পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তম সংখ্যা । ] শিল্পে ত্ৰিমূৰ্ত্তি । అవీవి ও• তাহাদের অনুচরগণের সেবায় নিযুক্ত হইল। জুপিটার হইতে গ্ৰীকৃশিল্প সাজারে নামিল। রোমান্দিগের মধ্যে ধৰ্ম্মবিশ্বাস যে খুব উচ্চদরের ছিল, তা নয় ; সৌন্দর্য্যের উচ্চতর ধারণা গ্ৰাকৃ অপেক্ষ যে অধিক ছিল না, সে কথাও ঠিক ; কাজেই শিল্পের আদর্শ এবং সেই সঙ্গে চরম লক্ষ্যটা ও খাটো হইয়া আসিল । সৌন্দর্য্যের জ্যোতি গিয়া তাঁহাতে ক্রমে পার্থিব ধনৈশ্বৰ্য্যের চাকচিক্যটাই অধিক ফুটিতে লাগিল। ক্রিশ্চিয়ান্ধৰ্ম্মের প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে শিল্প আর একবার মাথা নাড়া দিয়াছিল বটে, তার প্রমাণ র্যাফেলের নিরুপম যিশু ও মাতৃমূৰ্ত্তিসকলে বিদ্যমান। সে সময়ে শিল্পকলা আর একবার ধৰ্ম্মবিশ্বাসে নবজীবন লাভ করিয়া স্বগীয় আলোকে মণ্ডিত হইয়া ধ্যানের প্রভাব, ধৰ্ম্মের প্রভাব ঘোষণা করিল,কিন্তু এই দীপ্তি ক্ষণস্থায়ী, যেমন নিৰ্ব্বাণের পূৰ্ব্বে দীপশিখা ৷ যিশুর অন্তৰ্দ্ধানের সঙ্গে সঙ্গে রোমরাজতন্ত্রের পতন এবং সেই সঙ্গে ক্রিশ্চিয়ান ধৰ্ম্মতন্ত্রের প্রাদুর্ভাব ক্রমেই প্রকাশ পাইতে লাগিল,—সে যেন আর একটা নুতন রোমরাজত্ব ! যিশুর দীনতা, সাম্যভাব এবং শান্তমূৰ্ত্তি ইহার ছিল না; লীজার যেমন, পোপও তেমনি দোর্দগুপ্ৰতাপে নরদেবরূপে রোমসিংহাসনে দেখা দিলেন। শিল্পকলা যিশুর উপাসনা ছাড়িয়া পোপ্রদিগের পদানত হইল এবং শোপের Vaticanনামক রাজপ্রাসাদে পারিষদগিরি করিতে থাকিল। এখানে কথা উঠিতে পারে যে, র্যাফেল এবং তাহার শির তো পোপদিগের আশ্রয়েই প্রতিপালিত ; কিন্তু • এ কথা যেন মনে থাকে যে, র্যাফেলশিল্প পোপাশ্রিত, কিন্তু পোপায়িত নয়। যে রসে. র্যাফেলুশিল্প রসায়িত, সে রস পোপ হইতে আসে নাই, আসিতে পারেও না । সে রস স্বর্গের সুধা,ধৰ্ম্মবিশ্বাসের পুরস্কার। আমরা গ্ৰীকৃশিল্পকলাকে পোপের পারিষদগিরিতে.বসাইজ আসিয়াছি, কিন্তু নলিনীদলগতজলবৎ’মাইনের সৌভাগ্য আজ আছে কাল নাই ; পোপৃদিগের ক্ষমতা বেলান্ত সুৰ্য্যের দ্যায় ধীরে ধীরে অস্ত গেল এবং সেই সঙ্গে নানা রাজতন্ত্র ছোট-বড় ছত্রাকের মত” ইউরোপের দেশে দেশে গজাইয়া উঠিল। গ্রীকৃ শিল্পবেচারা এতদিন যা হোক একটা মহৎ-আশ্রয়ে থাকিয়া কতকটা গাম্ভীৰ্য্য বজায় রাখিয়াছিল, এবার তাহাকে পাকারকমে তোষামোদ আরম্ভ করিতে হইল ; সে রাজা ও রাজপ্রণয়িনীদিগের উপবনসজ্জার ভার পাইল এবং সমস্ত স্বাধীনতা, যাকিছু উচ্চতর লক্ষ্য বিসর্জন দিয়া অপেক্ষাকৃত অল্পশিক্ষিতের কাছে নকল দেখাইয়া এবং ওরি মধ্যে লোকবিশেষের কাছে নকবি করিয়া দিনে দিনে অধঃপাতে গেল। ষোগভ্ৰষ্টের কাছে তপঃসিদ্ধি, আর এই ভ্ৰষ্টশিল্পের চষ্টায় ফললাভের আশা, একইরূপ। কথাটু একটু শক্তরকমের হইল—আধুনিক ইউরোপীয় কলাবিদ্যা হইতে কিছুই শিখিবার নাই, এ কথা কে বিশ্বাস করিবে ? কিন্তু সত্যের খাতিরে বলিতে হইতেছে যে, এ শিল্পচর্চার যতটুকু সুফল, কুফল-উৎপত্তির ভয় "তার শতগুণ। প্রমাণ খুজিতে অধিকদুর যুাইতে হইবে ল', আমরাই তার প্রমাণ এ এই নবশিক্ষার গুণে আমরা কি ফললাভ করিয়াছি, - তাহ দেখিলেই যথেষ্ট। আমরা দেশীয়শিল্পকে উন্নত করিতে পারি নাই, কিন্তু স্থণা করিতে, শিখিয়াছি এবং সাধারণের মনে সেই ঘৃণার