক-দল ছোটো’র চক্ষু ফুটাইয়া তোলে। বড় বড় বিদেশীর দাশনিক পণ্ডিতগণের অনেক গুলা নিছক বলগৰু ষ্টfৰু ( অর্থাৎ গায়ের জোরের কথা ) আমাদের দেশের বিদ্যালরের ৰালকদিগের চক্ষে ধূলিমুষ্টি নিক্ষেপ করে—ইহা আমার দ্যাধা কথা । ক্যাণ্টের কথা ছাড়িয়া দে ও —ক্যান্ট, দৈত্য-কুলের প্রলোদ ! তাহার দ্যায় অকৃত্রিম সত্যানুরাগী দার্শনিক পশুিতের যুক্তিপূর্ণ বিরেশীলিঙ্কে ওজনের বাক্যসকলের সহিত স্পেন্সর, মিল প্রভৃতি পণ্ডিতগণের মসম্বন্ধ প্রলাপোক্তি-সকলকে তুলাইয়। দেখিলে শেষোক্ত পণ্ডিতগণের বিপথগামিতার প্রতি কাহার না চক্ষু ফুটে ? নিতান্ত যে অন্ধ—তাহারও চক্ষু ফুটে। বলিভে কি-ম্পেন্সর প্রভৃতি আধুনিক খ্যাতনামা পণ্ডিজগণ ৰে-পথে চলিয়া ত্ৰাস্তি-কূপে নিমগ্ন হইয়াছেন, আমি ঠিকৃ তাহার বিপরীত পথে চলিয়া সে বিপদ হইতে রক্ষা পাইয়াছি। স্পেন্সর প্রভৃতি পণ্ডিতেরা জড়কে জ্ঞানের ংস্পর্শ হুইতে বিচ্ছিন্ন করিয়া, প্রাণকে একপ্রকায় ঘড়ির কল করিয়া দাড় করাইয়াছেন । আমি তাহা না করিয়া প্রথমেই বুদ্ধিকে আলোচ্য-পদবীতে বরণ করিয়াছি। বুদ্ধির অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের প্রতি প্রণিধান করির দেখিলাম যে, বুদ্ধির ভিতরেই তিনপ্রকার সত্তা একত্র জমাটবদ্ধ রহিয়াছে ;–অব্যক্ত সন্ত গভীরে নিমগ্ন রহিয়াছে ; প্রতিভাসিক সত্তা উপরে উপরে ভাসিয়া বেড়াইতেছে এবং বাস্তবিক সত্তা দুইকে ক্রোড়ে করিয়া বুদ্ধির সম্মুখে উপস্থিত হইতেছে। বুদ্ধির মুখ্য উপজীবিকাই হচ্চে বাস্তবিক সত্তা ; মনের মুখ্য উপজীবিক--প্রতিভাসিক সত্তা; প্রাণের মুখ্য উপজীবিকা—অব্যক্ত সত্তা । এখন দেখিতে হইবে এই যে, প্রাণকে একপ্রকার উচ্চ অঙ্গের ঘড়ির কল বলিলে, তাহার পরিচয়-জ্ঞাপক প্রভেদ-লক্ষণের কিছুই বলা হয় না ; অর্থাৎ আর আর কল হইতে প্রাণের বিশেষত্ব যে কোনখান টিতে, তাহার কিছুই বলা হয় না । স্পেন্সরের দলের পণ্ডিত-বর্গের প্রতি আমার সবিনয় নিবেদন এই যে, প্রাণের সংজ্ঞা-নিৰ্ব্বাচন যদি করিতেই হয়, তবে এইমাত্র বলিয়াই ক্ষান্ত থাকা উচিত যে, জল যেমন তরলীভূত বাস্প এবং বরফ যেমন ঘনীভূত জল ; তেমনি, মন প্রাতিভাসিক বুদ্ধি, এবং প্রাণ অব্যক্ত মন । পূৰ্ব্বে আমি দেখাইয়াছি যে, সৎ শান্তি-প্রধান, চিৎ প্রতিযোগ-প্রধান; এবং আনন্দ সংযোগ