পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ সংখ্যা । ] জানি না, যাহাকে অনুভূতির মধ্য দিয়া হাতড়াইয়া বলিতে হয়, তার ভাষা পদ্য। পঙ্কে এইজন্য যে সকল আইডিয়া প্রকাশ করিতে হয়, সে সকল আইডিয়া আমাদের বুদ্ধি দিয়া আমরা পূৰ্ব্ব হইতেই উজ্জ্বল করিয়া রাখি নাই—সে গুলি আমাদের অজ্ঞাতে অমাদের গানে প্রকাশ পায়-গান রচিত হুইয়া গেলে দেখি যে, একটা-কি কথা বলিবার জন্য যেন অনেক ছবির জাল যোনী হইয়াছে। এমন কি, নিতান্ত সাদা অনুভূতি, যেমন ভালবাসা কি সৌন্দর্য্যের অনুভূতির মধ্যেও একটা এমন দূরত্ব, এমন বিরলতা প্রচ্ছন্ন থাকে যে, তাহাকে ও সম্পূর্ণরূপে বলা চলে না, কেবল ভাঙ্গীর দুটিএকটি স্পন্দনাভাস ফুটাইয়া তুলিতে হয়। এইজন্য কবিতাকে কেবল সুদাকথা, থেলোকথা মনে করিলে চলিবে না । তাহার মধ্যে একটা বৃহৎ আইডিয়ার প্রকাশ আছে। সেই আইডিয়াট দু-এক কথায় বুঝাইবার মত নছে – তাঙ্গ অনেকাংশেই কবির নিকটেই প্রচ্ছন্ন--- অথচ তাছারি প্রকাশ ইন্দ্ৰধনুবিচ্ছরিত বর্ণের ন্তায় নানা সময়ে নানা অীকার ধারণ করিয়া পাঠকের চিন্থের সম্মুখে ঝরিয়া পড়ে। যদি সেই বৃহৎ ভাব মনের অচেতন কোণে স্তুপীকৃত হইয়া না থাকে, তবে কোনমতেই কোন অনুভূতি কবির চিন্তুকে অমন প্রবণ, তমন সহঙ্গ সঙ্গীতের আকর্ষণে টানিয়-লষ্টয়া যাইতে পারে না । এইস্কুন্ত আমি যে-কোন কথা লিখিতে যাই, ষ্ণুেকোন ছবি আঁকিতে যাই, যে কোন অস্ত্রভুতিকে সঙ্গীতে প্রকাশ করিতে যাই, সে . সকলেরি মধ্যে আর-একটা জিনিষ লাগিয়া থাকে—একটা ভাব—যে এই সমস্ত অনুভূতি কাব্যের প্রকাশ । ১৭৯ জালকে, চিন্তাজালকে আঁকিয়া তুলিতেছে, - যাহার কাছে কিছুই অগোচর নাই—যাহ, হইয়াছে ও যাহা হইতে সমস্তই যেন তাহারি হস্তের মুঠার মধ্যে লুক্কায়িত। কাব্যের প্রকাশ আসলে ঐ ভাবের প্রকাশ এবং ঐ ভাব আমাদের এক গভীর সচেতনতার মধ্য হইতে তিলে তিলে ফুটিয়া উঠে, প্রতিদিনের কৰ্ম্মক্ষেত্রে মনুষ্যাবাসে উপস্থিত হয়। হঠাৎ একদিন মন্দির খোলা হইয়া যায়— আমরা অনেকদিনের অনেক অপেক্ষা, অনেক ব্যথা, অনেক আনন্দ, অনেক ইঙ্গিতের অর্থ একমুহূৰ্ত্তেষ্ট মুস্পষ্টরূপে বুঝি । বহুদিন ধরিয়া, সমস্ত জীবন ধরিয়া যে জিনিষটা আমার মধ্য দিয়া - গড়িয় উঠে, তাহাকে একমুহূর্বে পরিষ্কার করিয়া কি করিয়াই বা বলা যাইবে এবং কি করিয়াই বা বুঝা যাইবে ? তাহার শেষ কথা হয় ত এই— O the world as God has made it all and is beauty Knowing this is love, and Rove is. duţy. কিন্তু সে কথাটুকু যে সেখানে কিছুই নহে–কথাটুকু যে জীবনের মধ্য দিয়া প্রকাশ পাইয়াছে, সেই জীবনের গভীরতায় প্রবেশ করিতে হইবে, তাহার খদুঃখ হৰ্ষশোকের বিচিত্র লীলার মধ্যে কথাটুকুৰ গাম্ভীৰ্য্য প্রত্যক্ষ করিতে হইবে । কাব্যের সত্য এইজন্তই এমন অখণ্ড, এমন পরমরহস্তময়। কারণ, সেই সত্যসমুদ্রের মধ্যে অজ্ঞাতে বাস করিয়া কৰি নানা রত্বরাজি তাহার ঘর হইতে তুলিতেছেন, বুদ্ধিদ্বারা, বিচারবিতর্কার বাহিরের সত্যকে তিনি