পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৫০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

प्रश्नभ-नश्थो । ] চিন্তা করিয়া কষ্ট পাইতে হয় নাই । এইখানে জাগ্রৎকালের বাস্তবিক সত্তা এবং স্বপ্নের প্রাতিভাসিক সত্তা, দুয়ের প্রভেদ স্পষ্ট ধরা পড়িতেছে । বাস্তবিক সত্তার রাজ্যে বস্তুসকলের সংবোগের ব্যবস্থা অতীব সুনির্দিষ্ট ; ভারতবর্ষ হইতে ইংলণ্ডে ঘাইবার পথ অতীব সুনিদিষ্ট ; পৃথিবী হইতে স্বৰ্য্য-চন্দ্র-তারকা প্রভৃতি জ্যোতিষ্ক পদার্থসকলের দূরত্ব অতীব সুনিদিষ্ট ; কাৰ্য্য-কারণের পারম্পর্য্য-শৃঙ্খলা অতীব স্বনিদিষ্ট ; সহযোগ বস্তুসকলের পরম্পরের সহিত পরস্পরের বাধ্যবাধকতা অতীব সুনির্দিষ্ট । পক্ষা স্তরে, স্বপ্নের প্রাতিভাসিক রাজ্যে দেশকালঘট ঠ দূরত্ব-নিকটত্বের ও কোনো ঠিকানা নাই --দিক্‌বিদিকের ও কোনো ঠিকান নাই--কায্য কারণের যোগাযোগ্যতার ও কোনো ঠিকানা নাই ; স্বপ্নের প্রতিভাসিক রাজ্যে সবই সব-স্থানে সম্ভবে –পঙ্গুকর্তৃক গিরিলঙ্ঘন সম্ভবে, মরুভূমিতে উৎসের উংসারণ সম্ভবে ; সব-কুৰ্য্যট সব-কারণে সম্ভবে ; জোনাকপোকার মশালে অরণ্য প্রজ্বলিকে উঠিতে পারে, ভেক হস্তীকে গিলিয়া খাটতে পারে । অতএব এটা স্থির যে, যে-রাজ্যে দিক্‌-বিদিকের ঠিকানা আছে, যে রাজ্যে ভিন্ন ভিন্ন বস্তুর মধ্যে দেশের ব্যবধান স্বনির্দিষ্ট ; যে-রাজ্যে প্রত্যেক বস্তুর ভিন্ন ভিন্ন অবস্থার মধ্যে কালের ব্যবধান স্বনিদিষ্ট ; যে-য়াজ্যে কাৰ্য্য-কণরণ প্রবাহের পারম্পর্য্য-ব্যবস্থা সুনির্দিষ্ট ; যে-রাজ্যে বিভিন্ন বস্তসকলের পরস্পর বাধ্যবাধকতা মনির্দিষ্ট ; সেই রাজ্যই বাস্তবিক সত্তার ইজ্যি ও আর, সেই বাস্তবিক সত্তার রাজ্যই হইয়৷ সার সত্যের মালোচন । 8ᏑᏄ বুদ্ধির বিচরণ-ভূমি । বিচরণ-ভূমি এবং বিচার-ভূমি—এই দুই শব্দের একই অর্থ। ঐ যে বাস্তবিক সত্ত—যাহা বুদ্ধির বিচারভূমি—তাহ একই অদ্বিতীয় সত্যের বিশ্বব্যাপী বন্ধন-স্বত্র। দ্ব্যলোকে, ভূলোকে, অন্তরাক্ষে, যেখানে যত কিছু বস্তু আছে, সমস্তই ঐ একই বন্ধন-স্বত্রের টানে পরস্পরের সহিত যোগে বিধৃত রহিয়াছে। পান্থশালার গৃহস্বামীর মনোমধ্যে যেমন—পান্থশালায় কোথায় কোন ঘর, কোথায় কোন পথ, কোথায় কোন কাৰ্য্যশালা, সমস্তই নথদর্পণে প্রতিবিম্বিত রহিয়াছে ; এক অদ্বিতীয় সত্যে সেইরূপ সমস্ত বস্তুর সংযোগ-ব্যবস্থা নখদর্পণে প্রতিবিম্বিত রহিয়াছে ; সে সংযোগব্যবস্থা যৎপরোনাস্তি সুনির্দিষ্ট এবং পরিপাটী ; তাই নিয়তির রন্ধন ; তাহার, একচুলও এদিকৃ-ওদিক্ হইবার নহে । শাস্ত্রে যে বলে—“বুদ্ধি নিশ্চয়াত্মিক মনোবৃত্তি”, তাহার অর্থই ঐ । নিশ্চয়াত্মিক-শব্দের অর্থই হচ্চে-বাস্তবিক-সত্তা-মূলক সংযোগ-ব্যবস্থার নিশ্চয়াকরণ যাহার মুখ্যতম কার্য্য । বুদ্ধি যখন নিশ্চয় করে যে, ইহা স্মৃত্তিকা, ইহা জল, ইহা বায়ু ইত্যাদি, তখন প্রত্যেক নিশ্চয়ক্রিয়ার সঙ্গে এই একটি মৌলিক নিশ্চয়-ক্রিরা জোড়া-লাগানে থাকে যে, ইহু। বাস্তবিক পদাৰ্থ । অতএব এটা স্থির যে, সত্য-নিশ্চয়ই গোড়া'র নিশ্চর, পরম নিশ্চয়, এবং চরম নিশ্চয় । পুনশ্চ, শাস্ত্রে বলে যে, মন সংকল্পবিকল্লাত্মক। সংকল্প-বিকল্প কি ? না, কল্পনাবিকল্পনা । ভাবনা-বিভাবনাও তাহারই নামান্তর। বর্তমান প্রবন্ধের গোড়া’তেই বলিরাছি যে, ভাবন-শত্ব ভূধাতু হইতে