পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৪৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ማ\» বঙ্গদর্শন । [ भांश । অবশেষে একজনকে তিনি নিযুক্ত করিতে পারিয়াছিলেন, কিন্তু ভাষাতত্ত্বসম্বন্ধে উপদেশদানে স্বীকৃত হইলেও তিনি হিন্দু ধৰ্ম্ম-সম্বন্ধে একটি বর্ণও সাহেবকে বলিতে স্বীকার করেন নাই । হালহেড বাংলাভাষাকে পাশী হইতে অনেক পরিমাণে বিষমকৰ্ম্মের উপযোগি-ভাষা বলিয়া প্রশংসা করিয়াছেন—উচ্চ পাশীর মত বৃথা কথার বাহুল্যে পল্লবিত হয় না,—বাংলা স্পষ্ট ও সহজে বোধগম্য ভাষা, বৈষয়িক ব্যাপারের জন্ত এই বাহুল্যবর্জিত নিরাভরণ ভাষা উৎকৃষ্টরূপু উপযোগী । তিনি লিখিয়াছেন, ইংরেজী অপেক্ষ। বাংলা বর্ণমালা বৈজ্ঞানিক প্রণালীতে সন্নিবিষ্ট এবং শিক্ষার পক্ষে সহজ। এ কথ। কিছু নুতন নহে; ক, খ, গ, ঘ,–‘স,-ঋ, গ, ম’এর দ্যায় কণ্ঠস্বরের ক্রমিক-পরিণতি-জ্ঞাপক । ইংরেজী ‘এ, বি, সি, ডি'র ন্যার উচ্ছ,স্থলভাবে সন্নিবদ্ধ নহে । ইহাতে বাঙালীর গৌরব করিবার কিছুই নাই ; যে অসাধারণ ভাষাতত্ত্ববিৎ পণ্ডিতগণ সংস্কৃত-ব্যাকরণকে অপূৰ্ব্ব বৈজ্ঞানিক প্রণালীতে গঠিত করিয়াছিলেন, বর্ণমালার এই পর্য্যায়বিভাগ ও তাছাদেরই কার্য্য । হালহেডের ব্যাকরণের প্রথম অধ্যায়ে বাংলা মহাভায়তের দ্ৰোণপৰ্ব্ব হইতে অনেকাংশ উদ্ধত করা হইয়াছে, সেই সকল অংশ কি ভাবে উচ্চারণ করিয়া পড়িতে হইবে, তাহা ইংরেজীভাষায় প্রদর্শিত হইয়াছে এবং সঙ্গে সঙ্গে একটি ইংরেজী অনুবাদ প্রদত্ত হইয়াছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে শাসকলের লিঙ্গনির্ণয়ের চেষ্টা করা হইয়াছে, কিন্তু পুংলিঙ্গ “শান্তিপুরী”শব্দের স্ত্রীলিঙ্গ “শান্তিপুরিণী” একটুকু অদ্ভুত রকমের। এইরূপ আরও আছে—এই সকল শব্দ কি পূৰ্ব্বে এই ভাবেই রূপান্তরিত হইত অথৰ উহা সাহেবমহাশয়ের অনভিজ্ঞতার ফল, বলিতে পারা গেল না । তৎপরের অধ্যায়টি বিভক্তিসম্বন্ধীয়। সাহেব লিখিয়াছেন—“এ” বর্ণটি অনেকসময় প্রথম, দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, পঞ্চমী এবং সপ্তমী, এই পাচ কারকেরই চিত্ত্বরূপে ব্যবহৃত দৃষ্ট হয়। প্রথমায় যথা —“আমি যদি সেনাপতি হইব সমরে । তবে অস্ত্ৰ ন ধরিধে কৰ্ণ মহাবীরে ॥” দ্বিতায়ায় যথা—“যুধিষ্ঠিরে ধরে দেহ ।” তৃতীয়fয়—“বাণে কাটিলেক সৈন্ত ।” পঞ্চমী ও সপ্তমীতে—“এক ত শ্রাবণ মাসে ধারা বরিষে গগনে”—এস্থলে “মাসে’ সপ্তমী এবং “গগনে” পঞ্চমী বিভক্তির প্রয়োগ করা হইয়াছে। বিভক্তিসম্বন্ধে অন্তান্ত মন্তব্যের কোন নূতনত্ব নাই। তৎপরে শব্দের বচন নির্ণীত হইয়াছে । সাহেব মনে করেন, বহুবচনবাচক দিগ’শব্দ সংস্কৃতের দিকৃ’শব্দ হইতে উদ্ভূত। ইহার পরে সর্বনামশব্দ-বিচার । ক্রিয়াবাচক শব্দগুলি সম্বন্ধে গ্রন্থকার এক অদ্ভুত তালিক। প্রদান করিয়াছেন ;–কর্তৃকারকের একবচনের উত্তর “করিস” এবং বহুবচনের উত্তর “কর” এই ক্রিরার প্রয়োগ হয়, ষণ, “তুমি করিস”— “তোমরা কর”, “তুমি করিবি”—এবং “তোমরা করিবা’ । এষ্ট ভাবের বহুসংখ্যক উদাহরণ প্রদত্ত হইয়াছে। পরবর্তী অধ্যায়গুলিতে ক্রিয়াবিশেষণ এবং পাটীগণিতের কথা আছে,—সংখ্যা ও পরিমাণ বোধক