পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/২১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ সংখ্যা। ] ছুর্ভিক্ষপীড়িত ভারতে । ●G) গরাদেওয়াল গবাক্ষবিশিষ্ট ঘোরদর্শন কত-কত পাথরের আরাম-কেদার। নর্তকীদের জন্ত ইমারৎ রহিয়াছে। বলা বাহুল্য, উহাদের স্থানে-স্থানে চতুষ্ক-মণ্ডপ এবং রাজকুমারদিগের দেওয়াল গোলাপী রঙে রঞ্জিত এবং উহাতে শাদা ফুলের নক্স কাটা । আজ এই অঞ্চলে খুব লোকের ভিড়। আজ এখানে লোক ডাকিয়া-ডাকিয় আনা হইতেছে । আজ সৈনিকদিগের বেতন পাইবার দিন। তাই সমস্ত সৈন্ত আজ এখানে উপস্থিত। উহাদিগকে দেখিতে একটু জংলি ধরণের, কিন্তু বেশ লম্বাচওড়া ; হস্তে বল্লম অথবা ধবক্তপতাকা । ভারীভারী সেকেলে ধরণের মুদ্রা, অথবা চৌকোণা তাম্রমুদ্রা উহাদিগকে দেওয়া হইতেছে । থাম-ওয়ালা, খোদাই-করা ছোট-ছোটখিলানবিশিষ্ট মাৰ্ব্বেলের একটা দালানঘরে, একটা প্রকাও ফ্রেমের উপর বেগনুি-মধূমলের একটা কাপড়ের টানা রহিয়াছে—দশজন কারিকর তাহার উপর “তোলাকাজের” ( raised work ) gotiatif, afo F. বুনিতেছে। রাজার একটি প্রিয় হাতীর জন্য নূতন পোষাক তৈয়ারী হইতেছে। কঠিনশ্রমসহকৃত জলসেকের প্রভাবে উদ্যানগুলা এখনো সবুজ রহিয়াছে । " এই তাপদগ্ধ গুক্ষপ্রদেশের মধ্যে এই মরুকাননগুলি দেখিয়া বিস্মিত হইতে হয় । এই উদ্যানগুলি উপবনের স্থায় বিশাল ; এবং উহাদের মধ্যে একপ্রকার বিষাদময় শোভা পরিলক্ষিত হয় । উহ ৫ ফিট উচ্চ, দস্তুর প্রাচীরদ্বারা বেষ্টিত। উহাদের পথগুলি প্রাচীন-ধরণের ;–সোজসোজা ও মাৰ্ব্বেল দিয়া বাধানো। ঝাউ, তাল, গোলাপ ও নারঙ্গিকুঞ্জে বিভূষিত। নারঙ্গিফুলের গন্ধে চারিদিৰু আমোদিত । ছায়ায় বলির বিশ্রাম করিবার জন্ত সৰ্ব্বত্রই মাৰ্ব্বেল স্নানের জন্ত মাৰ্ব্বেলে বাধানে চৌবাচ্ছ । এথানে ময়ূর আছে, বানর আছে ; এমন কি, নরঙ্গিগাছের তলায়, শিকারে বহির্গত, ছুচালমুখ তস্করবৃত্তি শৃগালদিগকেও দেখিতে পাওয়া शृष्ट्रि ! অবশেষে সেই বৃহৎ সরোবর । ইহাও ভীষণ প্রাচীরে আবদ্ধ। দুইতিনবৎসরব্যাপী অনাবৃষ্টির ফলে ইহার প্রায় অৰ্দ্ধেক জল শুকাইয়া গিয়াছে। ইহঁীর পাকের উপর শতবর্ষজীবিত গগুশৈলপ্রায় প্রকাণ্ড-প্রকাণ্ড কুম্ভীর নিদ্রা যাইতেছে। এই সময়ে শুক্লবস্থধারী একজন বৃদ্ধ ঘাটের সিড়ির উপর আসিয়া, মসজিদের মুয়েজ্জিনের মত সুস্পষ্টস্বরে টানাসুরে কি-একটা ক্রমাগত আবৃত্তি করিতে লাগিল ;–নানাপ্রকার-বাহুভঙ্গিসহকারে কুমীরদিগকে ডাকিতে লাগিল। তখন কুমীরের জাগিয়া উঠিল। প্রথমে ধীরে ধীরে ও অলসভাবে,—স্কুণপুরেই ক্ষিপ্রভাবে— চটুলভাবে সীতার দিয়া निकाई আসিল। তাহাদের সঙ্গে সঙ্গে বড়-বড় কচ্ছপও আসিল । তাহারাও ডাক শুনিয়াছে । তাহারাও থাইতে চায়। যেখানে সেই বৃদ্ধ এবং দুইজন ভৃত্য মাংসেরপুড়ি স্তে দাড়াইয়া ছিল, সেই সোপানপংক্তির নীচে আসিয়া উহার চক্রাকারে সমবেত হইল এবং সীসাস্বর্ণ শ্লেষ্মা-চট্টচটে মুখ ব্যাদান করিয়া ঐ সব মাংস গিলিবার জন্ত প্রস্তত্ব হইল। তখন উহাদের মুখের মধ্যে ছাগলের পাজরী, ভেড়ার পা, ফুসফুস, অন্ত্ৰাদি নিক্ষিপ্ত হইল। কিন্তু বাহিরের রাস্তায়, সেই সব ক্ষুধিত