পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/২০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఫిష్లు পণ্ডিতপ্রবর কথার-কায় আমার শিক্ষাগুরু পণ্ডিত তারাঁকুমার কবিরত্ন মহাশয়ের সমক্ষে আমাদিগকে বলিলেন, “কথাটা তোমাদের বেশী মনে হইবে, কিন্তু ইহা সত্য যে, শরৎসুন্দরীকে আমি নিজের কন্যাদের চেয়ে বেশী স্নেহ করি।” মহারাণীমাতার যে পীড়ার কথা বলিতেছিলাম, তাহার সংবাদ পাইয়া বিদ্যাসাগর বালকের স্তায় রোদন করিতে করিতে তাহার গুণকীৰ্ত্তন করিয়াছেন, চুচুড়া হইতে প্রত্যাবর্তন করার পর তদীয় জামাতা স্বৰ্য্যবাবুর মুখে ইহা আমি শুনিয়াছিলাম। ব্রাহ্মসমাজের স্বৰ্গীয় বাবু কালীনাথ দে রাজশাহী জেলাস্কুলের যখন শিক্ষকতা করিতেন, তখন হইতে শেষ পর্য্যস্ত তিনি মহারাণীর সাধুদুষ্টাস্তের একজন পরম অনুরক্ত ভক্ত ছিলেন। ১২৮৮ সালে তিনি মখন ৰাখির ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেটু, তখন মাত বিষয়-আশয়ের ভার কুমারের হস্তে দিয়া কাশী যাইতে কৃতসঙ্কল্প হইয়াছেন শুনিয়া লিখিয়াছিলেন, “আপনাকে বলা বাহুল্য যে, চিত্তকে পরিগুদ্ধ রাখিলে পৃথিবীর সর্বত্রই তীর্থস্থান । ‘কাজ ফিরে মোর কাশী, ঘরে বসে দেখুৰে। আমি গর, গঙ্গ, বারাণসী। আমার কালীর পকোন তীর্ষ রাশিয়াপি । আমার সংণি এই গান বলিয়া দিলেন, তাই লিখিলাম।” আত্মীয়, অনুগত এবং পুত্রস্থানীয় যে সকল পুরুষের সমক্ষে তিনি বাহির बन्नु । হইতেন, নিঃসঙ্কোচে তাহদের সহিত কথাবার্তা বলিতেন। কিন্তু, তাহার সহজ নম্রতা ও লজ্জাশীলতা প্রত্যেক কথায় ও কার্য্যে বিকশিত হইয়া উঠিত। শৈলেশচন্দ্র যখন নিতান্ত বালক, গরিব সহপাঠীদের বই, স্কুলের বেতন ও অন্তান্ত সাহায্যের জন্ত মহারাণীমাতাকে মাঝে মাঝে ধরিয়া বসিতেন । একদিন তিনি তার এক দীর্ঘাকৃতি সতীর্থ সঙ্গে অন্দরের মধ্যে উপস্থিত। সে ছেলেটি আর কখন রাজান্তঃপুরে প্রবেশ করে নাই এবং শৈলেশের সঙ্গে বলিয়াই যাইতে পারিয়াছিল। আমি দেখিলাম,মা হঠাৎ মাথার কাপড় টানিয়া দিলেন এবং শৈলেশকে কাছে ডাকিয় তাহার আবদারটা মুদুস্বরে প্রশ্ন করিয়া জানিয়া লইলেনু । শেষে শৈলেশচন্দ্র কার্য্যোদ্ধার করিয়া সঙ্গী সহ চলিয়া গেলে, ব্যাপারটা কি, বুঝিলাম । আর এক দিনের কথা। প্রাতে আমরা তাহার কাছে বসিয়া আছি, এমনসময় সংবাদ আসিল, দেওয়ানজী হাজির দিতে আসিতেছেন । গৃহস্তরে বসিয়া অন্তাষ্ঠ কথার পর পিতৃদেব জিজ্ঞাসা করিলেন, ময়মনসিংহের ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেটু রাখালবাবু শেষে যে পুস্তক পাঠাইয়াছিলেন, তাহ মা পাইয়াছেন কি না ? উত্তর-পাইয়াছি। প্রশ্ন–রাখালবাবু জানিতে চাহিয়াছেন, মহারাণীমা পড়িয়া কি মত দেন। মা কিছু উত্তর করিলেন না, কেবল লজ্জায় আরক্তিম হইয়৷ মৃদু হাস্য করিলেন । 尊 ঐঐশচন্দ্র মজুমদার।