পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৪৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম সংখ্যা।] "বাখরখার সহায়তায় তাহার ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি সংযত করিতে উষ্ঠত হইয়াছেন, তখন আর আশ্রয়দাতা চিরপ্রতিপালক মুর্শিদকুলীর প্রতি কৰ্ত্তব্যজ্ঞান অটল রাখিতে পারিলেন না। আলিবর্দী বাঙলার সিংহাসন অধিকার করিলে সৰ্ব্বাগ্রে তিনি মানসচক্ষে দেখিতে পাইলেন, একটু স্থির হইয়া বসিতে পারিলেই নূতন নবাব মুর্শিদকুলীর উচ্ছেদসাধন করিবেন। অল্পজলের মাছ হইলে উড়িষ্যার এই কৌশলী দেওয়ান গিরিয়ার যুদ্ধাবসানে নবাবসাহেবের শরণাপন্ন হইতেন। কিন্তু তিনি কণ্টকের দ্বারা কণ্টকোৎপাটনের অভিসন্ধি স্থির করিয়া উৎকলে ফিরিয়া গেলেন । জগন্নাথবিগ্রহ পুরীমন্দিরে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করিয়া মুর্শিদকুলী সমগ্র হিন্দুসমাজের যে সাধুবাদ ও শ্রদ্ধা অর্জন করিয়াছিলেন, প্রভুর অজ্ঞাতসারে মীরহবীব তাহ কাজে লাগাইবার এই দিব্য সুযোগ উপেক্ষা করিলেন না । ইহার ফলে মহারাষ্ট্রীয় সেনাপতি রঘুজীর সহিত সঙ্গোপনে তাহার অনেক চিঠিপত্রবিনিময় হইল। বাঙলায় বর্গীর হাঙ্গামার মূল কথা ইহাই। এদিকে নবাব আলিবন্দীখাও নিশ্চিন্তু ছিলেন না। উড়িষ্যার নায়েবনাজীম নামে মুর্শিদকুলী হইলেও’ কাৰ্য্যত মীরহবীবই সৰ্ব্বেসৰ্ব্ব, ইহা জানিয়া পুৰ্ব্বাহ্লে তিনি এক কৌশল অবলম্বন করিলেন। জ্যেষ্ঠ ভ্রাতুপুত্র এবং জামাত নোয়াজিম আহাম্মদ ঢাকার নায়েবরাজম হওয়ার কয়মাস পরে মুর্শিদাবাদ ब्रारेबमीझर्न। e২১ দরবারে প্রচার হইল যে, ভূতপূৰ্ব্ব নায়েৰনাজীমের আমলে নায়েব-দেওয়ান বিস্তর তহবিল তছরূপত করিয়াছে। অমনি মুর্শিদকুলীর প্রতি আদেশ হইল, মীরস্থবীবকে “ফেলফৌর” হিসাবনিকাশের জন্ত ঢাকায় श्रृंjठांन झग्न । দুৰ্দ্দানাবেগম এই তহবিল-তছরূপাতের কথায় সম্পূর্ণ বিশ্বাস করিয়াস্বামীকে বুঝাইলেন যে, তাহা অসম্ভব" নহে। মুর্শিদকুলী বেগমের সঙ্গে অনেক তর্কৰিতর্ক করিলেন। শেষে র্তাহাকে স্বীকার করিতে হইল যে, সরকারের “নিমকহালাল হইলে ‘নকুরিয়া মীর হবীবের পক্ষে দেখিতে দেখিতে, প্রভূত ধনরত্বের অধিপতি হওয়া সম্ভব হইত না। দেওয়ান প্রভুকে কিছুতে সম্বাইতে পারিলেন না যে, ইহা তাহাকেই পদচ্যুত করার প্রথম “চাল”মাত্র এবং উর্ণনাভের লুতাতত্ত্ববিদ্যাস ক্রমশ ঘনীভূত হইয়া উঠিবে। & যাহা হউক, এই সময় হইতে পুৰ্ব্বের সে প্রতিবন্ধন ক্রমশ শিথিল হইয়া আসিতেছিল। মীরহৰীৰ হিসাবনিকাশের কাগজ প্রস্তুতের ভাণ করিয়া ঢাকাগমন বিলম্বিত করিতে লাগিলেন। এদিকে আলিবর্দীর রাজত্বকাল একবৎসর পূর্ণ হইল। মীরহীবকে করায়ত্ত করা প্রায় অগাধ বুঝিয়া নূতন নবাব তখন অসহিষ্ণু হইয়৷ উঠিলেন। কুলীধাকে স্বতঃপর তিনি যে সংবাদ পাঠাইয়াছিলেন, তাহার উল্লেখ ইতিপূর্বে করিয়াছি। ক্রমশ ।