পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>W* দিতে এই আমার শপথ রহিল ! নিৰ্দ্ধারিত দিনে মহেন্দ্র কলেজ হইতে ফিরিয়া আসিয়া মাকে কহিল—আমার সেই রেশমের জাম এবং ঢাকাই সাড়িটা বাহির कब्रिग्नां मांs ! মা কহিলেন, কেন, কোথায় যাবি ? মহেন্দ্ৰ কহিল, দরকার আছে মা, তুমি দাওনা, আমি পরে বলিব। মহেন্দ্র একটু সাজ না করিয়া থাকিতে পারিল না। পরের জন্ত হইলেও কন্ত। দেখিবার প্রসঙ্গ মাত্রেই যেীবনধৰ্ম্ম আপনি চুলটা একটু ফিরাইয়া লয়, চাদরে কিছু গন্ধ ঢালে । দুই বন্ধু কন্যা দেখিতে বাহির হইল । কস্তার জ্যাঠা স্যামবাজারের অমুকুল বাৰু। নিজের উপার্জিত ধনের দ্বারায় র্তাহায় বাগানসমেত তিনতলা বাড়ীটাকে পাড়ার মাথার উপর তুলিয়াছেন। দরিদ্র ভ্রাতার মৃত্যুর পর পিতৃমাতৃহীন ভ্রাতপুত্রীকে তিনি নিজের বাড়ীতে আনিয়া রাখিয়াছিলেন। মাসী অন্নপূর্ণ বলিয়াছিলেন, আমার কাছে থাক্ । —তাহাতে ব্যয়লাঘবের সুবিধা ছিল বটে কিন্তু গৌরবলাঘবের ভয়ে অনুকুল রাজি হইলেন না। এমন কি, দেখাসাক্ষাৎ করিবার জন্তও কন্যাকে কখনো মাসীর বাড়ী পাঠাইতেন না,. নিজেদের মৰ্য্যাদাসম্বন্ধে তিনি এতই কড়া ছিলেন । কস্তাটির বিবাহভাবনার সময় আসিল । কিন্তু আজকালকার দিনে কন্যার বিবাহ সম্বন্ধে "যাদৃশী ভাবনা যন্ত সিদ্ধিৰ্ভবতি তাদৃশী” পরিবে না চোখের বালি কথাটা থাটে না । ভাবনার সঙ্গে খরচ ও চাই । কিন্তু পণের কথা উঠিলেই অবিনাশ বলেন, আমার ত নিজের মেয়ে আছে, আমি এক আর কত পারিয়া উঠিব। এমনি করিয়া দিন বহিয়া যfষ্টতেছিল । এমন সময় সাজিয়া গুজিয়া গন্ধ মাখিয়া রঙ্গভূমিতে ঘন্ধুকে লইয়া মeেন্দ্র প্রবেশ করিলেন । তখন চৈত্র মাসের দিবসান্তে স্বৰ্য্য অস্তেমুখ। দোতলার দক্ষিণ বারান্দায় চিত্রিত চিক্কণ চীনের টালি গাথা ; তাহারি প্রাস্তে দুই অভাগতের জন্ত রূপার রেকবি ফলমূল মিষ্টাগ্নে শোভমান এবং বরফজলপূর্ণ রূপার গ্লাস শীতল শিশিরবিন্দুজালে মণ্ডিত । মহেন্দ্র বিহারীকে লইয়া আলজ্জিত ভাবে থাইতে বসিয়াছেন । নীচে " বাগানে মালী তখন ঝারীতে করিয়া গাছে গাছে জল দিতে ছিল ; সেই সিক্ত মৃত্তিকার স্নিগ্ধ গন্ধ বহন করিয়া চৈত্রর দক্ষিণবাতাস মহেন্দ্রের শুভ্র কুঞ্চিত সুবলিত চাদরের প্রাস্তকে দুৰ্দ্দাম করিয়া তুলিতেছিল । আশপাশের দ্বার জানালার ছিদ্রান্তরাল হইতে একটু আধটু চাপ। হাসি, ফিস ফিস কথা, ফুট। একটা গহনার টুং টাং যেন শুনা যায়। আহারের পর অমুকুল বাবু ভিতরের দিকে চাহিয়া কহিলেন- চুনি, পান নিয়ে অায় ত রে ? কিছুক্ষণ পরে সঙ্কোচের ভাবে পশ্চাতের একটা দরজা খুলিয়া গেল এবং একটি বালিক। কোথা হইতে সৰ্ব্বাঙ্গে রাজ্যের লজ্জা জড়াইয়া আনিয়া পানের বাটা হাতে অমুকুলবাবুর কাছে আসিয়া দাড়াইল । তিনি কহিলেন, লজ্জা কি মা ! বাটা ঐ ওদের সামনে রাখ ।