পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৪২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8}e কানে ধরিয়া স্বীকার করিতে বাধ্য করায়, তখন হয় বিদ্রোহ, নয় বিষাদ উপস্থিত হয়— তথন আমাদের সেই পরাভব কেবল রণে ভঙ্গরূপেই পরিণত হয়, তাহাকে কোনো কাজে লাগাইতেই পারি না। যে পরিণামগুলি নিশ্চয় পরিণাম, তাহাদিগকে সহজে গ্রহণ করিবার শিক্ষা কয় নাই বলিয়া কিছুই নিজে ছাড়িয়া দিই না, সমস্ত নিজের কাছ হইতে কাড়িয়া লইতে দিই । সত্যকে অস্বীকার করি বলিয়া পদে পদেই সত্যের নিকট পরাস্ত হইতে থাকি। কাচা আমি শক্ত বেঁটা লইয়া ডালকে খুব জোরে আকর্ষণ, করিয়া আছে, তাহার অপরিণত আঁটির গায়ে তাহার অপরিণত শাস অণটয়া লাগিয়া আছে। কিন্তু প্রত্যহ সে যতটুকু পাকিতেছে, ততটুকু পরিমাণে তাহার বোট ঢিলা হইতেছে, তাহার অাটি শাম হইতে আলগী, সমস্ত ফলট গাছ হইতে পৃথক হইয়া আসিতেছে। ফল যে একদিন গাছের বাধন হইতে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র হইয়া যাইবে, ইহাই তাহার সফলতা—গাছকে চিরকাল আটিয়া ধরিয়া থাকিলেই সে ব্যর্থ । ফলের মত আমাদের ইন্দ্রিয়শক্তিও একদিন সংসারের ডাল হইতে সমস্ত রস আকর্ষণ করিয়া লইয়া শেষকালে এই ডালকে ত্যাগ করিয়া ধূলিসাৎ হয়। ইহা জগতের নিয়মেই হয়, ইহার উপরে আমাদের হাত নাই। কিন্তু ভিতরে যেখানে আমাদের স্বাধীন মনুষ্যস্থ, যেখানে আমাদের ইচ্ছাশক্তির লীলা, সেখানকার পরিণতির পক্ষে ইচ্ছাশক্তিই . একটা প্রধান শক্তি। “এঞ্জিনের বয়লারের গায়ে যে অপমান যন্ত্রটা আছে, তাহার পারা बछवश्ववि । ৬ষ্ঠ বৰ অগ্রহাণ। স্বভাবের নিয়মেই ওঠে বা নামে, কিন্তু ভিতরের আগুনের আঁচটাকে এই সঙ্কেত বুঝিয়া বাড়াইব কি কমাইব, তাহা এঞ্জিনিয়ারের ইচ্ছার উপরেই নির্ভর করে। আমাদের ইন্দ্রিয়শক্তির হ্রাসবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের প্রবৃত্তির উত্তেজনা ও কৰ্ম্মের উৎসাহকে বাড়াইব কি কমাইব, তাহ আমাদের হাতে। সেই যথাসময়ে বাড়ানেকমানোর দ্বারাতেই আমরা সফলতালাভ করি । , পাকা ফলে একদিকে বোটা দুৰ্ব্বল ও শাস আলগা হইতে থাকে বটে, তেমনি অন্তদিকে তাহার অর্ণটি শক্ত হইয়া নূতন প্রাণের সম্বল লাভ করিতে থাকে। আমাদের মধ্যেও সেই হরণ-পূরণ আছে। আমাদেরও বাহিরে হ্রাসের সঙ্গে ভিতরে বৃদ্ধির যোগ আছে। কিন্তু ভিতরের কাজে মামুষের নিজের ইচ্ছা বলবান বলিয়৷ এই বৃদ্ধি, এই পরিণতি আমাদের সাধনার অপেক্ষ রাখে। সেইজন্তই দেখিতে পাই, দাত পড়িল, চুল পাকিল, শরীরের তেজ কমিল, মানুষ তাহার আয়ুর শেষপ্রান্তে আসিয়া দাড়াইল, তৰু কোনোমতেই সহজে সংসার হইতে আপন বোট আলগা হইতে দিল না—প্রাণপণে সমস্ত আঁকুড়াইয়া ধরিয়া রহিল, এমন কি, মৃত্যুর পরেও সংসারের ক্ষুদ্র বিষয়েও তাহার ইচ্ছাই বলবান রহিবে, ইহা লইয়া জীবনের শেষমুহূর্ত পৰ্য্যন্ত চিন্তা করিতে লাগিল। আধুনিককাল ইহাকে গৰ্ব্বের বিষয় মনে করে, কিন্তু ইহা গৌরবের বিষয় নহে। F. ত্যাগ করিতেই হইবে এবং ত্যাগের দ্বারাই আমরা লাভ করি। ইহা জগতের