পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তম সংখ্যা। ] হত্যাবসরে আলিবর্দী যে দুরপনেয় কলঙ্ক সঞ্চয় করিয়াছিলেন, কুলীখার প্রতি ব্যবহারটা তাহারই অমুরূপ, সন্দেহ নাই। ফলত ইহাতে র্তাহার প্রতি সমসাময়িক সকল সমাজের লোকই বীতশ্রদ্ধ হইয়াছিল। উড়িষ্যবিজয়ের পথে মেদিনীপুর ও বালেশ্বর অঞ্চলের জমিদারবর্গ তাহার রসদসরবরাহসম্বন্ধে যে সব বিস্ত্র উৎপাদন করেন, তাহ অকৃতজ্ঞ রাজ্যাপহারীর প্রতি আন্তরিক ঘৃণার পরি চায়ক মাত্র । ময়ূরভঞ্চাধিপ রাজা চক্রাদিপভগ্ন সাধারণ রাজা-জমিদারদের মত কেল্ল গৌণ উপায়ে সেই অধৰ্ম্মের প্রতি স্বীয় বিদ্বেষ প্রকাশ করিয়াই ক্ষান্ত ছিলেন না । সুবর্ণরেখার পরপারে রাজঘাটনামক স্থানে শ্ৰীক্ষেত্রমাত্রীদের জন্ত তাহার অনেক ধৰ্ম্মশালা ছিল। তিনি সেই ধৰ্ম্মক্ষেত্রে তাহার বিপুল• চুয়াড় ও খ গুtইৎ বাহিনীর সমাবেশ করিয়া নবাব আলিবর্দীর গতিরোধ করিতে স্থিরসঙ্কল্প হইলেন। ইদানীন্তনকালে এরূপ ধৰ্ম্মযুদ্ধের কথা আর শোনা যায় না । চতুর্দশ পরিচ্ছেদ। রাণী কৃষ্ণপ্রিয়৷ শৈশবে পিতৃহীন হইয়াছিলেন। র্তাহার অনেকগুলি ভাই-বোন হইয়াছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে কেহই বাল্যকাল উত্তীর্ণ হয় নাই। বিধবা মাতার তিনি একমাত্র অবশিষ্ট সন্তান এবং সম্পন্ন গৃহস্থের ঘরে এমন অবস্থায় যেরূপ হইয়া থাকে, বড় আদরে-যত্নে প্রতিপালিতা। মাতা নারায়ণী দেবী স্থির করিয়াছিলেন,একমাত্র কন্যাকে চক্ষুর অন্তরাল করিবেন না, তাহার মাতৃকুলের এক দুর জ্ঞাতিপুত্রকে ঘরজামাই করিয়া চিরদিন ब्रांश्वनौठ्ठf। vවිඥ්ඤ উভয়কে কাছে-কাছে রাখিবেন । কিন্তু স্বামীর জ্ঞাতিভাইবন্ধুরা এই পরামর্শের বিরোধী হইবেন জানিয়া প্রথমত কাহাকেও তিনি কিছু জানিতে বুঝিতে দেন নাই,— সঙ্কল্প কাৰ্য্যে পরিণত করিবার উদ্দেশে ভিতরেভিতরে সঙ্গোপনে চেষ্টা করিতেছিলেন। নারায়ণী দেবী স্বামীর পরলোকগমনের পর গুহে গোবিন্দজীবিগ্রহের প্রতিষ্ঠা করিলেন। নিত্যসেবার ব্যবস্থায় গৃহস্থালীর কাজ অতিশয় বাড়িয় গেল। বিশেষত সংসারে চাষ ছিল, চাকরবাকর অনেক গুলি । একাকিনী সব কাজ পারিয়া উঠেন না বলিয়া নিজের দূরসম্পৰ্কীয়া এক দরিদ্র বিধবা ভ্ৰাতৃবধূকে তিনি নিকটে জানাইয়া লইলেন। সঙ্গে তাহার একমাত্র পুত্র রাধাচরণ, সে কৃষ্ণপ্রিয়ার চেয়ে তিনবছরের বড় । কৃষ্ণপ্রিয়ীর পঞ্চম বৎসরে রাধাচরণ তাহার অহৰ্নিশি খেলাধূলার সঙ্গী হইল। এদিকে আশ্রিত বিধবাকে নারায়ণী ইতিপূৰ্ব্বে মনের কথা ব্যক্ত করিয়া বলিয়াছিলেন । কাজেই বালকবালিকা পরস্পরকে নাম ধরিয়া ডাকিলে তাহাব সুদূর সম্পর্কের গণ্ডীতে তাহাদিগকে আবদ্ধ করিবার জষ্ঠ্য ব্যস্ত হইলেন না। যে বিরুদ্ধ সম্বন্ধে বিবাহ বাধে, হিন্দুর মেয়ে-আশৈশবের সংস্কার ও শিক্ষার * প্রভাবে তাহ কল্পনারও বাহিরে রাখিতে চায়। রাধাচরণ স্বভাবত কিছু চঞ্চল, আর কৃষ্ণপ্রিয় তাহার ঠিক বিপরীত। এরূপ প্রকৃতির ঘাতপ্রতিঘাতে সচরাচর চঞ্চলেরই জয়লাভ হয়। বালিকা গৃহপ্রাঙ্গণে ইট ও মাটির ছোট ছোট কুটার নিৰ্ম্মাশ্ব, করিয়া পুতুল ও যুটিং থেলিয়া আগে আনন্দলাভ করিত। রাধা-"