পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/২৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

᎓ቁo बछाभलfन । [ ৬ষ্ঠ বর্ষ, আশ্বিন। রক্তচক্ষু ও মসীবর্ণ বিশালোদর গজরাজকে নিরস্তুর বিক্রপ করিত । লালজির পূর্ববৃত্তান্ত আবিষ্কার করিতে অনেক সুপ্রসিদ্ধ প্রত্নতত্ত্ববিৎকেও গলদঘৰ্ম্ম হইতে হইয়াছিল, সুতরাং সেই দুরূহ তত্ত্বনিরূপণ হইতে নিবৃত্ত থাকিয়া আমরা কেবল তাহার “ব্যক্ত” অংশটুকুরই আলোচনায় ব্যাপৃত থাকিব । R লালজির আগমনের দুইমাস পুৰ্ব্ব হইতে গ্রামে একটা হুলুস্থল পড়িয়া গিয়াছিল। গ্রমের প্রাস্তভাগে জমিদারবাবুদের পরিত্যক্ত এক ভগ্নপ্রায় বাংলা বহুদিন হইতে পড়িয়া আছে। সহসা একদিন প্রাতঃকালে গ্রামবাসিগণ দেখিল, হরিদ্বর্ণ-উষীষ-শোভিত স্থলোদর দ্বারবনজির অধীনে বহুসংখ্যক লোকজন উক্ত গৃহের সংস্কারসাধনে নিরত হইয়াছে। কৌতুহলপরায়ণ দুইএকজন গ্রামবাসী দ্বারবাঞ্জিকে জিজ্ঞাসা করিয়া সসন্ত্রমে শুনিল, "বড় ভারি" এক “বাবুসাহেব” রঘুনাথপুরে .বাস করিবার অভিপ্রায়ে উক্ত বাংলা খরিদ করিয়াছেন। দুই মাসে গৃহের সংস্কারকার্য্য সুসম্পন্ন হইলে গ্রামবাসিগণ উৎকণ্ঠিতচিত্তে দিনের পর দিন “বাবুসাহেবে"র আগমনপ্রতীক্ষায় বিনিদ্র রজ, এবং শান্তিহীন দিবস কোনরূপে অতিবাহিত করিতে লাগিল। অবশেষে একদিন অপরাষ্ট্রে জনসাধারণের শুষ্ক প্রায় অীশালত সফল করিয়া এক “জরি”খচিত-রক্তবর্ণ সালুমণ্ডিত এবং সিপাহীঅমৃগামিনী শিবিক রঘুনাথপুরের গ্রাম্যপথপ্রাস্তে দর্শন দিল! কালিদাস জীবিত থাকিলে লিখিতেন, সেদিন শরতের রবিকররঞ্জিত মধুর গোধূলিতে শিবিকাশোভ “বাবুসাহেবে”র প্রমূৰ্ত্তিদর্শনব্যগ্রতায় কত কুলবধুর বেণীবন্ধন অসমাপ্ত রছিয়া গিয়াছিল, কত রূপসীর প্রাণঘাতিনী কজ্জলরেখা এক চক্ষুতেই পরিসমাপ্ত হইয়াছিল, কত ভূষণগৰ্ব্বিতার স্বর্ণাঞ্চল ধূলায় ধূসরিত হইয়াছিল, ইত্যাদি ইত্যাদি । VG লালজির রঘুনাথপুরপ্রবেশের পর তিনদিন অতীত হইয়াছে। র্তাহার অগাধ ঐশ্বৰ্য্য এবং রাজদরবারে অসীম ক্ষমতার কথা । ইতিমধ্যেই চাটুকারমণ্ডলীর মুখে-মুখে পল্লিবাসীর কর্ণবিবর পরিপূর্ণ করিয়া দিয়াছে। লালজি ছদ্মবেশী মহারাজা অথবা সরকারবাহাদুরের . গদভচৰ্ম্মাবৃত পশুরাজস্বরূপ কোন গুপ্ত কৰ্ম্মচারী, কিছুই স্থির করিতে না পারিয়া জvামণ্ডলী ভয়ে ও বিস্ময়ে স্তম্ভিত হইয়া এ কয়দিন আপনাপন অবসরকাল লালজির দ্বারপ্রান্তেই বসিয়া কাটাইয়াছে। আজ প্রভাতের রবিরশ্মিরঞ্জিত পুৰ্ব্বদ্বারী বারান্দায় লালাজির দরবার বসিয়াছে। সতরঞ্জিমণ্ডিত হৰ্ম্ম্যতলে সাটিনশোভিত উপাধানৰেষ্টনের মধ্যস্থলে উচ্চ গদীতে লালাবাবু আসনগ্রহণ করিয়াছেন । তাহার স্বভাবরক্তিম লোচনযুগল নিদ্রাপাশ হইতেসঙ্কোমুক্তি লাভ করিয়া “জবাকুসুমসঙ্কাশ”-মূৰ্ত্তি ধারণ করিয়াছে, বিচিত্রবর্ণ-“লেদু” শোভিত গোলাপী বর্ণের রেশমী পাঞ্জাবীর অভ্যস্তর হইতে র্তাহার বিশাল উদরের ক্ষীণ বর্ণচ্ছটা'রক্তকমলদলাভ্যন্তরস্থ ভ্রমরশোভার অনুকরণ করিতেছে বহযত্নসংস্কৃত গ্রীবাচ্ছাদী কেশকলাপের উপর বামে হেলান জরির শিরস্ত্রাণ কাদম্বিনী