পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

も* কাল পরে, উত্তরপশ্চিমপ্রদেশ হইতে জৈনধৰ্ম্মাবলম্বী সোমবংশীয় রাজার থারুজাতিকে বিতাড়িত করিয়া অযোধ্যারাজ্য অধিকার করেন। এই পুরী জৈনদেরও একটি প্রধান তীর্থক্ষেত্র। ২য় তীর্থঙ্কর অজিতনাথ অযোধ্যায় জন্মগ্রহণ করেন। আর কতিপয় তীর্থঙ্কর এখানে জন্মগ্রহণ ও দীক্ষালাভ করেন। সোমবংশীয়দের পর, জৈনমতাবলম্বী ভড়ের অযোধ্যা অধিকার করে। তাহার পর, ১১৯৪ খৃষ্টাব্দে শাহ উদ্দিন ঘোরী কনোজ জয় করিয়া অযোধ্যালুণ্ঠন করেন। তদবধি ইহ মুসলমানের করায়ত্ত হয়। ১৮৫৬ খৃষ্টাব্দ হইতে প্রাচীন রাজ্য ইংরেজরাজের অধিকারে আসিয়াছে। অযোধ্যা রাজবিপ্লব ও ধৰ্ম্মবিপ্লবের একটি লীলাক্ষেত্র। বর্তমান অযোধ্যার মহারাজ শাকদ্বীপী ব্রাহ্মণ। ভারতবর্ষে শাকদ্বীপী ব্রাহ্মণের একটি বিস্তৃত সম্প্রদায় । নানা জনপদে ইহারা নানা নামে অভিহিত হইয়া থাকেন। এস্থলে ইহাদের সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্তের উল্লেখ বোধ হয় অপ্রাসঙ্গিক হইবে না। বহু পুরাণ ও উপপুরাণে শাকদ্বীপী ব্রাহ্মণের বৃত্তাস্ত বর্ণিত হইয়াছে। তন্মধ্যে সাম্বপুরাণে ইহাদের ইতিবৃত্ত বিশেষভাবে উল্লিখিত আছে। আমরা উহা হইতে যৎকিঞ্চিৎ উদ্ধৃত করিলাম। দ্বাপরযুগের শেষে যখন ভগবান শ্ৰীকৃষ্ণ দ্বারকায় রাজত্ব করেন, সেই সময় একদিন দেবর্ষি নারদ দ্বারকার রাজসভায় উপনীত হন । নারদকে দেখিয়া প্রজ্যুম্ন প্রভৃতি কৃষ্ণের সমুদয় পুত্রই অভু্যখান ও প্রণামাদি করিলেন, কিন্তু সাম্ব কিছুই করিলেন না। ইহাতে " নারদ আপনাকে কথঞ্চিৎ অবমানিত ভাবিয়া বঙ্গদর্শন । [ ৬ষ্ঠ বর্ষ, কাৰ্ত্তিক মনে মনে চিন্তা কুরিলেন, সাম্ব বড়ই গতি,\ উহার গৰ্ব্ব খৰ্ব্ব করিতে হইবে। তাহার পর তিনি শ্ৰীকৃষ্ণকে বলিলেন, “ভগবন, আপনার পুত্র সাম্ব রূপবান যুব, তজ্জন্ত আপনার যুবতী পত্নীরা সৰ্ব্বদাই উহার দর্শনাকাজক্ষা করে।” শ্ৰীকৃষ্ণ মুনির কথায় অনাস্থাপ্রকাশ করিয়া বলিলেন, “মুনিবর, আমার পুত্ৰগণের মধ্যে সাম্বই সৰ্ব্বাপেক্ষা বিনীত এবং ধাৰ্ম্মিক । অতএব আপনি তাহার বিষয়ে যাহা বলিতে ছেন, উহাতে আমি বিশ্বাস করিতে পারিলাম না।” নারদ বলিলেন, “ভগবন, আমার কথায় অন্ত বিশ্বাস করিলেন না বটে, কিন্তু একদিন প্রত্যক্ষ হইলে বিশ্বাস করিবেন।” এই বলিয়া নারদ চলিয়া গেলেন, ভগবান শ্ৰীকৃষ্ণ পূৰ্ব্ববৎ নিৰ্ব্বিকারত্বদয়ে দ্বারকানগরীতে অবস্থান করিতে লাগিলেন । একদা বসন্তকাল সমাগত। দিজুগুল নিৰ্ম্মল, উদ্যানসকল বিকসিত কুসুমের গন্ধে আমোদিত। মলয়ানিল মৃদুমন্দ প্রবাহিত হইয়া তরুণ ও তরুণীগণের হৃদয়ে মুখস্পৃহা উৎপাদন করিতেছে। রসালমঞ্জরীর রসাস্বাদনে উন্মত্ত কোকিলগণ কুহুরবে বনভূমি মুখরিত করিয়া তুলিয়াছে। ভ্রমরগণ ঝঙ্কার তুলিয়া মধুপানের নিমিত্ত কুমুম হইতে কুসুমাস্তরে পরিভ্রমণ করিতেছে। এই মনোজ্ঞ সময়ে একদিন অপরাহ্লে ভগবান শ্ৰীকৃষ্ণ উদ্যানভবনের স্বচ্ছ সরসীতে প্রমদাগণসহ জলকেলিতে প্রবৃত্ত হইয়াছেন। রিনীত তনয় সাম্ব উপবনের দ্বারদেশে প্রহরী নিযুক্ত আছেন। এমনসময় দেবর্ষি নারদ উপৃস্থিত হইয়া ভগবানের সহিত সাক্ষাৎ করিতে চাছিলেন। সাম্ব বলিলেন, “মুনিবর, কিছুক্ষণ