পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

θωθ' রাজৰংশ—বাহীদের অস্তিত্বও এখন আমরা কল্পনা করিতে পারি না—ঐ উচ্চদেশে ছন্দ্রবেশু নিরাপদ আবাসস্থান নিৰ্ম্মাণের জন্য কত সহস্ৰ বৎসর হইতে প্রস্তরের উপর প্রস্তর রাশীকৃত করিয়াছেন। ভারতের সৰ্ব্বত্রই যেসব প্রকাও-প্রকাও ধ্বংসাবশেষ সাৰী দেখিতে পাওয়া যায়, তাহার নিকটে আমাদের দেশের ক্ষুদ্র ভূপতিদিগের দুর্গপ্রাসাদাদি কি হাস্তজনক ! , হাতী থপ্‌থপ্‌ করিয়া মন্থরগমনে উপরে উঠিতেছে। মধ্যে মধ্যে তাহার গাত্রবিলম্বিত ঘটিকা হইতে একঘেয়ে মৃদুমধুর ধ্বনি নিঃস্থত হইতেছে। মধ্যাহ্লস্বৰ্য্য হাতীর তলদেশে হাতীর চলন্ত ছায়াচ্ছবি অঙ্কিত এবং মাটর উপর তাহার দোদুল্যমান শুগুটি কালোরঙে চিত্ৰিত করিয়াছে । আদবকায়দার দস্তুর অম্বুসারে দুইজন লোক আমাদের আগেআগে চলিয়াছে এবং রূপালী-মাথাওয়ালা দুইটা লম্ব ছড়ি হন্তে ধারণ করিয়া তন্ত্রাগ্রস্ত ব্যক্তির স্তার অলসভাবে উপরে উঠিতেছে। উপরে উঠতে উঠিতে একএকটা দ্বার আমাঙ্গের সম্মুখে আসিয়া পড়িতেছে ; আমরা প্রাচ্যদেশস্থলভ চিমা-চালে তাহার মধ্য দিয়া চলিয়াছি। দ্বারগুলা—বলা বাহুলা-ভীষণদর্শন ; তাহার উপরে প্রহরীদের ঘর ; গোয়ালিয়ারের সৈনিকেরা পাহার দিতেছে ; কেন না, অতীত-গৌরবের নিদর্শনস্বরূপ বিপুল ভগ্নাবশেষের মধ্যে, পৰ্ব্বতের ঐ উচ্চচুড়ায়, তাহামের রাজা এখন অবস্থিতি করিতেছেন । জামাদের চতুর্দিকে, দুর দিগন্তের অস্পষ্ট পরিধিমণ্ডল ক্রমশ বিস্তৃত্ব হইতেছে। গগন‘লিম্বিত একপ্রকার জন্ম-কুয়াসার নীচে শুদ্ধ क्जा-घि । [ ৬ষ্ঠ বর্ষ, কীৰ্ত্তিক । তরগণের বিচিত্ৰবৰ্ণ যেন ধুসরে বিলীন হইয়াছে। - ফুলিঙ্গবৎ দীপ্যমান ধূলিকণায় পরিষিক্ত ধূসর দিগন্তদেশ ধূসর আকাশে, মিলাইয়া গিয়াছে। সেই আকাশতলে বড়-বড় শিকারি-পার্থী প্রাতঃকাল হইতে আবর্ভের দ্যায় ক্রমাগত ঘোরপাক দিয়া এক্ষণে শ্রাস্তক্লাস্ত-অবসন্ন হুইয়া পড়িয়াছে। শৈলরাশির মধ্য হইতে যেন একটা তপ্তনিশ্বাস উচ্ছসিত হইল ; আকাশে বায়ুর হিল্লোলমাত্র নাই। মধ্যাহ্লস্কর্য্যের প্রচণ্ড কিরণে অভিভূত হইয়া পার্থীরাও নিম্পন্দ্ব ও নিদ্রামগ্ন ; চিল ও শকুনির পাখা ওটাইৱা স্থিরভাবে বসিয়া আছে এবং আমাদিগকে নিরীক্ষণ করিতেছে। গণ্ডোল-নৌকার অবিশ্রাস্ত দোলনের ন্যায় হাতীর চলনভঙ্গীতে স্বামাদের মন ক্রমশ অসাড় ੇ পড়িতেছে ; স্বর্য্যের দ্বনিরীক্ষ্য আলোকে প্রতিহত হইয়া চক্ষু নিৰ্মীলিত হইতেছে ; তাহার পরেই, এই সব ধূসর পদার্থরাশির মধ্যে,–বর্ষণহীন বহুবর্ষের ধুলায় লোহিতীকৃত এই সব প্রস্তররাশির মধ্যে,— সম্মুখের ভূমি ছাড়া, কাছের জিনিষ ছাড়া আমি আর কিছুই দেখিতে পাইতেছি না। প্রথমে চোখে পড়িল একটা জরির পাগড়ি, একটা গুমিল-রঙের বাড়, শাদা কাপড়ে আচ্ছাদিত একটা স্কন্ধ, একটা ছোট তীক্ষ বল্লম ; হিন্দু মাহত হাতীর ঘাড়ের উপর বুদ্ধের স্তায় উপবিষ্ট , তাহার হাতে-অঙ্কুশ । তাহার পর, হাতীর মাথায় জড়ান একটুকরা লাল কাপড়, কালে-ডোরাকাটা . গোলাপী রঙের বৃহৎ কর্ণধুগল ; মাছি ।