পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Yo शक्राङ्गं । [ ৬ষ্ঠ বর্ষ, আষাঢ়। বিদ্যালয়ে ঘর বানাইলে তাহ বোর্ডিং ‘ইস্কুল-আকার ধারণ করে। এই বোর্ডিংইস্কুল বলিতে যে ছবি মনে জাগিয়া উঠে, তাহা মনোহর নয়—তাহ বারিকৃ, পাগলগারদ, হাসপাতাল বা জেলেরই এক८१ांशैङ्ग्रतः । অতএব বিলাতের নজির একেবারে ছাড়িতে হইবে, কারণ, বিলাতের ইতিহাস, বিলাতের সমাজ আমাদের নহে । আমাদের দেশের লোকের মনকে কোন আদর্শ বহুদিন মুগ্ধ করিয়াছে, আমাদের দেশের হৃদয়ে রসসঞ্চার হয় কিসে, তাহা ভাল করিয়া বুঝিতে হইবে। বুঝিবার বাধা যথেষ্ট আছে। আমরা ইংরেজি ইস্কুলে পড়িয়াছি, যেদিকে তাকাই, ইংরেজের দৃষ্টান্ত আমাদের চোখের সাম্নে প্রত্যক্ষ । ইহার আড়ালে, আমাদের দেশের ইতিহাস, আমাদের স্বজাতির হৃদয়, অস্পষ্ট হইয়া আছে। আমরা ন্যাশনাল পতাকাটাকে উচ্চে তুলিয়া যখন স্বাধীনচেষ্টায় কাজ করিব বলিয়া কোমর বাধিয়া বসি, তখনো বিলাষ্ঠের বেড়ি কোমরবন্ধ হইয়া আমাদিগকে বাধিয়া ফেলে, আমাদিগকে নজিরের বাহিরে নড়িতে দেয় না। আমাদের একটা মুস্কিল এই যে, আমরা ইংরেজি বিদ্যা ও বিদ্যালয়ের সঙ্গে সঙ্গে ইংরেজি সমাজকে অর্থাৎ সেই বিদ্যা ও বিদ্যালয়কে তাহার যথাস্থানে দেখিতে পাই না ! আমৰা,ইহাকে সজীব লোকালয়ের সঙ্গে মিশ্ৰিত করিয়া জানি না । এইজন্ত সেই বিদ্যালয়ের এদেশী প্রতিরূপটিকে কেমন করিয়া আমাদের জীবনের সঙ্গে মিলাইয়৷ লইতে হইবে, তাহাই জানি না, অথচ ইহাই জানা সব চেয়ে প্রয়োজনীয়। বিলাতের কোন কলেজে কোন বই পড়ানো হয় এবং তাহার নিয়ম কি, ইহা লইয়া তর্কবিতর্কে কালক্ষেপ করা সময়ের সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার নহে । ,” এ সম্বন্ধে আমাদের হাড়ের মধ্যে একটা অন্ধসংস্কার প্রবেশ করিয়াছে। যেমন তিববতী মনে করে যে, লোক ভাড়া করিয়া তাহাকে দিয়া একটা মন্থলেখা চাক চালাইলেই পুণ্যলাভ হয়, তেমনি আমরাও মনে করি, কোনেীমতে একটা সভাস্থাপন করিয়া কমিটির দ্বারা যদি সেট চালাইয় যাই, তবেই আমরা ফললাভ করিব । বস্তুত সেই স্থাপন করাটাই যেন লাভ। আমরা অনেকদিন হইল একটা বিজ্ঞানসভা স্থাপন করিয়াছি, তাহার পরে বৎসরে বৎসরে বিলাপ করিয়া আসিয়াছি, দেশের লোকে বিজ্ঞানশিক্ষায় উদাসীন। কিন্তু একটা বিজ্ঞানসভা স্থাপন করা এক, আর দেশের লোকের চিত্তকে বিজ্ঞানশিক্ষায় নিবিষ্ট করা আর । সভা ফঁাদিলেই তাহার পরে দেশের লোক বিজ্ঞানী হইয়া উঠিবে, এরূপ মনে করা ঘোর কলিযুগের কল-নিষ্ঠার পরিচয় । আসল কথা, মানুষের মন পাইতে হইবে, তাহা হইলে যেটুকু আয়োজন করা যায়, সেইটুকুই পুরা ফল দেয়। ভারতবর্ষ যখন শিক্ষণ দিত, তখন মন পাইয়াছিল কি করিয়া, সে কথাটা ভাবিয়া দেখা চাই-বিদেশী য়ুনিভার্সিটির ক্যালেণ্ডার খুলিয়া তাহার রস বাহির করিবার জন্য তাহাতে পেন্সিলের দাগ দিতে নিষেধ করিব না, কিন্তু সঙ্গে