পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম সংখ্যা । ] বঙ্কিমচন্দ্র। శ్రీd জন্মিয়াছে। রাজ মনে করিতেছেন, এ আবার কি উপসর্গ উপস্থিত ; আমরা যে দিকে চালাইব, কলের পুতুল সেই দিকে চলিতে বাধ্য,তবে এ সকল লক্ষণের আবির্ভাব কেন ? এ কি সজীবতার লক্ষণ, না কলটা, ক্ষণেকের জন্য বিশ্নড়াইয়া গিয়াছে, তাহারই পরিচয় ? আপাতত তাহারা কল বিগড়াইয়াছে ঠাহর করিয়াই কলমেরামতের চেষ্টা করিতেছেন, বরিশালে দম দিতেছেনু সিরাজগঞ্জে হাতুড়ি টুকিতেছেন, ইত্যাদি। কলটা কিন্তু তাহাতেও সংশোধিতনা হইয়া আরও বিচলিত হইতেছে। যাহাই হউক, উভয়পক্ষে একটু বোঝাপড়া আবখ্যক হইয়াছে। বস্তুতই যদি আমাদের সজীবতা থাকে, তাহ রাষ্ট্রচালককে বুঝাইয়া দিলে উভয়পক্ষেই মঙ্গল হইতে পারে।” এ বৎসর স্বদেশী আন্দোলনে আমরা খুবই যে একটা বীরত্ব দেখাইয়াছি, যাহা দেখিয়া পৃথিবীমৃদ্ধ লোক স্তব্ধ হইয়া যাইবে, তাহ মনে করিয়া আস্ফালনের দরকার নাই। তবে ইহা অস্বীকারের উপায় নাই যে, এবার নির্দয় রাষ্ট্রনিয়স্তার গুপ্ত ছুরিকাগ্রয়োগে বঙ্গজননীর বেদনাবোধ হইয়াছে ও বঙ্গজননী কাতর হইয়া দীর্ঘ উষ্ণশ্বাস পরিত্যাগ করিয়াছেন। সেই দীর্ঘশ্বাসের সম্মুখে কয়েকগাইট ম্যাঞ্চেষ্টারি কাপড় উড়িয়াছে ও পুড়িয়াছে, ও কয়েকবস্ত লিবারপুলের মুন নৌকাডুবিতে নষ্ট হইয়া গিয়াছে। আর বদজননীর ছদ্ধপোষ্য শিশুর গালফুর আদি বুঢ়ীকে রাজপথে লৰিয়াই তাহাৰ্বে খেপাইবার জন্য তাহার কানের । কাছে “বন্দে মাতরম্ চীৎকার করিয়াছে। . হীরার জারি বুড়ীর বাগিক্রিয় বড় প্রণয়' ছিল, লৈ প্রত্যুত্তরে ছেলের পালের বাপাত্ত ক্ষরিত ; কিন্তু এই বুড়ীটি ছদ্মবেশী, ইহার এক বগলে কোতোয়ালের রেগুলেশন লাঠি, আর অন্য বগলে গুর্থার ছুরি লুকান আছে ; কাজেই ছেলের দলের পুরস্কারটা অন্যরূপ হইয়া পড়িয়াছে । © অন্য দেশের ইতিহাসে আমরা যে সকল ব্যাপার দেখিতে পাই, তাহার সহিত তুলনায় বঙ্গজননীর এই শ্বাসত্যাগ খুব একটা বৃহৎ ব্যাপার নহে। কিন্তু আমাদের পক্ষে ইহা তাচ্ছল্য করিয়া উড়াইবার, জিনিষ নহে। ইহাতে সপ্রমাণ করিল যে, আমরা জড়পদার্থ নহি, আমরা সজীবপদার্থ ;—এমন কি, চেতনাবিশিষ্ট সজীবপদার্থ। . জড়পদার্থের সহিত সজীবপদার্থের প্রভেদ এতটাই বেশী যে, বাঙলার ইতিহাসে এই ভেদপ্রতিপাদন বোধ কুরি অভূতপূৰ্ব্ব ঘটনা। আমাদের রাষ্ট্র বিধাতারা আমাদিগকে কলের পুতুল ঠাহর করিয়া আমাদিগকে ঘরের বাহিরে টানিয়া * লইয়া গিয়াছিলেন, আমরা এ বৎসর স্থির করিয়াছি, আমরা যখন সজীবপদার্থ এবং ঘরের বাহিরে যাওয়ায় যখন আমাদের মঙ্গল নাই, তখন আমরা আপন ঘরে ফিরিয়া আসিব। আমাদের সজীবতা জানাইবার জন্যই আমরা আজ ঘরে ফিরিবার উপক্রম করিয়াছি। রাজপুরুষেরা আমাদের সজীবতা স্বীকার করিলেই আমরা কৃতাৰ্থ হইব তদপেক্ষ গুরুতর দুরভিসন্ধি আমাদের নাই। র্তাহাদের শঙ্কিত বা চিন্তিত হইবাবু কোন কারণ নাই ; কৈন না, সজীব হইলেও আমরা পিপীড়া অপেক্ষাও অধম, এবং পপীড়ার: যে দংশনসামর্থ্য আছে,আমাদেরসেটুকুও নাই। আমাদেয় রাজভক্তির কিছুমাত্র অভালুই, এমন