পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/২৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম সংখ্যা। ] नैोळ्नांदङ्गी । আসিয়া মিশিয়াছে, আর তাহার মধ্য হইতে গোলাপদলপেলব বাহুলতা ঈষৎ উন্নমিতভালে অশোকশাখার দিকে প্রসারিত হইয়াছে ! অতুলনীয় এ চিত্র ! কোন নন্দনকাননে, নিঝরিণীগীতে আমার এই চিরসুরভি পারিজাত ফুটিয়াছে, কোন পরীরাজ্যে আমার এই মানসপ্রতিমা অম্লানমধুরিমায় বিভোর হইয় আছে! মনে পড়ে, বৈষ্ণবকবির সেই অপূৰ্ব্ব সৌন্দৰ্য্যস্বষ্টি । যখন যমুনাব্ল কুলে কনকবর্ণ গোপবধু নীলাম্বরে সাজিয়া কামিনীকুঞ্জে গ্রীব হেলাইয়া বিরাজ করিতেছেন, তখন রাজনীতিপণ্ডিত শ্ৰীকৃষ্ণের মস্তিষ্কের অবস্থাও কল্পনা করিবার যোগ্য বটে। এইরূপ মস্তিষ্কের জন্তই পরিশেষে তিনি ব্যবস্থা করিলেন-দেহি পদপল্লবমুদারম্। বৈষ্ণবকবি যে অমর সৌন্দর্য্যের চিত্র আঁকিয়া গিয়াছেন, কখন সেরূপ মূৰ্ত্ত সৌন্দৰ্য্য দেখিয়া নয়ন সাধুক করিতে পারিয়াছিলেন কি না, জানি ন!—কিন্তু আমার বোধ হইল, যেন আমার এ আশা অপূর্ণ ই থাকিয়া যাইবে । কাব্যে কত সুন্দরীর চিত্র, চিত্রে কত জীবিতোপম অনিৰ্ব্বচনীয় রূপ দেখিয়াছি, কিন্তু হায়, বাস্তবে কি তাহার কিছুই মিলে না। কবিকে জিজ্ঞাসা করিলে কবি বলিবেন, সৌন্দর্ঘ্যের আদর্শ যেদিন নয়নগোচর হইবে, সেদিন সে যে "আদর্শ"পদবী হইতে খলিত। চিত্রকর হয় ত মস্তক কওয়ন কৱিবেন। কিন্তু আমার মন তাহাতে প্ৰবোধ মানিবে নু । একান্ত আকাঙ্ক্ষার সহিত যাহা এতদিন হৃদয়ে পোষণ করিলাম, তাহ কাল্পনিক,—তাহ অলীক ? তুমি কবি, তুমি চিত্রকর, তোমার ইচ্ছা হয় বল—কারণতুমি ত জামার মত এমন সৰ্ব্বগ্রাসী সৌন্দৰ্য্যাভিলাষের প্রভাব জীবনের পরতে-পরতে অনুভব কর নাই। তুমি বলিতে পার, কিন্তু আমার হৃদয় . তাহা মানিবে না। আমি বিশ্ব খুজিয়া খুজিয়া কেবল নিস্ফলতাই লাভ করিয়াছি, কিন্তু আমার বিশ্বাস তাহাতে শিথিল হয় নাই। বাধা পাইয়া পাইয়া আমার আশা বাসনায়, বাসন ব্যগ্রতায় এবং ব্যগ্রতা ক্রমে অধৈৰ্য্যে পরিণত হইয়াছিল। প্রথম বাধা পাইলাম বিবাহে। সকলের যেমন আশা থাকে যে, বিবাহের শুভদৃষ্টি এক অভিনব সৌন্দৰ্যরাজ্যের দ্বার উদঘাটিত করিয়া দিবে, আমারও তাঁহাইছিল । এবং সকলের মত আমাকেও নিরাশ হইজ ফিরিতে হইয়াছিল। আমার স্ত্রী শুীমৰণ । ( সম্পাদকমহাশয়, অনুগ্রহ করিয়া লেখকের নামের স্থলে শুধু"ত্র",“বিসৰ্গ” ও ছোটরকমের একটি“ড্যাশ’ দিয়া দিতে বলিবেন। দেখিবেন, যেন ভুলিয়া আমার নাম ছাপান না হয়। আর এ সংখ্যার “বঙ্গদর্শন” আমাকে আদেী পাঠাইবার প্রয়োজন নাই। আমি ক্লৱে গিয়া পড়িয়া'আসিব।) স্বতরাং আমার আশ । মিটিল না। আমার স্ত্রীর নিকট আমার কিছুই গোপনীয় ছিল না। আমি যখনই আমার কল্পনার মৌলিকস্থষ্টি নীলাম্বী সুন্দরীর কথা তাহার নিকট পাড়িতাম, তখনই তিনি হঠাৎ গম্ভীর হইয়া পড়িতেন । আমি বুঝিতাম—স্ত্রীলোকের স্বাভাবিক দুৰ্ব্বলতা। কিন্তু আমার সে সব ভাবিবার সময় ছিল না। আমার ইঁদয় সেই একই চিন্থায় ভরপুর। কাহার কোথায় একটু আঘাত লাগিল, তাহ দেখিবার বড় অবকাশ ছিল না। আমার স্ত্রী মাঝে মাঝে তাহার জন্ত একখানি নীলরঙের পাণী-শাড়ী আনিবার