পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম সংখ্যা । ] বঙ্কিমচন্দ্র। ఉ} \రి লোকস্থিতির অনুরোধে ধৰ্ম্মকেও আত্মসমাজের অনুকূলমূৰ্ত্তি গ্রহণ করিতে হয়। এইখানেই আত্মধৰ্ম্ম ও পরধৰ্ম্মে ভেদ আসিয়া পড়ে। যে ধৰ্ম্ম এক সমাজের লোকস্থিতির অমুকুল, সে ধৰ্ম্ম অন্ত সমাজে অমুকুল না হইতে পারে। এইখানে এ কথাটা মনে রাখিতে হইবে যে, ধৰ্ম্মশদের লক্ষ্য কেবল রিলিজন নহে। আমাদের শাস্ত্রে ধৰ্ম্মশদের সংজ্ঞা অীর ও ব্যাপক ; মহিষের অমৃষ্ঠেয় প্রত্যেক কৰ্ম্ম, —দাতনকাঠির ব্যবষ্ঠার হইতে ঈশ্বরোপাসন পর্যন্ত সমস্তই ধৰ্ম্মের অন্তভুক্ত। এই হিসাবে “যাহা ইংরেজের ধৰ্ম্ম, তাহ ভারতবাসীর ধৰ্ম্ম হষ্টতেই পারে না । ইংরেজের প্রাচীন ইতিহাস ও ইংরেজের আধুনিক সমাজতন্ত্র যখন ভারতবর্ষের প্রাচীন ইতিহাস,ও ভারতবর্ষের আধুনিক সমাজতন্ত্রের সহিত এক নহে, তখন উহাদের ধৰ্ম্ম আমাদের পক্ষে পরধৰ্ম্ম। উহাদের খ্ৰীষ্টানির কথা বলিতৈছি না, উহাদের আইনকান্থন, আহারবিহার, চালচলন, আদব-কায়দা, সমস্তষ্ট আমাদের নিকট পরধৰ্ম্ম ; আমাদের ধৰ্ম্মও তেমনি উহাদের নিকট পরধৰ্ম্ম ; এবং বিনা বিচারে ও নি। কারণে একের পক্ষে অন্তধৰ্ম্মগ্রহণ প্রকৃতপক্ষেই ভয়াবহ। স্বধৰ্ম্মে পক্ষপাতী ইংরেজ এ কথা ঠিক বুঝে, এবং উহারা সহজে পরধৰ্ম্ম গ্রহণ করিতে চাহে না ; কিন্তু র্যাহারা নিজের শক্তির উপর নির্ভর না করিয়া নবাৰ সিরাজুদ্দৌলার খামখেয়ালির দমনের জন্য পরের শক্তির উপর নির্ভর করাই শ্রেষ্টমনে করিয়াছিলেন, তাহাদের পৌত্ৰগণ, ও প্রপৌত্রগণ যে পরধৰ্ম্মকে অবলম্বন করিতে আগ্রহ দেখাইবেন, তাহাতে সাক্ষর্য কি? , সৌভাগ্যক্রমে এই পরধৰ্ম্মবৎসল্যের মোহ শীঘ্রই কাটিয়াগিয়াছিল, এবং বঙ্কিমচন্দ্র যখন তাঙ্কার স্বজাতিকে আপুন ঘরে ফিরিবার জন্ত ডাক দিলেন,তখন আমরা আগ্রহের সহিত সেই নিমন্ত্রণ গ্রহণ করিলাম । আজি আমরা আপন ঘরে প্রত্যাবর্তনের জন্ত ব্যাকুল হইয়াছি, বিশবৎসর পূৰ্ব্বেই সেই প্রত্যাবর্তনের ডাক পড়িয়াছিল ; এবং বঙ্কিমচন্দ্রের পথভ্রষ্ট স্বদেশৰাসী সেই ডাকে সাড়া দিতে ঔদাসীন্ত দেখায় নাই। আজি সেই ডাক আরও উচ্চস্বরে পড়িয়াছে, এবং তপস্বী বঙ্কিমচন্দ্র মর্ত্যলোকের, তপস্তার সমাধান করিয়া অদৃষ্ঠ তপোলোক হইতে আমাদিগকে সেই পরিচিতস্বরে আবার ডাকিতেছেন । «for Co. Cox apostle of culture বলিয়া থাকেন । ধৰ্ম্মের সাৰ্ব্বভৌমিক অংশের আলোচনায় প্রবৃত্ত হইয়া বঙ্কিমচন্দ্র সমুদয় বৃত্তির সর্বাঙ্গণ সামঞ্জস্তবিধানকে ধৰ্ম্ম বলিয়া গ্রহণ করিয়াছিলেন। আমরা ধৰ্ম্মের এই সংজ্ঞা স্বচ্ছন্দে গ্রহণ করিতে পারি। পূর্কেই ,বলিয়াছি, সামঞ্জস্তসাধনচেষ্টার নামই জীবন, এবং যখন সমুদয় বৃত্তির সৰ্ব্বাঙ্গীণ সামঞ্জস্তবিধান না ঘটলে বহিঃপ্রকৃতির সহিত অন্তঃপ্রকৃতির পূর্ণসামঞ্জস্য ঘটবার সম্ভাবনা নাই, তখন ধৰ্ম্মই জীবনরক্ষার একমাত্র উপায়-সুৰ্ম্মে রক্ষতি ধৰ্ম্মই মানবজীবনকে রক্ষা করে, কেবল ব্যক্তির জীবন বা বংশের জীবন কেন, সমাজের ੇ 8 ধৰ্ম্মই রক্ষা করে ; এবং যদি কেহ ঐহিক জীবনের উপর পারত্রিক জীবনের রক্ষাকেও ধৰ্ম্মের উদ্দেগু বলিতে চাহেন, তাহার সহিতও আমি আজ রক্ষিতঃ” ।