পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৫০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশম সংখ্যা। ] ৰিশ্বসাছিভ্য। {méማ বিকৃত দর্পণে ছোট জিনিষ বড় হইয়া দেখা দেয় এবং তখনকার সাহিত্যে মানুষ আপনার ছোটকেই বড় করিয়া তোলে—আপনার কলঙ্কের উপরেই স্পৰ্দ্ধার সঙ্গে আলো ফেলে । তখন কলার বদলে কৌশল, গৌরবের জায়গায় গৰ্ব্ব এবং টেনিসনের আসনে কিল্লিঙের আবির্ভাব হয়। 象 কিন্তু মহাকাল বসিয়া আছেন। তিনি ত সমস্তই ছাকিয়া লইবেন । র্তাহার চালুনির মধ্য দিয়া যাহা ছোট, মাহা জীর্ণ, তাহা গলিয়৷ ধূলায় পড়িয়া ধূলা হইয়া যায়। নানা কাল ও নানা লোকের হাতে সেই সকল জিনিষই টেকে,-যাহার মধ্যে সকল মানুষই আপনাকে দেখিতে পায় । এমনি করিয়া বাছাই হইয়া যাহা থাকিয়া যায়, তাহা মামুষের সৰ্ব্বদেশের সর্বকালের ধন । এমনি করিয়া ভাঙিয়া গড়িয়া সাহিত্যের মধ্যে মানুষের প্রকৃতির, মানুষের প্রকাশের একটি নিত্যকালীন আদর্শ আপনি সঞ্চিত হইয়া উঠিতেছে। সেই আদর্শই নুতন যুগের সাহিত্যেরও হাল ধরিয়া থাকে । সেই স্তাদর্শমতই যদি আমরা সাহিত্যের বিচার করি, তবে সমগ্র মানবের বিচারবুদ্ধির সাহায্য লওয়া হয় । এইবার আমুর আসল কথাটি বলিবার সময় উপস্থিত হইয়াছে ; সেটি এই— সাহিত্যকে দেশকালপাত্রে ছোট করিয়া দেখিলে ঠিকমত দেখাই হয় না। আমরা যদি এটুটে বুঝি যে,সাহিত্যে বিশ্বমানবই আপনাকে প্রকাশ করিতেছে, তবে সাহিত্যের মধ্যে আমাদের যাহা দেখিবার, তাহা দেখিতে • গাইব । যেখানে সাহিত্যরচনায় লেখক উপলক্ষ্যমাত্র না হইয়াছে, সেখানে তাহার লেখা নষ্ট হইয়া গেছে। যেখানে লেখক নিজের ভাবনায় সমগ্র মামুষের ভাব অনুভব করিয়াছে, নিজের লেখায় সমগ্র মামুষের বেদন প্রকাশ করিয়াছে, সেইখানেই তাহার লেখা সাহিত্যে জায়গা পাইয়াছে । তবেই সাহিত্যকে এইভাবে দেখিতে হইবে যে, বিশ্বমানব রাজমিন্ত্রি হইয়া এই মন্দিরটি গড়িয়া তুলিতেছেন ; লেখকের নানা দেশ ও নানা কাল হইতে আসিয়া তাহার মজুরের কাজ করিতেছে। সমস্ত ইমারতের প্ল্যান্টা কি, তাহা আমাদের কারো সামনে নাই বটে, কিন্তু যেটুকু ভুল হয়, সেটুকু বারবার ভাঙা পড়ে ;–প্রত্যেক মজুরকে তাহার নিজের স্বাভাবিক ক্ষমতা খাটাইয়া নিজের রচনাটুকুকে সমগ্রের সঙ্গে খাপ খাওয়াইয়া সেই অদৃপ্ত প্ল্যানের সঙ্গে মিলাইয়া যাইতে হয় ; ইহাতেই তাহার ক্ষমতা প্রকাশ পায় এবং এইজন্তই তাহাকে সাধারণ মজুরের মত কেহ সামান্ত বেতন দেয় না, তাহাকে ওস্তাদের মত সম্মান করিয়া থাকে। " আমার উপরে যে আলোচনার ভার দেওয়া হইয়াছে, ইংরেজিতে আপনার তাহাকে Comparative Literature =Ifnfratrs= | বাংলায় আমি তাহাকে বিধুসাহিত্য বলিব । কৰ্ম্মের মধ্যে মানুষ কোন কথাবলিতেছে ? তাহার লক্ষ্য কি, তাহার চেষ্টা কি, ইহা যদি বুঝিতে হয়, তবে সমগ্র ইতিহাসের মধ্যে মানুষের ভভিপ্রায়ের অনুসরণ করিতে হয়—আকবরের রাজত্ব বা গুজরাটের ইতিবৃত্ত বা এলিজাবেথের চরিত্র, এমন করিয়া আলাদা-আলাদা দেখিলে কেবল খবর-জানার কৌতুলনিবৃত্তি হয় মাত্র। এ জানে,জা