পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৪৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মুম্বন সংখ্যা । । রাক্ততপস্বিনী । 8&S কাদে নানা গল্প জুড়িয়া দিত, কিন্তু মার পদাঙ্গুলির অবকাশপথে করসঞ্চালন করিতে আরম্ভ করিয়াই কিসের স্পর্শে ভয়ে লাফাইয়া উঠিত । সে আর কিছুই নহে, দেখা যাইত মহারাণী ছোট ছোট কদলীপত্রের নল প্রস্তুত করিয়া অঙ্গুলিতে লুকাইয়া রাখিয়াছেন। কাদো তাহ “কেল্লা” ছাড়া আর কিছু হইতে পারে, এমন ভাবিতেই পারিত না। এই জীববিশেষের বিভীষিকার সঙ্গে তাহার আরো দুইএকটা উপসর্গ ছিল, যেমন তোৎলামি, এবং এক কথা বলিতে গিয়৷ নিজের অজ্ঞাতে অন্ত কথা বলা। মহারাণীকে সচরাচর সে বলিত “মা জননী।” কিন্তু যদি বলিতে ইচ্ছা করিত “মার শ্রীচরণে প্রতিপালিত হইতেছি,” বলিয়া ফেলিত “মা আমার শ্ৰীচরণে” ইত্যাদি । তাহার, এই সব কথা শুনিতে ও বলিতে তিনি ভালবাসিতেন । একদিন এক আত্মীয়া বলিতেছিলেন যে, ম৷ আগে আমোদ করিয়া কাদোর পদধূলি লইতেন । মা হাসিলেন, কাদে বলিল, “তাই ত আমার কপালে এত দুঃখু।” সেই আত্মীয়া মহারাণীকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন, “বাস্তৃবিক কর্ত, আপনি কাশী-প্রয়াগের কথা ছাড়িয়া কেন কাদোকে পূজা করেন না ?” ম৷ হাসিলেন, বলিলেন, “সত্য কাদে, তুমি কোন উচ্চস্থানে বসিয়া থাক ?” এই সব কথায় তাহার মূৰ্ত্তি বড় হাস্যজনক হইয় উঠিত। পিত্রালয়ে গেলে মহারাণী ঠিক বালিকার মতই ব্যবহার করিতেন। একদিন সেখানে ঐাতে তাহার কাছে বসিয়া আছি, ভূত্য • আসিয়া কয়জনের হাজির জানাইল । তাহার শরীর তখন অনুস্থ, কবিরাজমহাশয়ও দেখিতে আসিয়াছিলেন । সহজে চিকিৎসকের নিয়মাধীন হইতে তিনি কখন -ভালবাসিতেন না, ইহা পূৰ্ব্বে বলিয়াছি । তৃত্য ত্ৰৈলোক্যকে বলিলেন, “আমার বিরকু করিও না। দরবারের কথা এ বাড়ীতে কেন ?” আর একদিন পিত্ৰালয় হইতে ফিরিয়া হাসিতে চাসিতে মা গল্প করিতেছিলেন যে, 'ও বাড়ী গিয়া কামরাঙা, আমড়া ও হরিফল খাইয়াছিলেন । হাস্তের উদ্দেশু, রাজবাটতে অমুখের সময় এ স্বাধীনতা থাকার সম্ভাবনা ছিল না! আমায় বলিলেন, “হরিফল তুমি বুঝিবে না। তোমাদের দেশে নাকি নেওয়ার বলে !” আমি সুধাইলাম, তিনি জানিলেন কিরূপে ? মা উত্তর করিলেন, “সে-বার কলিকাতায় গিয়া কুরুর ( ও-বাড়ীর কোকনের ) হাম হইয়াছিল। প্রতিবেশিনী কয়জন বৃদ্ধ আসিয়া উহারই ডাল দিয়া ঝাড়িতে বলিয়াছিল। প্রথমে বুঝিতে পারি নাই; পরে বুঝিয়ছিলাম।” আমি বলিলাম, "মামুদের বাসায় একটা আমড়াগাছ আছে।” মা জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেমন, তার আমড়া মিষ্ট?” আমি হাসিলাম—“তা ত বলিতে পারি না।” মা ও হাসিলেন । সেদিন চারি-অানির বাড়ীতে ত্ৰৈলোক্যকে দিয়া মহারাণী কতকগুলি শাকসবজী পাঠাইয়াছিলেন। ত্ৰৈলোক্য ফিরিলে কৌতুহলে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি কি জিনিষ দেওয়া হইল, কি তচ্ছার রলিলেন”, ইত্যাদি। লেফটেনান্টু * গভর্ণর টম্সন্সাহেবের রাজশাহীপরিদর্শনের কিছুদিন পূৰ্ব্বের રેવા ! . পিতৃদেব তখন পেনশন লইয়াছেন। আমরা শুনিয়াছিলাম, রাজার মৃত্যুকালে তিনি তখায়"