পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/২৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨6.8 খচিত। কতকগুলা চৌবাচ্ছ, খুব উচ্চদেশে স্থাপিত, এখনো উহাতে একটু জল রহিয়াছে। অন্তঃপুরমহিলাদের জন্য শৈলগৰ্ভ খনন করিয়া কতকগুলা স্নানাগার নিৰ্ম্মিত হইয়াছে ; এবং সকলের মধ্যস্থলে, প্রাচীরবদ্ধ একটা “ঝোলানো”-বাগান ;—তাহার সম্মুখেই কতকগুলা অন্ধকেরে ঘর সমুদঘাটিত---উহাই রাজকুমারীদিগের, রাণীদিগের ও অবরুদ্ধ সমস্ত সুন্দরীদিগের অন্তঃপুর । আরো উচ্চতর ছাদে উঠিবার উদ্দেশে যখন ঐখান দিয়া চলিয়া গেলাম, তখন দেখিলাম, শতবর্ষবয়স্ক নারাঙ্গিবৃক্ষসমূহের সৌরভে সমস্ত স্থানট আমোদিত । কিন্তু এখানকার বৃদ্ধ রক্ষক অতীব তীব্রভাবে বানরদিগের নামে অভিযোগ করিয়া বলিতেছিল যে, উহারাষ্ট এখানকার মালিক বলিলেই হয় ; উহাদের উৎপাতে সমস্ত নেবু হস্তগত হওয়া দুষ্কর । আমি এখন, এই শেষপ্রান্তবর্তী ছাদটির উপর . বসিয়া রাত্রির প্রতীক্ষা করিতেছি । চন্দ্ৰাখোকে রাজসভার অধিবেশনের জন্য জমৃকালো-বার গুণবেষ্টন-সমন্বিত এই ছাদ রাজারা নিৰ্ম্মাণ করাষ্টয়াছিলেন। এখনি জ্যোৎস্না হইবে, আমিও জ্যোংস্নালোকে এই স্থানটির সহিত একটু পরিচয় করিয়া ठुझेद् । , ". চৗল, শকুনি, ময়ূর, ঘুঘু, তালচঞ্চ প্রভৃতি পক্ষীরা সকলেই এখন নিজ-নিজ নীড়ে শয়ন করিয়াছে; তাই এই পরিত্যক্ত প্রাসাদটি এখন আরো নিস্তব্ধ। উচ্চ শৈলমালার অন্ত রালে সুর্য্য অনেকক্ষণ-যাবৎ আমার নিকটে প্রচ্ছন্ন ছিল, কিন্তু এইবার নিশ্চয়ই অস্তমিত হইয়াছে। কেন না, নীচেকার কেল্লার शक्रप्तकfन । ৬ষ্ঠ বর্ষ, ভাত্র। একটা ময়দানে কতকগুলি মুসলমান রক্ষিপুরুষ মেক্কার দিকে মুখ করিয়া নেমাজ করিতেছে । উহার নেমাজের এই পবিত্র সময়টি যথাকালে ঠিক জানিতে পারে। ঠিক এই সময়ে রক্তাগুত কালীমন্দির হইতেও একটা গহন-গম্ভীর ধ্বনি নিম্নদেশ হইতে আমার নিকট আসিয়া পৌছিল । ব্রাহ্মণ্যিক পূজা-অচ্চনারও এই সময় । লোহিতবসনা রক্ষসীদেবীর ঢাক তাহারই “গোরচন্দ্রিমা” আরম্ভ করিয়াছে। প্রথম-সঙ্কেতের মত ঢাকের উপর দুইচারিবার সজোরে ঘা পুড়িল ; তাহার ভীষণ শৰ্ম্মঘট ; পরক্ষণেই, আৰ্ত্তনাদা শানাই ও কাংস্ত-কৰ্ত্তাল তাঙ্গার সহিত যোগ দিল । আর একটু শঙ্খ স্বরগ্রামের দুটিমাত্র স্বর অবলম্বন করিয়া ঘোররবে অবিশ্রামে বাজিতে লাগিল । * এই শব্দ যেন ভূগর্ভ হইতে আমার নিক আসিয় পৌছিতেছে ; ক্রমেই স্ফীত হইয়া পরেই 动 উঠিতেছে ; এবং উপযু পরি-বিদ্যস্ত অসংখা শৃষ্ঠগভ ও শব্দযোনি দালানের মধ্য দিয়া, এই উচ্চ ছাদ পয্যন্ত পৌছিতে পৌছিতেই অনেকট রূপান্তরিত হইতেছে । সহসা, উচ্চ আকাশ হইতে, প্রত্যুত্তরচ্ছলে কাশরঘণ্টার ধ্বনি নি:স্থত হইল। এই ধ্বনি, একটু-কুদ্র শিবমন্দির হইতে যেন পূর্ণপক্ষভরে এই দিকে উড়িয়া আসিতেছে। আমার চতুৰ্দ্দিকে যে সকল উদগ্র শৈলচুড়া রহিয়াছে, তাহারি একটার উপরে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত। যাহার দস্তুর চূড়াবলী কালে চিরুণীর দাতের মত পীতাভ মান অম্বরে পরিস্ফুটুরূপে