পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৫১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& 98 ৰজজশন । ['৬ষ্ঠ বর্ষ, भाषा চরিত্রের বিশেষত্ব ছিল, তাহা তাহার একেবারে ছিল না। যাহা হউক, চিরদিন তিনি ষ্টেটের হিতাকাজক্ষী ছিলেন এবং শেষবয়সে পেনশন লাভ করিয়া কাশীতে বাস করিতেন । বালবিধবা মহারাণীমাতার ধৰ্ম্মান্থরাগ যাহাতে অমুদিন বৰ্দ্ধিত হয়, পিতা ভৈরবনাথের স্বর্গারোহণের পর এই ঘোর বৈষয়িক অথচ গোড়া ব্রাহ্মণবৃদ্ধের সেই চেষ্টা ও ষত্ব ছিল । মা সেজন্ত যখন-তখন কৃভজ্ঞতা প্রকাশ করিয়া বলিতেন, “প্রচণ্ড মহাশয় যে উপকার করিয়াছেন, তাহা কখন ভুলিবার নহে । তার ঋণ শোধ হয় না।” আমি একদিন তাহকে বলিতেছিলাম যে, বিশ্বস্তস্থত্রে শুনিয়াছি, বঙ্কিমবাবু বড় মাতৃভক্ত, মার ইচ্ছামত সৎকার্য্যে অনেক টাকা তিনি দিয়াছেন। মহারাণী—“আজও কি তার মা জীবিত ?”. উত্তর—“না।” এই কথায় বাল্যশিক্ষা ও সন্তানচরিত্রে পিতামাতার প্রভাবের কথা উঠিল। আমি স্বধাইলাম, “আপনি আপনার পিতৃদেব এবং শিরোমণিমহাশয়ের কাছে কি ধৰ্ম্মোপদেশ লাভ করিয়াছেন ? উত্তর—“অবশু পিতৃদেবের কাছে বেশী, তবে শিরোমণিমহাশয়ের কাছেও কতক-কতক বটে।” আবার জিজ্ঞাসা করিলাম, “ষ্ঠাহীরা কি কাছে বসিয়া ধৰ্ম্মোপদেশ দিতেন? রামতনুবাবু নিজের পুত্র কল্প এবং আত্মীয়বন্ধুদের ঐক্ষপে শিক্ষা দেন। মহারাণী বলিলেন,—“তোমার কাছে র্তাহার কথা'ইতিপূৰ্ব্বে গুনিয়াছি বটে। না, সেরূপ নয়। পিত্রালয়ে সৰ্ব্বদা পূজা হয়,—সে সব দেখিয়াও শিখিতাম। : , , সাহেবগ্নজষ্টেশনে জলবায়ুপরিবর্তনের জন্ত যখন দ্বিতীয়বার আমি যাই, তখন শীত্তেঞ্জ প্রারম্ভে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয় সেখানে আগমন করিয়া গঙ্গাবক্ষে বোটে কয়দিন বাস করিয়াছিলেন । আমি প্রায় প্রত্যহ তাহাকে প্রণাম করিতে যাইতাম এবং তাহার প্রাতভ্রমণের সহচর ছিলাম । কথায়-কথায় একদিন ব্রহ্মচারিণী মহারাণী শরৎমুন্দরীর প্রসঙ্গ উপস্থিত হইল। মহর্ষি ংবাদপত্রে ত{হার দানশীলতার পরিচয় মধ্যে মধ্যে পাইতেন কিন্তু এই রাজতপস্বিনীর আদর্শজীবনের কথা তাহার শ্রুতিগোচর ছিল না । আমার মুখে শুনিয়া স্মিতমুখে বলিলেন, “শরৎকুমারী নামে আমার এক কন্যা ছিলেন!” পুটিয়ায় ফিরিয়া গিয়া আমি মাতার নিকট সে গল্প করিলাম। তিনি সেই ঋষিকল্প সত্যব্রত মহাত্মার বিষয় অনেক শুনিয়াছিলেন, বিশেষত পিতৃঋণশোধের অবসরে ইদানীন্তনকালে যে ধৰ্ম্মবুদ্ধি এবং ত্যাগস্বীকারের দৃষ্টান্ত মহর্ষি দেখাইয়াছিলেন, শতমুখে তাহার সাধুবাদ করিতেন । আমার সাক্ষাতের কথা সবিস্তারে জিজ্ঞাসা করিলেন এবং আপনাকে তদীয় কন্যাস্থানীয় জানিয়া উৎফুল্ল হইলেন । সকলপ্রকার সদৃষ্টান্ত ও সৎকথায় তিনি বাক্যে এবং কার্য্যে যেরূপ অনুরাগ প্রকাশ করিতেন, তাহার চরিত্রের মহত্ব এবং মাধুর্য্য তাহাতেই সচরাচর ফুটিয়া উঠিত। আমার কৈশোরের বন্ধু শ্ৰীমন্‌ কিশোরীমোহন চৌধুরী এখন রাজশাহীতে একজন পূণর্মীয় জমিদার এবং ব্যবহারাজীব। দত্তকগৃহীত মাতার প্রতি র্তাহার ঠিকৃ গর্ভধারিণী জননীর. স্তায় ভক্তি ও ব্যবহারের কথা আশ্রিত ব্রাহ্মণ