পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় সংখ্যা 1 J শুভবিবাহ। (אצצ পুরিকাগণ যে লেখিকার বানানো, এ কথা আমরা কোনো জায়গাতেই মনে করিতে পারি নাই। তাহারাই দেদীপ্যমান সত্য এবং লেখিকা উপলক্ষ্যমাত্র । এই বইখানির মধ্যে সামান্ত একটুখানিমাত্র গল্প আছে, এবং নায়কনায়িকার উপসর্গ একেবারেই নাই। অথচ প্রথম থানত্রিশেক পাতা পড়া হইয়া গেলেই মনের ঔৎসুক্য শেষছত্র পর্যন্ত সমান সূড়াগ হইয়া থাকে। অথচ সমস্ত গ্রন্থে কলাকৌশল বা ভাষার ছটা একেবারেই নাই—কেবল জীবন এবং সত্য আছে। যাহ-কিছু আছে, সমস্তই সহজেই প্রত্যক্ষ এবং অনায়াসেই প্রত্যয়যোগ্য । গ্রন্থে বর্ণিত নারীগুলিকে অসামান্তভাবে চিত্র করিবার চেষ্টামাত্র করা হয় নাই- অথচ তাহাদের চরিত্রে আমাদের মনকে পাইয় বসিয়াছে, তাহাদের মুখদুঃখে আমরা কিছুমাত্র উদাসীন নই। যিনি ঘরের গৃহিণী, এই গ্রন্থের যিনি “দিদি”—তিনি মোটাসোটা, সাদাসিধা, প্রৌঢ় স্ত্রীলোক, ছেলের উপার্জিত নুতনলব্ধ ঐশ্বৰ্য্যে অহঙ্কত ; অথচ তাহার অন্তঃকরণে যে স্বাভাবিক স্নেহরস সঞ্চিত আছে, তাহা বিকৃত হইতে পায় নাই ; তিনি উপরে ধনিঘরের কত্রী, কিন্তু ভিতরে সরলহদয় সহজ স্ত্রীলোক । র্তাহার বিধবা কন্যা “রাণী” কল্যাণের প্রতিমা । অথচ ইহার চিত্রে পচেষ্টভাবে বেশি করিয়া রং ফলাইবার প্রয়াস কোনো জায়গাতেই দেখা যায় না। অতি সহজেই ইনি ইহার স্থান লই আছেন। নিতান্ত সামান্ত ব্যাপারের মধ্যেই ইনি আপনার অসামান্ততাকে পরিস্ফুট করিয়া তুলিয়াছেন। লেখিকা ইহাকে আমা-; দৈর সন্মুখে খাড়া করিয়া দিয়া বাহবা লইবার জন্ত কোথাও আমাদের মুখের দিকে তাকান নাই। আর ঘুেই “পিসুিম”-অনাথ, সন্তানহীন,–জনশূন্ত বৃহৎঘরে অনাবগুক' ঐশ্বর্য্যের মধ্যে শুামসুন্দরের বিগ্রহটিকে লইয়া যিনি নারীহৃদয়ের সমস্ত অতৃপ্ত আকাজক প্রশান্ত ধৈৰ্য্যের সহিত মিটাইভেছেন, তাহার চরিত্রে শুভ্ৰ পবিত্রতার সহিত"স্নিগ্ধ করুণার, বঞ্চিত স্নেহবৃত্তির সহিত সংযত নিষ্ঠার সুন্দর সমবায় যেন অনায়াসে ফুটিয়া উঠিয়াছে। হঠাৎ পিতৃহীন ভ্রাতুপুত্রটিকে কাছে পাইয়ু যখন এই তপস্বিনীর স্ত্রীপ্রকৃতি সুধারসে উচ্ছসিত হইয়া তাহাঁর দেবসেবার নিত্যকৰ্ম্মকেও যেন ক্ষণকালের জন্য ভুলিয়া গেল, তখন আন্তরিক অশ্রুজলে পাঠকের হৃদয় যেন মুস্নিগ্ধ হইয়া যায়। রোমাটিক্‌ উপন্তাস বাংলাসাহিত্যে আছে, কিন্তু বাস্তবচিত্রের অত্যন্ত অভাব। এজন্যও এই গ্রন্থকে আমরা সাহিত্যের একটি বিশেষ লাভ বলিয়া গণ্য করিলাম। যুরোপীয় সাহিত্যে কোথাও কোথাও দেখিতে পাই, মানবচরিত্রের দীনতা ও জঘন্ততুকেই বাস্তবিকতা বলিয়া স্থির করা হইয়াছে। আমাদের আলোচ্য বাংলা গ্রন্থটিতে পন্ধিলতার নামগন্ধমাত্র নাই, অথচ বইটির অগাগোড়ায় এমন কিছু নাই, যাহা সাধারণ নহে,স্বাভাবিক নহে, বাস্তব নহে । © বইয়ের মধ্যে যে ছটিএকটি ক্রট আমাদের চোখে পড়িয়াছে, তাহাতে আমরা আশ্চৰ্য্য হইয়াছি। আশ্চৰ্য্য হইবার কারণ এই যে, মোটের উপর সমস্তু বইয়ের মধ্যে বানাইবার কোনো প্রয়াস দেখা ধায় না,“এইজন্ত তাহার ব্যতিক্রম যদি কোথাও ঘটয়া থাকে, তবে G আঘাত করে। বিন্দিদাসীর ভাষা লেখিকা