পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৪৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবম সংখ্যা । ] একলক্ষ অশ্বারোহী ও ষষ্টিসহস্র হস্তীতে পরিণত হয়। ত্রিশ বৎসরের পর (৬৪৩ খৃঃ অঃ ) হর্ষ বঙ্গোপসাগরের পশ্চিমকুলে অবস্থিত আধুনিক গঞ্জামপ্রদেশ পর্য্যন্ত অধিকার বিস্তার করেন। কিন্তু ( ৬২ • খৃঃ অঃ ) দাক্ষিণাত্যাধিপতি চালুক্যবংশোদ্ভব দ্বিতীয় পুলিকেশী মহারাজ-হৰ্ষ-কর্তৃক আক্রান্ত হইয়া বিজয়লাভ করায় ও হর্ষের নিকট নতিস্বীকার না করায় দক্ষিণাপর্থে স্বীয় প্রাধান্ত অক্ষুণ্ণ রাখিতে সমর্থ হইয়াছিলেন । স্বতরাং নৰ্ম্মদার দক্ষিণতারে হর্ষের অধিকার বিস্তুতিলাভ না করায়, নৰ্ম্মলা ও তাহার সমরেখা হর্ষের বিস্তৃত সাম্রাজ্যের দক্ষিণসীমারূপে ও নেপালজয়ে হিমালয়ই উত্তরসীমারূপে নির্দিষ্ট হয় । ক্রমে অপরাপর প্রবল রাজ্যগুলিও র্তাহার অধীনতা স্বীকার করে । কাশ্মীররাজ বুদ্ধদন্ত-অর্পণে, বলভীমহীপাল হর্ষের অমুযাত্রিকের পদস্বীকারে ও কামরূপাধিপতি নতিস্বাকারে বাধ্য হইয়াছিলেন। বিজিত রাজ্যগুলির শাসনভার তত্ত্বদেশীয় পরাজিত নরপতিবর্গের হস্তেই দ্যস্ত হইত। মহারাজ হর্ষ আভিজাত্যাভিমানীদিগের উপরই সমস্ত ভার অর্পণ করিয়া নিশ্চিস্ত না থাকিয়া, রাজকীয় সমস্ত কাৰ্য্যই স্বয়ং পৰ্য্যবেক্ষণ করিতে চেষ্টা করিতেন এবং এইজন্ত বৰ্ষা ব্যতীত সমস্ত ঋতুতেহ বিস্তৃত সাম্রাজ্যের এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পরিভ্রমণ করিয়া দুষ্কৃতের দণ্ড ও স্বকৃতের পুরস্কার করিয়া বেড়াইতেন। বীল বলেন, সেকালে বস্ত্রনিৰ্ম্মিতগুহ-( তাবু - নিৰ্ম্মাণগুণালী আবিষ্কৃত না হওয়ায় রাজ্যপরিদর্শনসময়ে রাজার বাসোপযোগী ভবন rয় ও বৃক্ষশাখা দ্বারা নিৰ্ম্মিত ও ব্যব হৰ্ষবৰ্দ্ধন। ßstá হারান্তে অগ্নিপ্রদানপূর্বক ভস্মসাৎ কয়৷ इझे उठ । রাজ্যশাসন ও শিক্ষাবিষয়ক স্বব্যৰস্থা।– হিউয়েন-সাং ও তাহার পূর্ববর্তী চীনপরিব্রাজক ফা-হিয়ান, ভারতীয় শাসনপ্রণালী যে সম্পূর্ণ লোকহিতকারিতার উপরই সস্থাপিত, তাহ মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করিয়া গিয়াছেন । প্রাচীনযুগের দুষ্মন্ত-দিলীপাদির দ্যায় মহারাজাধিরাজ শ্ৰীহৰ্ষও উৎপন্ন শস্তের ষষ্ঠভাগমাত্র রাজস্বস্বরূপ গ্রহণ করিতেন । রাজকুৰ্ম্মচারীদিগের বৃত্তি ভূমিদানদ্বারাই নিৰ্দ্ধারিত হইত, কিন্তু পূর্ববিভাগের জন্ত স্বতন্ত্র বেতন নির্দিষ্ট ছিল । তাহার সময়ে প্রজাদিগের দেয় কর অতি অল্প ও সাধারণ লোকহিতকর কাৰ্য্যের জন্য গৃহীত শ্রমও অতি সামান্ত থাকায়, প্রকৃতিপুঞ্জ পরমসুখে । কালাতিপাত করিত। রাজার দানে সৰ্ব্বধৰ্ম্মাবলম্বী লোকই তুল্য অধিকারী বিবেচিত হইত। হিউয়েন-সাং পথে একাধিকবার লুষ্ঠিত হওয়ায় যদিও অনুমিত হয়, সেসময়কার পথ ফা-হিয়ানের স্থায় পথিকের পক্ষে নির্তাঙ্ক নিরাপদ ছিল না, তথাপি গুরুতর-অপরাধকারীর সংখ্যা যে নিতান্ত বিরল ছিল, তাহারু ভূরি-ভুরি প্রমাণ পাওয়া যায়। সাধারণ অপরাধের জন্ত কারাদণ্ডই বিহিত ছিল, গুরুতর অপরাধের কঠিনদণ্ডস্নক্কণ নাসিক, কর্ণ ও হস্তপদাদি ছেদনের কঠোর বিধানও বিদ্যমান ছিল । পিতামাতার প্রতি অবজ্ঞাপ্রদর্শনও নিৰ্ব্বাসনোপযোগী অপরাধ ৰলিয়া বিবেচিত হইত। . ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অপরাধসমূহ অর্থদণ্ডেই প্রশমিত হইত। জল, অগ্নি, তীয় বা বিষের সাহায্যে বৈবিচারেরও প্রচলন