পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>ew' - दछल्लभर्नेि । [ ৬ষ্ঠ বর্ষ, অষিাঢ় । ধর্মের বন্ধন অত্যন্ত দৃঢ়, স্বীকার করি ; বিসর্জন করিতে কিঞ্চিম্মাত্রও কুষ্ঠিত কিন্তু ধৰ্ম্মবন্ধনের এ দৃঢ়তা কোথা হইতে হয় না। C উৎপন্ন হয়, লোকে এ বিচার করে না। যেখানে ধৰ্ম্ম কেবলমাত্র একটা মানসিক ব্যাপার-কতিপয় আন্তরিক ভাবাদিতেই আবদ্ধ,—সেখানে ধৰ্ম্মের বন্ধনে নেশন গড়িয়া উঠে না, আজ পর্য্যন্ত কোথাও গড়িয়া উঠে নাই। পঞ্চনদে ও সিন্ধুদেশে মোহহ্মদীয় স্বফিধৰ্ম্মের বিলক্ষণ প্রাচুর্ভাব দৃষ্ট হয়। কিন্তু এই হফিসাধনায় কাহাকেও কোনোপ্রকারের সমাজবন্ধনে আবদ্ধ করে না। হিন্দুসমাজে অনেক সুফি আছেন,কেহ কেহ আপনাদিগের সাধনমণ্ডলীমধ্যে গুরুর পদে পৰ্য্যন্ত প্রতিষ্ঠিত হইয়াছেন ; হিন্দুস্থফির মোসলমান-শিষ্য পৰ্য্যস্ত আছে। এখানে সুফিধৰ্ম্ম কেবলমাত্র একটা মানসিক সাধন বলিয়, সামাজিক ঐক্যবন্ধনের কোনোই বিশেষ সাহায্য করিতে পারে নাই। খৃষ্টীয়ানন্ধৰ্ম্মেও সেইরূপ কোথাও নেশন গড়িয়া তোলে নাই। ইসলামে ধৰ্ম্মত এক হইয়াও, নেশনত্ববিষয়ে, পরম্পরবিরোধী অনেক জাতি বহুকালাবধিই এই পৃথিবীতে বিদ্যমান রহিয়াছে। ফলত ধৰ্ম্মের বন্ধনের দৃঢ়তা কেবল ধৰ্ম্মে নহে, কিন্তু ধৰ্ম্মের সঙ্গে, ধৰ্ম্মের মধ্যে, সৰ্ব্বত্রই মানবের যে সকল সামজিক, সাংসারিক ও রাষ্ট্রসম্বন্ধীয় স্বার্থ ও মুখামুসন্ধান জড়িত ও নিহিত থাকে, তাহাতে। এ সকল স্বার্থসন্ধান হইতেই ধৰ্ম্মবন্ধনের অসাধারণ শক্তি ও দৃঢ়তা উৎপ হঁয় থাকে। যেখানে ইহলোকে স্বার্থ ক্ষীণ, সেখানেও ধৰ্ম্মে পারলৌকিক স্বাৰ্থ জড়িত হইয়া থাকে। সেই স্বার্থের জন্তই , লোকে ধৰ্ম্মার্থে প্রাণ মোহহ্মদের এবং তাহার অব্যবহিত নিকটবর্তী শিষ্যগণের বিষয়ে বীতস্পৃহা জগতে - বৈরাগ্যের অত্যন্থত দৃষ্টান্ত প্রদর্শন করিয়াছে, সত্য ; কিন্তু যে শক্তিসহায়ে ইস্লা আপনার জয়পতাকা অৰ্দ্ধপৃথিবী জুড়িয়া উড়াইতে পারিয়াছিল, সে শক্তি যে মোহহ্মদীয় সম্প্রদায়ের সাংসাত্রিক স্বার্থ ও মুখলিঙ্কার দ্বারাই পরিপুষ্ট হইয়াছিল, ইহা অস্বীকার করা অসম্ভব। খৃষ্টীয়ুধৰ্ম্মের যে শক্তি যুরোপকে অভিভূত করিয়াছিল, তাহাও কদাপি শুদ্ধ পরমার্থের উপরে প্রতিষ্ঠিত হয় নাই, কিন্তু লৌকিক ও সাংসারিক স্বার্থ ও সুখসন্ধানের দ্বারাই চিরদিন পরিপুষ্ট হইয়াছে। এইরূপ যেখানেই রাষ্ট্রীয়ব্যাপারে বা নেশনপ্রতিষ্ঠায় ধর্মের শক্তি প্রকাশিত হইয়াছে, সেইখানেই স্বক্ষামুস্তক্ষ বিচার ও - বিশ্লেষণে তাহার মুলে ধৰ্ম্মমত, ধৰ্ম্মবিশ্বাস বা ধৰ্ম্মভাব অপেক্ষ সাংসারিক ও লৌকিক সুখস্বার্থের সন্ধানই প্রবলতর ছিল বলিয়া প্রমাণিত হইবে। এই সকল মুখ ও স্বার্থের বন্ধন যেখানে থাকে, সেখানে যখনই ধৰ্ম্মবিরোধ এই সুখস্বার্থের ব্যাঘাত উৎপাদন করিবে, তখনই তাহা আপনা হইতে প্রশমিত ও নিরস্ত হইয়া যাইবে । . . এই ভারতবর্ষেই হিন্দু ও মুসলমানে এরূপ মিল হইয়াছে। মোগলসাম্রাজ্যের অস্তিমদশায় বঙ্গে ও মহারাষ্ট্রে হিন্দুমুসলমানের বিরোধ জাগিয়া, কখনো শুদ্ধ ধর্মের খাতিরে, রাষ্ট্রয় , ব্যাপারে কোনো উৎপাত উপস্থিত করে নাই।. পৰ্য্যস্ত বাংলার বার ভূইয়াদের মধ্যে হিন্দুও ছিলেন,