পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/২৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀՊ Ց बाणश्चात्रि । [ ৬ষ্ঠ বর্ষ, আশ্বিন। প্রশংসাভাজন বিবেচনা করি । * * জমীদারের বাঙালীজাতির চূড়া, কে না র্তাহাদিগের প্রতিভাজন হইবার বাসনা তার ?” কিন্তু “বঙ্গীয় কৃষকের নিঃসহায়, মনুষ্যমধ্যে নিতান্ত দুর্দশাপন্ন, এবং আপনাদিগের দুঃখ সমাজের মধ্যে জানাইতেও জানে না। যদি মুকের দুঃখ দেখিয়া একবার বাক্যব্যয় না করিলাম, তবে মহাপাপ স্পর্শে। • • • যে কণ্ঠ হইতে কাতরের জন্ত কাত রোক্তি নিঃস্থত না হইল, সে কণ্ঠ রুদ্ধ হউক, যে লেখনী আর্তের উপকারার্থে না লিখিল, সে লেখনী নিস্ফলা হউক ।” এইরূপ দৃঢ়তার সহিত কৰ্ত্তব্যপালনে বদ্ধপরিকর হইয়া বঙ্কিমচন্দ্র কৃষকদের দুঃখপরম্পর “বঙ্গদেশের কৃষক"শীর্ষক প্রবন্ধাবলীতে র্তাহার অতুলনীয় বর্ণনাশক্তিদ্বারা প্রকাশ করিয়াছিলেন। কিন্তু বঙ্গদেশের শিক্ষিত. সমাজ তাহ অনুকূলভাবে গ্রহণ করিয়াছিলেন, বলিতে পারি না। বরঞ্চ “সমাজদৰ্পণ” নামে একখানি সংবাদপত্রে তাহ প্রতিকূল ভোবে সমালোচিত হইয়াছিল। কৃষকদের অবস্থা মন্দ, তাহদের উপর অত্যাচার হয়, এ কথা প্রকাশ করিলে দশশালার বন্দোবস্ত রহিত হইতে পারে, এইরূপ আশঙ্কা আছে, তজন্ত বঙ্কিমবাবুর ঐঞ্চপ প্রবন্ধ লেখা উচিত হয় নাই, এইরূপমন্তব্য ঐ সংবাদপত্রে প্রকাশিত হইয়াছিল। আমি নিজেও যখন কৃষকদের দুরবস্থাসম্বন্ধে লিখি, তখন দশশালার বন্দোবস্ত রহিত করিবার জন্ত আমরা প্রয়ালী, গবর্মেন্ট পাছে এই কথা অন্যায়পূৰ্ব্বক বলেন, তজ্জন্ত শঙ্কিত হই । কৃষরুদের অবস্থা বঙ্গীয় জমিদারের অধীন থাকিয়া যতই মন্দ হউক, তাহা গবমেন্টের খাসমহলের প্রজার অবস্থা অপেক্ষা মন নহে, তাহ মুক্তকণ্ঠে বলিতে পারি। এবং যদি কখন দশশালার বন্দোবস্ত রহিত হয়, আর প্রজাগণ গবর্মেন্টের খাসমহলের অন্তর্গত হয়, তাহা হইলে তাহাদের আরও দুর্ভাগ্য বলিতে হইবে। কিন্তু আমরা কাগজে লিখি আর না লিখি, প্রজাদের যে দুঃখ ও দুরবস্থা, তাহ গবমেণ্ট নিত্য দেখিতে পাইতেছেন। যেস্থলে গবমেণ্টের নিজের আয়ের কোন ক্ষতি হইবার সম্ভাবনা নাই, সেস্থলে গবর্মেন্টের প্রজাবাৎসল্য দুৰ্দ্ধমনীয় হওয়া আশ্চর্য্য নহে। সুতরাং যদি জমিদারগণ দশশালা বজায় রাখিতে চান, তাহা হইলে তাহদের পক্ষে প্রজাবর্গের উন্নতি করা যুক্তিসঙ্গত । বঙ্কিমবাবু বঙ্গীয় কৃষকদের দুঃখমোচনার্থ জমিদারসম্প্রদায়ের নিকট,—ব্রটিশ ইণ্ডিয়ান এসোশিয়েশনের নিকট র্তাহার প্রার্থন জানাইয়াছিলেন । আমিও জমিদারগণের নিকট বরাবর প্রার্থনা করিয়া আসিয়াছি, অদ্য ও করিতেছি । আর প্রার্থনা করিতেছি, স্বদেশীভাবপূত শিক্ষিতব্যক্তিগণের নিকট । স্বদেশী কাপড় যেমন আমাদের স্বদেশীভাবের কার্য্যক্ষেত্র হইয়াছে, স্বদেশী সাধারণলোকদের শিক্ষাও যেন তেমনি আমাদের স্বদেশীভাবের কার্য্যক্ষেত্র হয় । এক্ষণে সাধারণ গরিবলোকের এবং ভদ্রলোকের মধ্যে এমন একটি দূরতী ঘটয়াছে, স্বদেশীজন যেন বিদেশী হইয়া গিয়াছে। যতদিন স্বদেশীকৃষকগণকে ও সাধারণ দরিদ্র মুৰ্থজনকে স্বজন বলিয়া অনুভব না করিতে পারবেন, স্নেহে