পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তম সংখ্যা । ] পাইলেন, তাহাতেই পরম তুষ্ট হইলেন । তাহার পর, সুপ্রসিদ্ধ নাগেশ্বর-মহাদেব ও সরযুতীরন্থ অপর কয়েকটি মন্দিরে পুজা শেষ করিয়া বাসায় উপস্থিত হইলাম । অপরাহ্লে দুইজন দীর্ঘযষ্টিধারী ভূতোর সহিত দর্শন করিতে বাহির হইলাম। কতকগুলি পঞ্জাবী ক্ষত্রমহিলা ও সঙ্গ লক্টলেন । অযোধ্যায় এখন বসতি তত ঘন নহে। বিশেষ পশ্চিমাংশে কেবল তেঁতুলবন। দূরে দূরে একএকটি অতি পুরাতন দেবমন্দির। রামেপাসকগণের মহাতীৰ্থ অযোধ্যায় হনুমানজীর অত্যন্ত প্রভাব। তজ্জন্ত র্তাহীর মন্দিরটিক্ট সৰ্ব্বাপেক্ষ উচ্চ। তদীয় বংশবৃদ্ধিও এখানে অত্যধিক,-দুইতিনশত বানরকেও একসঙ্গে দলবদ্ধ হইয়া ভূপৃষ্ঠাপশব্দে নিরস্তর বন হইতে বনাস্তরে ধাবিত হইতে দেখা যায় । সম্মুখে পড়িলেই বিপদ, রাস্তাগুলি যেমন বন্ধুর, তেমনি স্তানে স্তানে ইষ্টকন্তু প ও পাষাণখণ্ডে নিতান্ত দ্বর্গম। নগ্নপদে দেবদর্শনে বাহির হইয়াছি, সুতরাং পদে পদে হেtছট থাইতে হইতেছে । মঠগুলি প্রায়ই বৈষ্ণবসম্প্রদায়ের । কোনা মঠে মিথিলায় জনকালয়ে রামের বিবাহলীলা দেখিলাম। কোথাও জটবন্ধল পরিধান করিয়া রামের বনগমৰু। কোন স্থানে যুদ্ধ, কোথাও অযোধ্যায় প্রত্যাগমনের লীলা । এক স্থানে দেখিলাম, সীতা রন্ধনে ব্যাপৃত। অপর স্থানে কনকময়ী সীতার সহিত রাম অশ্বমেধয়ঞ্জ করিতেছেন । এই সব মঠে বিনাদর্শনীতে দেবদর্শন হয় না। কোন .কোন স্থানে দর্শনীর পরিমাণ নিৰ্দ্ধারিত আছে। স্থামে স্থানে পয়সার জনা যাত্রী অযোধ্যা । xථHA দিগকে কিছু অধিক পীড়ন করা হয়। আমাদের সঙ্গিনী পঞ্জাবী মহিলাদের কথা এ পৰ্য্যন্ত কিছুই বলা হয় নাই। এখানে তাহাদের বিষয়ে দুইচারি কথা না বলিয়া থাকিতে পারিলাম না। ঐদিন মধ্যাহ্লে আমি যখন নীচের একটি ঘরে পাক করিতেছিলাম, সেই সময় ইহারা সরযুস্নান করিয়া ঝটিকাবৎ বেগে পাণ্ডার ঠাকুরবাড়ীতে আসিয়া প্রবেশ করিল। আসিরার সময় দরজায় কপাটের বিষম শব্দ হইল, ক্ষণকালের মধ্যে নীরব দেবমন্দির উচ্চহান্ত ও কলরবে মুখরিত হইয়া উঠিল । ইহারা সংখ্যায় ১৪।১৫টির কম নহে । সকলেই স্ত্রীলোক, একটিমাত্র বৃদ্ধ পুরুষ সঙ্গী। স্ত্রীলোকদের মধ্যে ৪৷৫টি বিধবা, অপরগুলি সধবা, দুইটি ১২।১৩বর্ষবয়স্ক কুমারী। সকলেই গৌরাঙ্গী। কেহই অসুন্দরী নহে, কিন্তু অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মোটামুটি গঠন ও পরিচ্ছদাদি দেখিয়া বোধ হইল, উঠার তেমন ধনী বা সন্ত্রান্ত গৃহের মুহিল। নহে । ঐ সকল রমণী পঞ্জাবের উত্তরাংশের সুদূরপল্লিবাসিনী, নাগরিক সভ্যতার সহিত উল্লাদের কিছুমাত্র পরিচয় নাই। সরলত সত্যধিক, প্রফুল্লতা অস্বাভাবিক বলিলেও অ ভুক্তি হয় না। কথায় কথায় উচ্চহাস্ত ও প্ৰগলভতা। আমি যে ঘরে• পাক করিতেছিলাম, উহার সম্মুখস্থ অঙ্গনের অপরাংশের একটি ঘরের প্রশস্ত বারাগুtয় তিনটি উনুনে উহাদের পাক চড়িল। রমণীরা দেখিতে দেখিতে রুটি সেঁকিয়া পৰ্ব্বতাকার করিল। বৃদ্ধ ডালতরকারি সিদ্ধ করিতে লাগিল। একহাড়ী ডাল ও একত্বাত্নী তপকারি নামিলেষ্ট বালিক ও সধবার উন্থনের চারিদিকে,