পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৫১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

83b* বঙ্গদর্শন । [ মাঘ । হিন্দুত্ব দুইভাগে বিভক্ত —ধৰ্ম্ম এবং জ্ঞান । ধৰ্ম্ম ব্যাবহারিক । ইহা বিধিনিষেধব্যবস্থাপক। জ্ঞান পারমার্থিক । ইহা চিরপয়িনিষ্ঠিত নিত্যবস্তুর পরিচায়ক। বেদ ও সংহিতা ধৰ্ম্মের আধার। বেদান্ত জ্ঞানের ভাণ্ডার । ধৰ্ম্ম জ্ঞানবিরহিত হইলে সমাজ ক্ষীণপ্রাণ ও অধোগামী হয় ; বাহাড়ম্বর ভাবকে মারিয়া ফেলে ; স্থল স্থক্ষ্মের উপর আধিপত্য করে ; জড়প্রকৃতি চিদাত্মাকে পদদলিত করে । দুৰ্দ্দমকাল প্রভাবে ব্রাহ্মণ্যধৰ্ম্মের জ্ঞানচ্যুতি ঘটয়াছিল যাগবজ্ঞ, ক্রিয়াকলাপ উদ্দেগুবিহীন হইয়াছিল । জ্ঞানের আদশ-কৰ্ম্মফল ত্যাগ করিয়া কৰ্ম্ম করা—যাহাতে কৰ্ম্মের বন্ধন ঘুচিয়া যায়। এই মহান আদর্শে ख्न ७ কৰ্ম্মের সমন্বয় হয় . কিন্তু এই আদশভ্রষ্ট হইলে কৰ্ম্মচক্রের পেষণে পিষ্ট হইতে হয় ফলসম্ভোগ ও হয় না, মোক্ষলাভ ও হয় না । বুদ্ধের আবিভাবের অনতিপূৰ্ব্বে • হিন্দুসপ্তানের পুত্র, बिख ४ ऋर्शन 4बनाय्ड भूझ इङ्गेश মোক্ষবিমুখ হইয়াছিল। পরমার্থবিয়োজিত রসবিবর্জিত সকামবেদবাদরতি তাহাদিগকে তেজোহীন করিয়াছিল। এই হীনতার কারণ কি ? য়ুরোপায়ের বলিবেন— ব্রাহ্মণ্যধৰ্ম্ম । যত দোব নন্দঘোষ । অন্ধকারে ঢ়িল মারিলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হইতে হয় । যে অাদর্শের কথা উপরে বলা হইয়াছে, তাহা অনিন্দনার । ধীরে ধারে নিঃশব্দে প্রবৃত্তিয় বহ্লিকে নিৰ্ব্বাপিত করিয়া অদ্বৈতশাস্তিসাগরে দ্বৈতকে নিঃশেষ করাই সমগ্র ব্রাহ্মণ্যধৰ্ম্মের উদ্দেশু। যদি লক্ষ্য এত বড়, তবে লোকে ইহা ছাড়ে কেন ? অবিদ্যাপ্রস্তুত কৰ্ম্মনিয়ন্ত্রিত কালকে জিজ্ঞাসা কর । এই প্রপঞ্চবহুল ভবে স্থিতির ভঙ্গ আছেই আছে। সংসারে থাকিয়া কালকে এড়াইয়। কতদিন থাকা যায়। যত বড়ই সমাজ হউক ন। কেন, কালবশে তাহ নিস্তেজ অথবা বিনাশপ্রাপ্ত হইবেই হইবে । আৰ্য্যসস্তানের সহস্ৰ সহস্ৰ বৎসর ধরিয়া কালের তরঙ্গকে তুচ্ছ করিয়া অনন্তের দিকে অগ্রসর হইয়ছিল । এই উদ্যমের অবসাদ অবশ্যম্ভাবী। পাশ্চাত্য পণ্ডিতেরা বলেন যে, হিন্দুর কৰ্ম্মবিমুখ বলিয়া অধঃপতি ত হইয়াক্টিল । হিন্দুর কৰ্ম্মবিমুখ নহে, কিন্তু কৰ্ম্মফলবিমুখ । তাহার কৰ্ম্মকে ভালবাসে, কিন্তু কৰ্ম্মসঞ্চিত ঐশ্বৰ্য্যকে পরিবজ্জন করে। কোন দেশে বিশাম্পতি চক্রবন্তী রাজ রাজভোগ ত্যাগ করিয়া বাদ্ধক্যে ভিক্ষুব্রত অবলম্বন করিতেন ? কৰ্ম্মক্ষেত্রে যুদ্ধ করিয়া ক্ষতবিক্ষত হুইয়া যাই জয়লাভ হই ত, বিত্ত সঞ্চিত হইত, বিন সংসারচেষ্টায় ফলভোগের সময় আসি ত, অমনি সৰ্ব্বস্ব ত্যাগ করিয়া আর্য্যগৃহস্থ বনে প্রয়াণ করিত, এই ত যথার্থ কৰ্ম্মাণ্ডুরাগ । কোন ব্রাহ্মণ , বা ক্ষত্ৰিয় যদি স্বধৰ্ম্মানুমোদিত কৰ্ম্ম ত্যাগ করিয়া পিতৃপিতামহাগত ঐশ্বৰ্য্যের উপর আপনার সন্মান প্রতিষ্ঠিত করিতে যাইত, তাহা হইলে সেই কাপুরুষ লাঞ্ছিত ও পরিত্যক্ত হইত। অন্যান্ত দেশে সামাজিক প্রতিষ্ঠা কৰ্ম্মগত সঞ্চয়ের উপর নির্ভর . করে। কিন্তু আৰ্য্যাবৰ্ত্তে কৰ্ম্মের উপরে পদমর্য্যাদা আলম্বিত ছিল। এ কথা সত্য বটে যে, ফলকামনা ত্যাগ করিলে উদ্যমের উষ্ণতা কমিয়া বায়। স্বহৈ৷