পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় সংখ্যা । ] প্রয়োজন নাই যে,ঐ দুই মহাপুরুষের ( মহাত্মা রাজা রামমোহন রায় ও মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের) অনুবৰ্ত্তীর ধৰ্ম্মতত্বের অনুসন্ধানের জন্ত বিদেশে যাত্রা আবশুক বোধ করিয়াছিলেন এবং অন্ধু দেশের অন্য জাতির শাস্ত্র হইতে সাৰ্ব্বভৌমিক ধৰ্ম্মের সারসঙ্কলনে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন।” রামেন্দ্রবাবুর মত লোকের লেখনী হইতে ঐ দুই মহাপুরুষের সম্বন্ধে এই অতি “অনাবশ্বক” ঐতিহাসিক অবিচারটুকু কেন ? মহর্ষি অবশু কখন পশ্চিমসাগরে তাহার প্রিয় “বোটু”কে ভাসান নাই ; কিন্তু পূৰ্ব্বসাগরে তাহ খেয়া দিয়াছিল ; এবং তাহার নিজের মুখ হইতে চীন, বৌদ্ধ, শিখেদের কথা যে শুনিয়াছে, সে কি কোনদিন তাহা ভুলিবে ? আর, রাজা রামমোহন রায় সম্বন্ধে কি বিশেষ করিয়া কিছু বলিতে হইবে ? বঙ্কিমচন্দ্রের সম্বন্ধে কিন্তু একটু কথা আছে । বিদেশীশাস্ত্রের আলোচনাকে রাজা রামমোহন রায় যেরকম করিয়া দেখিয়াছিলেন, তিনি ঠিক সেরকম করিয়া দেখেন নাই । তাহার নিজের স্বাধীনচিন্তার অনুশীলনে তিনি বিদেশীশাস্ত্র পড়িয়াছিলেন, এ কথা তিনি নিজেই বলিয়াছেন, কিন্তু অন্তের জন্ত তিনি যে অনুশীলনের পন্থা নির্দেশ করিয়াছেন, তাহাতে বিদেশীশাস্ত্রের উল্লেখ নাই। এ বিষয়ে তাহার শিক্ষা এই— গুরু। জ্ঞানের দ্বারা সমুদায় ভুতকে আপনাতে এবং ঈশ্বরে দেখিতে পাওয়া যায়, ইতিবাক কাহার কাহার পরস্পর সম্বন্ধ জেয় বলিয়াকথিত হইয়াছে ? শিষ্য। ভূত, আমি, এবং ঈশ্বর। • গুরু । ভুতকে জানিবে কোন শাস্ত্রে ? বর্তমানযুগের স্বাধীনচিন্তা ।

$3

শিষ্য । বহির্বিজ্ঞানে । গুরু। অর্থাৎ উনবিংশ শতাব্দীতে • কোমৃতের প্রথম টারি ;–Mathematics, Astronomy, Physics, Chemistry, গণিত, জ্যোতিষ, পদার্থতত্ত্ব, এবং রসায়ন। এই জ্ঞানের জন্ত আজিকার দিনে পুশ্চিাত্যদিগকে গুরু করিবে । তার পর আপনাকে জানিবে কোন শাস্ত্রে ? : শিষ্য। বহির্বিজ্ঞানে এবং অন্তর্বিজ্ঞানে। গুরু। অর্থাৎ কোমৃতের শেষ ছুই— Biology, Sociology. এ জ্ঞানও পাশ্চাত্যের নিকট স্বাঞ্জা করিবে । শিষ্য। তার পর ঈশ্বর জানিব কিসে? গুরু। হিন্দুশাস্ত্রে। উপনিষদে, দর্শনে, পুরাণে, ইতিহাসে, প্রধানতঃ গীতায় । যিনি মানুষের সমুদায় বৃত্তিরই ঈশ্লরান্থবৰ্ত্তিতাকে ভক্তি বলিয়াছেন, এবং র্যাহার কাছে ধৰ্ম্ম অর্থে কেবল রিলিজন নয়, তাহার পক্ষে ঈশ্বরজ্ঞানের উপায়কে এইরূপে সঙ্কীর্ণ করিয়া দেওয়া কতদূর সঙ্গত হইল, সে বিচারে আমি এখন প্রবৃত্ত হইব না। • . . মূল কথাটা কিন্তু এই। পৃথিবীর প্রধান প্রধান ধৰ্ম্মের ভিতর একই সাৰ্ব্বভৌমিক ধৰ্ম্মতত্ত্ব নিহিত আছে, এ বিষয়ে—এখন যেমন দুইমত হওয়া একরূপ অসম্ভব ; তেমনি প্রত্যেক জাতীয়ধর্শের একটু বিশেষ আছে, এবং যতদিন জাতীয়জীবনের বিশেষত্ব থাকিবে, ততদিন সেই ধর্শের বিশেৰও থাকিৰে এ বিষয়েও এখন ইমত হওয়া একরূপ অসম্ভব। কিন্তু সেই জাতীয়ধর্মের রক্ষ, উদ্ধৃতি, চিরজীবন্ত ভাবের জন্ত, জাতীয় শাস্ত্ৰ' ও সমাজতত্বের আলোচন, কোন অভাৱ