পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম সংখ্য। ] · দুর্ভিক্ষপীড়িত ভারতে। 86# আরোহণ করিয়াই তিনি এই বৃহৎ মন্দিরের নিৰ্ম্মাণকাৰ্য্য আরম্ভ করাইয়া দেন । এই মহারাজা সরোবরের উপরে আরও দুইটি মন্দির নিৰ্ম্মাণ করান। - উহাদের নিৰ্ম্মাণে ২৪বৎসর •লাগে । উদঘাটন-অনুষ্ঠানের সময়, যখন আমাদের দেবতার বিগ্ৰহ মন্দিরের মধ্যে স্থাপিত হয়, সেই ১৭০৮ সালে, পাশ্ববৰ্ত্তী অনেক রাজারাজড়া . অমুচরবর্গের সহিত মহাসমারোহে এখানে . আসিয়াছিলেন ;— উহাদের সঙ্গে বিস্তর হাতী অসিয়াছিল।...” ঐ দুই ভায়ের মধ্যে একজন এইরূপ আমার নিকট বর্ণনা করিল। তখন বেলা দ্বিপ্রহর,— সমস্ত নিস্তব্ধ ; পান্থশালীর ভিতরে আধো-আধো অন্ধকার ; –সমস্ত দরজা-জান্‌ল বন্ধ ; রৌদ্র, মাছি, শুষ্ক বাতাস, জুর্ভিক্ষের বাতাস, কিছুই ভিতরে প্রবেশ করিবার জে৷ নাই। উদয়পুরের মন্দিরাদিসম্বন্ধে, পৌরাণিক সমস্ত দেবদেবীর সম্বন্ধে, ইহাদের অগাধ পাণ্ডিত্য ; কিন্তু মনুষ্যের অনন্ত আশার কারণ কি—পরলোকসম্বন্ধে উহাদের আধ্যাত্মিক দৃষ্টি কিরূপ এ সমস্ত বিষয় প্রশ্ন করায় উহার যে উত্তর করিল, তাহা হইতে আমার কিছুই বোধগম্য হইল না ; তৎক্ষণাৎ যেন আমাদের পরস্পরের মধ্যে সমস্ত সংস্রব চলিয়া গেল ; আমাদের আত্মা যে একজাতীয়, তাহা যেন আর অনুভব করিতে পারিলাম না। আমাদের মধ্যে যেন একটা তমিস্র রজনীর যবনিক্ল পড়িয়া পরস্পরকে বিচ্ছিন্ন করিয়া লিী পুরোহিতসম্প্রদায়ের অধিকাংশ লোক যেরূপ সচরাচর হইয়া থাকে, উহারাও সেইরূপ দিব্যদর্শী, কিন্তু আবার সেইরূপ সরলমতি ; এই দুই পুরোহিত প্রতিদিনই আমার" জন্য কিছু নী-কিছু সাদাসিধ, উপহার লইয় আইসে,—কখন ফুল, কখন উহাদের ধরণে প্রস্থত সামান্ত মিষ্টান্ন। উহার খুব ভদ্র ও মধুরপ্রকৃতি। তথাপি আমাদের মধ্যে যেন একটা আকাশ-পাতাল ব্যবধান । * উহার আমার প্রতি যথেষ্ট সন্মানপ্রদর্শন করে, কিন্তু সেই সঙ্গে বর্ণভেদগত অপরিহার্য্য একটু ঘৃণার ভাবও যেন মিশ্রিত। রক্তমাংসকলুষিত যে সব খাদ্যে আমি পুরুষানুক্রমে অভ্যস্ত, সেই কদৰ্য্য খাদ্যসামগ্ৰী উহার প্রাণান্তেও ভক্ষণ করিবে না ; এমন কি, আমার হস্ত হইতে জলপাত্রও গ্রহণ করিবে না ; শুধু তাহা নহে, আমার সমক্ষে কোন-কিছু আহার করা কিংবা পান করাও উহার কলঙ্কের বিষয় মনে করে ; —সে কুলঙ্ক কিছুতেই ক্ষালিত হইবার নহে r অন্তদিন যে সময়ে উহারা আইসে, আঙ্গ প্রাতে তাহার কিছু পুৰ্ব্বে আসিয়া আমার ঘরের দরজা খুলিয়া ভিতরে প্রবেশ করিল ;– . সেই সঙ্গে সুৰ্য্যের জলন্ত কিরণচ্ছটা, একুরাশি উড়ন্ত ধূলা, অগ্নিকুণ্ডবং আগুনের একট-তপ্তনিশ্বাসও প্রবেশ করিল। আজ উহাদের একটা উৎসবদিন,—এই কথা আমাকে জানাইতে আসিয়াছে। আজ উহারা আমার নিকট আর আসিতে পারবে না ; স্থৰ্য্যাস্তের পর,ইচ্ছা করিলে আমি উহাদের নিকট বাইতে পারি;—মন্দিরের প্রথম ঘেরটির মধ্যে গেলে উহাদের সহিত আমার সাক্ষাৎ হইতে পারবে, ইত্যাদি। * & এখানে উৎসবারি সমঃ বেরূপ মালা লোকে গলায় পরে, সেইরূপ মালা উহার ‘উৰা কোনরহস্যেরই ব্যাখাকরিতে পারেনা। আমাকে দিয়া গেল। এই মুকুট জুই