পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৪৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ఆశి ম্যাজিষ্ট্রেট-কলেক্টর ছিলেন। মহারাণী বলিতেছিলেন, “ইনিই যদি তিনি হন, তবে আমার কাছে র্তাহার কতকগুলি পত্র আছে। এই সাহেবই চেষ্টা করিয়াছিলেন, যাহাতে বিষয় কোর্ট অব ওয়ার্ডসে না যায়। তিনি আমাদের কথা সব জানেন। যদি জিজ্ঞাসাপত্র করেন, তবে এমন পুরাণ লোক ষ্টেটে এখন কেহ নাই যে, উত্তর দিতে পারে। অবশ্য দেওয়ানজি সব' জানেন।” আমি সেই কাগজপত্রগুলি একবার দেখিতে চাহিলাম। কিন্তু সেদিন মোহর ও পুরাতন , কাগজাদির রক্ষক ঈশান সেন মহাশয় না আসায় দেখা হইল না । বেলা অধিক হইল, আমরা উঠিলাম। মাও আমাদের সঙ্গে হলে আসিলেন । সিড়িতে কাদে আমায় বলিতেছিল, "আমায় কতকগুলি আমড়া দিবেন ত?” মা শুনিয়া তাহার সঙ্গে বালিকার মত রহস্তে প্রবত্ত হইলেন । ঐ বৎসর শ্রাবণমাসের শেষে হঠাৎ কুমারে: ইচ্ছা হইল, মহারাণীমাতাকে সঙ্গে লইয়াঁ শ্ৰীবৃন্দাবন যাত্রা করিবেন। মা সে তীর্থ পূৰ্ব্বেই দর্শন করিয়াছিলেন, তাহা ছাড়া, কতকগুলি কারণে সহসা সেভাবে পর্যটনে বাহির হওয়া বাঞ্ছনীয় জ্ঞান করেন নাই। কিন্তু কুমারকে বুঝাইয়-স্বরাষ্টয়া নিবৃত্ত করিতে পারিতেছিলেন ন.। কথাটা ২৪ দিনে প্রকাশ হইলে তার আশ্রিতদের কেমন আশঙ্কা জন্মিল, তিনি শ্ৰীবৃন্দাবনে বাস করিতে চলিলেন, আর ফিরিবেন না। তাহার র্তাযুকে সহস্র প্রকারের প্রশ্ন করিয়া এবং কাদিয়া-কাটিয়া আকুল করিয়া তুলিল। , কাদোও কাদিতেছিল, কিন্তু তাহার ভাষা बन्नझर्श्वन ।. [೬ಕಿ ,ಗಿ! মনের ভাবপ্রকাশে বাদ সাধিতেছিল। মা না হাসিয়া থাকিতে পারিলেন না, বলিলেন, “ঘোর দুঃখেও তোমার কথায় হাসি পায় !" অবগাহনস্নান চিরদিন মার বড় প্রিয় ছিল । গঙ্গাসাগরস্বানে গিয়া কয়দিন প্রথামত আত্মীয়স্বজনদের স্মরণ করিতে করিতে এত ডুব দিয়াছিলেন যে, তাহাই ঠাহার স্বাস্থ্যভঙ্গের প্রথম কারণ বলিয়া অনুমিত হয় । ৫ বড় অসুখের সময় এই স্নান বন্ধ করিতে চেষ্টা করিয়াও চিকিৎসকমহাশয়েরা সৰ্ব্বদা সফলমনোরথ হইতেন না । কবিরাজের হাত দেখা শেষ হইলেই দাসী তার শিক্ষামত বলিত, “আজ স্নান করিবেন ?” কবিরাজমহাশয় বারংবার নিষেধ করিয়া উত্তর পাইতেন, “গরমজলে আজ স্নান করিব, কাল আর করিব না।” ' তার অসুস্তাবস্থায় একদিন শুনিলাম যে, মা আজ পুষ্করিণীতে স্নান করিবেন। আমি বলিলাম, “উহাতে অসুখ করিবে ত?” মা সে কথা হাসিয়া উড়াইলেন । চাকরাণীরা বলিতে লাগিল, “অনেকক্ষণ জলে থাকা হয়, সহজে মা উঠিতে চান না।” মা বলিলেন, “বেশ ত আমোদ, জলে খুব আরাম পাই। বোধ হয়, জলের উপর বেশ ঘুমান" যায় ।” - একদিন বধুরাণীর অলঙ্কারগুলি আমরা সকলে দেখিতেছিলাম। মহারাণীমাতার এক ঠাকুরাণীদিদি তাহা দেখিতে চাহিলেন । আমি তাহাকে বলিলাম, “দেখুন, আপনাদের সময় এ সব ছিল না। দেখুন, দেখিয়া জ্ঞাবার এখনকার বউ হইতে সাধ যায় কি না ?” তিনি সে সব দেখিয়া চলিয়া যাইতেছিলেন।