পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৪৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশম-সংখ্যা । ] চোখের বালি। 8°@ মহেন্দ্র কহিল—“বিলক্ষণ ! আমি আরো ও'র কাজে সাহায্য করিতেছিলাম।” রাজলক্ষ্মী কহিলেন—“আমার কপাল ! তুই আবার সাহায্য করিবি ! জান বউ, মহিনের বরাবর ঐ রকম । চিরকাল মাপুড়ির আদর পাইয়া ও যদি কোন কাজ নিজের হাতে করিতে পারে !” এই বলিয়া মাতা পরমস্নেহে কৰ্ম্মে অপটু মহেঞ্জের প্রতি নেত্রপাত করিলেন। কেমন করির এই অকৰ্ম্মণ্য একান্ত-মাতৃস্নেহাপেক্ষী বরস্ক সস্তানটিকে সৰ্ব্বপ্রকার আরামে রাখিতে পরিবেন, বিনোদিনার সহিত রাজলক্ষ্মীর সেই একমাত্র পরামর্শ । এই পুত্রসেবা ব্যাপারে বিনোদিনীর প্রতি নির্ভর করিয়া তিনি নিতান্ত নিশ্চিন্ত, পরম মুখী। সম্প্রতি বিনোদিনীর মর্য্যাদা যে মহেন্দ্র বুঝিয়াছে, এবং বিনোদিনীকে রাখিবার জন্ত তাহার যত্ন হইয়াছে, ইহাতেও রাজলক্ষ্মী আনন্দিত । মহেন্দ্রকে শুনাইয়া শুনাইয়া তিনি কহিলেন, “বউ, আজ ত তুমি মহিনের গরম কাপড় রোদে দিয়া তুলিলে, কাল মহিনের নূতন রুমালগুলিতে উহার নামের অক্ষর শেলাই করিয়া দিতে হুইবে । তোমাকে এখানে আনির অবধি যত্ন-আদর করিতে পারিলাম না বাছ, কেবল খাটাইয়া মারিলাম !” বিনোদিনী কহিল, “পিসিম, অমন করিয়া যদি বল, ওবে বুঝিব, তুমি আমাকে পর ভাবিতেছ।” রাজলক্ষ্মী আদর করিয়া কহিলেন— "শাহ মা, তোমার মত আপন আমি পাব কোথায়ু । বিনোদিনীর কাপড়-তোলা শেষ হইলে রাজলক্ষ্মী কহিলেন—“এখন কি তবে সেই চিনির রসটা চড়াইয়া দিব, না, এখন তোমার অন্য কাজ আছে !” বিনোদিনী কহিল—“না পিসিম, অন্য কাজ আর কই ? চল, মিঠাইগুলি তৈরি করিয়া আসি গে : মহেন্দ্র কহিল—“মা, এইমাত্র অনুতাপ করিতেছিলে উহাকে খাটাইয়া মারিতেছ, আবার এখনি কাজে টানিয়া লইরা চলিলে ?” রাজলক্ষ্মী বিনোদিনীর চিবুক স্পর্শ করিয়া কহিলেন, “আমাদের লক্ষ্মী মেরে যে কাজ করিতেই ভালবাসে !” মহেন্দ্র কহিল—“আজ সন্ধ্যাবেলার আমার হাতে কোন কাজ নাই, ভাবিরাছিলাম বালিকে লইয়। একটা বই পড়িৰ ו" বিনোদিনী কহিল—“পিসিমা, বেশ ত, আজ সন্ধ্যাবেলা আমরা দুজনেই ঠাকুরপোর বই-পড়া শুনিতে আসিব—কি বল ?" রাজলক্ষ্মী তাবিলেন,"মহিন্‌ আমার নিতান্ত । একলা পড়িয়াছে, এখন সকলে মিলির उाशंएक छूलाहेब्रा ब्राथी आबशक ”কহিলেন—“তা বেশ ত, মহিনের খাবারতৈরি শেষ করিয়া আমরা আজ , সন্ধ্যাবেলা পড়া শুনিতে আসিব । কি বলিস মহিন্‌ ?” বিনোদিনী মহেঞ্জের মুখের দিকে কটাক্ষপাত করিয়া একবার দেখির লইল । মহেন্দ্ৰ কহিল—“আচ্ছা!” কিন্তু তাহার আর উৎসাহ রহিল না। বিনোদিনী রাজলক্ষ্মীর সঙ্গে সঙ্গেই বাহির হইরা গেল । মহেন্দ্র রাগ করিয়া ভাবিল, “আমিও